তবে এদিন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও কথা বলতে দেখা যায় বিচারপতিকে। তিনি বলেন, “ এর আগে বাঁকুড়ায় অনুমতি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেটা অন্য ইস্যু ছিল। কিন্ত, কেন্দ্রীয় বাহিনীর অনুমতি দেব না। পুলিশের অবশ্যই ক্ষমতা আছে। কিন্তু সেই ক্ষমতা থাকা আর প্রয়োগের উপর আকাশ পাতাল পার্থক্য।”

 কোন অস্ত্র নিয়ে রাম নবনীতে মিছিল করা যাবে না জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট
কলকাতা হাইকোর্ট

জল্পনা চলছিল। শেষ পর্যন্ত হাওড়ায় রামনবমীর মিছিলে সায় কলকাতা হাইকোর্টের। তবে শর্তসাপেক্ষে অনুমোদন মিলেছে। হাইকোর্ট বলছে, ধাতুর তৈরি কোনও হাতিয়ার নিয়ে মিছিল করা যাবে না। কিন্তু, PVC দিয়ে তৈরি যে কোনও ধর্মীয় প্রতীক নিয়ে মিছিল করা যাবে। ক’টা থেকে মিছিল হবে, সেখানে কতজন থাকতে পারবেন তাও বলে দিয়েছে আদালত। আদালত বলছে, দুই সংগঠনের ৫০০ জন করে মোট ১০০০ লোক নিয়ে মিছিল করা যাবে।


সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১ টা পর্যন্ত মিছিল করবে অঞ্জনী পুত্র সেনা। বিকাল ৩ টা থেকে ৬ টা পর্যন্ত মিছিল করবে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তবে যাঁরা মিছিলে অংশ নেবেন তাঁদের সকলের কাছে পরিচয়পত্র থাকতে হবে। 

তবে আদালত সাফ বলছে, কোনও সংগঠনই ৫০০ জনের বেশি লোক আনতে পারবে না। অঞ্জনী পুত্রদের মিছিল হবে সকালে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিল বিকেলে। এদিন মিছিল নয়ে সওয়াল জবারের মধ্যে নিজের পর্যবেক্ষণও জানান বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। অনুমতি দিলেও তাঁর স্পষ্ট কথা, “আমি থামালে সবাইকে থামাব। শুধু রাজনৈতিক দল নয়। আমি সিবিআই দিলে আগে পুলিশের তদন্ত দেখি। তাই সবাইকে থামাব।” 


তবে এদিন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও কথা বলতে দেখা যায় বিচারপতিকে। তিনি বলেন, “ এর আগে বাঁকুড়ায় অনুমতি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেটা অন্য ইস্যু ছিল। কিন্ত, কেন্দ্রীয় বাহিনীর অনুমতি দেব না। পুলিশের অবশ্যই ক্ষমতা আছে। কিন্তু সেই ক্ষমতা থাকা আর প্রয়োগের উপর আকাশ পাতাল পার্থক্য।” তবে ২০২২ সালের পর অশান্তি অনেকটাই কমেছে বলে মনে করছেন তিনি। বলছেন, “২০২২ এর পর আরও ভায়োলেশন কমেছে। আশা করা হচ্ছে হিংসা আরও কমবে।” রাম নবমীর মিছিলের অনুমতি দেওয়া প্রসঙ্গে টানেন দুর্গাপুজোর প্রসঙ্গও। কেন অনুমতি দেওয়া হচ্ছে তার সপক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, “দুর্গাপুজোয় কোথাও গন্ডগোল হলে কি দুর্গাপুজোই বন্ধ করে দেব?” একইসঙ্গে রাজ্যেও মনে করান দায়িত্ব। খানিক পরামর্শ দিয়েই বলেন, “কোনও এলাকা নিয়ে পুলিশ যদি আশঙ্কা প্রকাশ করে তাহলে সেটা রাজ্যের পক্ষে ভাল দেখায় না।” 

‘আমরা স্যান্ডউইচ হয়ে যাচ্ছি’ 

এদিকে যে রুটে মিছিল করতে চেয়ছিল গেরুয়া শিবির সেই রুট বদলে দেওয়া হয় রাজ্যের তরফে। কিন্তু, আগের রুটেই মিছিল করতে চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল অঞ্জনী পুত্র সেনা ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। অন্যদিকে এলাকায় মিটিং মিছিল নিয়ে টানাপোড়েন নিয়ে হাওড়ার ওই এলাকার বাসিন্দারাও হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁদের হয়ে লড়ছেন আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। হাওড়ার বাসিন্দাদের দাবি, এত টানাপোড়েনের মধ্যে আদতে তাঁদের অবস্থা স্যান্ডউইচের মতো হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই দ্রুত সমাধান হোক। এদিন সমস্ত সওয়াল জবাব শোনা পর ওই এলাকায় প্রায় প্রতিদিন ঝামেলা-গন্ডগোল হয় কিনা জানতে চান বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। পাল্টা আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় রাজ্যের কোর্টে বল ঠেলেন। বলেন, “রাজ্য চাইলে সব কিছু কমতে পারে..কোন রাজনৈতিক দলের নেতাদের এই প্রসেশনে অংশ নিতে দেবেন না।” এরপরই রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত রুট না বদলালেও একদলকে সকালে অন্যদলকে বিকালে মিছিলের অনুমতি দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন। শেষ পর্যন্ত তাতেই মান্যতা দেয় কোর্ট। 
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours