চাকরিহারাদের জন্য বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন মমতার, সবটা জানালেন কুণাল
চাকরিহারাদের জন্য আপনিই সুুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী হিসাবে লড়ুন’, সওয়াল তুললেন শুভেন্দু
পেট্রোল-ডিজেলের উপর বাড়ল করের বোঝা! এবার কি তবে দাম বাড়বে তেলের?
কলার চেপে ধরে TV9 বাংলার প্রতিনিধিকে হিঁচড়ে নিয়ে গেল পুলিশ! কারণ অবাক করার মতন
২৬,০০০ চাকরি বাতিলের রায়ের ‘পরিবর্তন’ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে ২৬ হাজার নিয়োগ সম্পূর্ণ বাতিল হয়ে গেল। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরই কান্নায় ভেঙে পড়লেন যোগ্য বলে দাবি করা মামলাকারীরা।
কাদের বেতন ফেরত দিতে হবে, কারা অংশ নেবেন 'ফ্রেশ সিলেকশনে', জেনে নিন সুপ্রিম রায়
চাকরি বাতিল মামলায় সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ
২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগের পুরো প্যানেল বাতিল করল সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, কারচুপি করা হয়েছে। কোনওভাবেই যোগ্য অযোগ্য বাছাই করা সম্ভব হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে হাইকোর্টের নির্দেশে হস্তক্ষেপের কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই।
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ
১. ২৬ হাজার নিয়োগ সম্পূর্ণ রূপে বাতিল করল সু্পিম কোর্ট।
২. সম্পূর্ণ নতুন একটি সিলেকশন প্রসেস হবে, তা তিন মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ করতে হবে।
৩. এই তিন মাসের মধ্যে যাঁরা বৈধ, তাঁরা যে বিভাগে কাজ করতেন, সেখানে তাঁরা চাকরি চালিয়ে যাবেন। তাঁরা তিন মাস ধরে বেতনও পাবেন। কিন্তু কারা যোগ্য কিংবা অযোগ্য? উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের তরফে অযোগ্যদের তিনটে ক্যাটাগরি করে দেওয়া হয়েছে। কারা কারা ব্ল্যাঙ্ক OMR শিট জমা দিয়েছিলেন, তাঁদের নামের তালিকা ইতিমধ্যেই তৈরি করা রয়েছে। এছাড়াও আরও অনেকেই অযোগ্য থাকতে পারেন, তাঁদের বাছাই সম্পূর্ণরূপে এখনও করা সম্ভব হয়নি। এই নির্দেশ একেবারেই অপারেটিভ পার্ট। বিস্তারিত নির্দেশনামা সামনে না এলে আদৌ এই ‘ফ্রেশ সিলেকশন’-এ কারা অংশগ্রহণ করতে পারবেন, কোন রূপরেখার ভিত্তিতে তা নির্ধারিত হবে, তা স্পষ্ট নয়।
চাকরি থাকল কেবল একজনেরই
কেবলমাত্র একজন সুনির্দিষ্ট ক্যান্ডিডেট সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে। সোমা দাস নামে ক্যান্সার আক্রান্ত এক প্রার্থী, তাঁর চাকরি বহাল থাকছে। চাকরি বহালের নির্দেশ কেবলমাত্র তাঁর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
‘কাদের বেতন ফিরত দিতে হবে’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর ২৬ হাজার চাকরি সম্পূর্ণ বাতিল হয়ে গেল। হাইকোর্টের রায়ের পর সকলের ধারণা ছিল, সুুপ্রিম কোর্ট হয়তো মানবিকতার কারণে বেতন ফেরতের অর্ডারটা পুর্নবিবেচনা করতে পারে। কিন্তু সেই অর্ডারটাও সুপ্রিম কোর্ট বহাল রেখেছে। বেতনের টাকা ফেরত দিতে হবে।” কিন্তু কাদেরকে? সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, যাঁরা চিহ্নিত অযোগ্য, তাঁদের বেতনের টাকা ফেরত দিতে হবে। আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের তরফে তিনটে ক্যাটাগরি করে দেওয়া হয়েছে। কারা কারা ব্ল্যাঙ্ক OMR শিট জমা দিয়েছিল, তাঁদের নামের তালিকা ইতিমধ্যেই তৈরি করা রয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টে সেই তালিকা জমা পড়ে। তাঁদেরকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে। এতদিন তাঁরা যে বেতন পেয়ে এসেছেন, অর্থাৎ ২০১৬ সাল থেকে, তার ১২ শতাংশ সুদের হারে টাকা ফেরত দিতে হবে। ফ্রেশ সিলেকশন প্রসেসে তাঁরা বসতে পারবেন না।
যোগ্য-অযোগ্য এখনও স্পষ্ট নয়
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, এত বড় প্যারামিটারের যে বেনিয়ম হয়েছে, সেটা ‘বিয়ন্ড রিপায়ার’ অর্থাৎ কোনওভাবেই বাছাই সম্ভব নয়। তাই সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করা হয়েছে। একজন ‘ডিজ়এবেল গ্রাউন্ডে’ যে পিটিশন দিয়েছিলেন, তাঁর ক্ষেত্রে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে, সেটাও বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। তাঁর চাকরি বহাল থাকবে।
‘ফ্রেশ সিলেকশন প্রসেসে’ কারা কারা বসতে পারবেন?
২০১৬ সালে যাঁরা যাঁরা আবেদন করেছিলেন, শুধুমাত্র চিহ্নিত অযোগ্যরা বাদে, প্রত্যেকে ফ্রেশ সিলেকশন প্রসেসে অংশ নিতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াটাই যেহেতু প্রভাবিত, তাই যোগ্য অযোগ্য পৃথকীকরণ শেষ পর্যন্ত করা সম্ভব হয়নি।
কিন্তু নতুন যে ফ্রেশ সিলেকশন হবে, সেটা কতদিনের মধ্যে?
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বলেছেন, “রাজ্য সরকার চাইলে যে কোনও মুহূর্তে নিয়োগের জন্য নোটিফিকেশন বার করতে পারে। তাতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই। ” আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের আবেদন মেনে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছে, সিলেকশন প্রসেস তিন মাসের মধ্যে করা হোক।
ফ্রেশ সিলেকশনে বসার ঊর্ধ্বসীমা পেরিয়ে গেলে কী হবে?
যাঁদের পরীক্ষায় বসার ঊর্ধ্বসীমা এতদিনে পেরিয়ে গিয়েছে, তাঁদেরকে যাতে কিছুটা বয়সে ছাড় দেওয়া হয়, তার আবেদন এদিন আইনজীবীর তরফে জানানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। তাঁদেরকে যাতে আবারও সুযোগ দেওয়া হয়, তার আবেদন জানানো হয়। সেটি গৃহীত হয়েছে কিনা, অর্ডার কপি সামনে এলে এই বিষয়টি স্পষ্ট জানা যাবে।
মামলার প্রেক্ষাপট
২০১৬ সালের এসএসসি-র শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। কলকাতা হাই কোর্ট এই সংক্রান্ত শুনানির পর ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়াই বাতিল করে দিয়েছিল। এর ফলে ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি যায়। এসএসসির ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের এই মামলায় একাধিক জটিলতা ছিল। যার মধ্যে অন্যতম হল যোগ্য এবং অযোগ্যদের বাছাইয়ের সমস্যা।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours