ওই ব্যক্তির মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী চিকিৎসার খরচের জন্য ক্লেইম দাবি করেন। কিন্তু বিমা সংস্থা এলআইসি জানায় যে বিমা করার সময় ওই ব্যক্তি মদ্যপানের অভ্যাসের কথা লুকিয়েছিলেন।


সুরাপ্রেমীদের জন্য দুঃখের খবর শোনাল সুপ্রিম কোর্ট


বিমা করার সময় ব্যক্তিগত যাবতীয় তথ্য জানাতে হয়। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত অভ্যাস, সবই জানাতে হয়। তবে কোনও তথ্য লুকোলে তার পরিণাম মারাত্মক হতে পারে। খারিজ হয়ে যেতে পারে আপনার ক্লেইম-ই। বছরের পর বছর ধরে জমানো টাকা সম্পূর্ণ জলে যেতে পারে।


সম্প্রতিই সুপ্রিম কোর্টের একটি মামলার রায়ে বিমা করানোর সময় সব তথ্য সত্য জানানোর গুরুত্ব কতটা, তা-ই তুলে ধরেছে। এক ব্যক্তি তার জীবনবিমার নথিতে উল্লেখ করেননি যে তিনি নিয়মিত মদ্যপান করতেন। তাঁর মৃত্যুর পর স্ত্রী যখন বিমার অর্থ ক্লেম করেন, তখন বিমা সংস্থা তার ক্লেম খারিজ করে দেয়।

জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালে এক ব্যক্তি এলআইসি-র জীবন আরোগ্য পলিসি কিনেছিলেন। ফর্ম পূরণ করার সময় তিনি উল্লেখই করেননি যে মদ্যপানের অভ্যাস রয়েছে। বিমা কেনার এক বছরও পূরণ হয়নি, তার মধ্যেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রচন্ড পেটে যন্ত্রণার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাঁকে। এক মাস চিকিৎসা চলার পর তিনি হৃৎরোগে আক্রান্ত হন এবং মারা যান।


ওই ব্যক্তির মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী চিকিৎসার খরচের জন্য ক্লেইম দাবি করেন। কিন্তু বিমা সংস্থা এলআইসি জানায় যে বিমা করার সময় ওই ব্যক্তি মদ্যপানের অভ্যাসের কথা লুকিয়েছিলেন। পলিসিতে “নিজে থেকে সৃষ্ট রোগ” এবং “অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে শারীরিক জটিলতা”র ক্ষেত্রে কোনও কভারেজ দেওয়া হয় না।

যেহেতু ওই ব্য়ক্তি এলআইসি-র ফর্মে উল্লেখ করেননি যে তিনি মদ্যপান করতেন, তাই তাঁর বিমা খারিজ করে দেওয়া হবে। ওই মহিলা বিমার ক্লেমের দাবিতে জেলা কনজিউমার ফোরামে যান। সেখানে বিধবা স্ত্রীর পক্ষেই রায় দেওয়া হয়। এলআইসি-কে ৫.২১ লক্ষ টাকা দিতে বলা হয়। রাজ্য ও জাতীয় কনজিউমার কমিশনও একই রায় বহাল রাখে। কিন্তু এলআইসি তাদের শর্তে অবিচল ছিল। তারা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়।

শীর্ষ আদালত ওই বিধবা মহিলার বদলে, এলআইসি-র পক্ষেই দাঁড়ায়। বিচারপতি বিক্রম নাথ ও বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চের তরফে বলা হয়, “এটা সাধারণ বিমা পলিসি ছিল না। স্পেশালাইজড স্বাস্থ্যবিমা ছিল, যাতে নির্দিষ্ট কিছু শর্ত দেওয়া ছিল। ওই ব্যক্তি দীর্ঘ সময় ধরে মদ্যপান করতেন। এটা এক রাতে হতে পারে না। একদিন মদ্যপানে রাতারাতি লিভারের সমস্যা তৈরি হতে পারে না। উনি বিমা কেনার সময় মদ্যপানের তথ্য লুকিয়েছিলেন। এটাই বিমার ক্লেইম খারিজ করার জন্য যথেষ্ট।”

এলআইসি-র দাবি মানলেও, ওই বিধবা মহিলার আর্থিক পরিস্থিতি দেখে শীর্ষ আদালত ৩ লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয়নি, যা তিনি আগেই এলআইসি-র কাছ থেকে পেয়েছিলেন।


Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours