স্বাস্থ্যভবনের কর্তারা দাবি করছেন, মুচলেকার লাইন ছিল, "আমরা জেনেছি নিম্ন মানের স্যালাইন ও ওষুধ, তার জন্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে, ডাক্তারবাবুরা আমাদের সেকথা জানিয়েছেন, কিন্তু তারপরও আমরা সম্মতি দিলাম।" অভিযোগ, এই বয়ানে নাকি রোগীর পরিজনদের দিয়ে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছিল।


স্যালাইন দেওয়ার পর রোগীর অবনতি হতে পারে', বিপদ বুঝে মুচলেকা লেখানো হয়েছিল? বিস্ফোরক তথ্য
স্যালাইন বিভ্রাটে মুচলেকা তত্ত্ব!



কলকাতা: মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ওটির পর প্রসূতির শারীরিক অবস্থার অবনতি হতেই লেখানো হয় মুচলেকা। উঠছে বিস্ফোরক অভিযোগ। ক্রটিপূর্ণ স্যালাইন ও ওষুধে মৃত্যুর আশঙ্কা ছিল চিকিৎসকদেরই? আর সেই বিপদ বুঝেই কি রোগীর পরিজনদের দিয়ে লেখানো হয় মুচলেকা? মুচলেকা লেখানোর বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন খোদ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকও।


স্বাস্থ্যভবনের কর্তারা দাবি করছেন, মুচলেকার লাইন ছিল, “আমরা জেনেছি নিম্ন মানের স্যালাইন ও ওষুধ, তার জন্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে, ডাক্তারবাবুরা আমাদের সেকথা জানিয়েছেন, কিন্তু তারপরও আমরা সম্মতি দিলাম।” অভিযোগ, এই বয়ানে নাকি রোগীর পরিজনদের দিয়ে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

পশ্চিম মেদিনীপুরের CMOH সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গী বলেন, “এই বিষয়টা তদন্তাধীন রয়েছে। রাজ্য স্তরের একটা ১৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি তদন্ত করে দেখছে। আমার কাছেও খবর এসেছে, এরকম নাকি একটা মুচলেকা লেখানো হয়েছে, এই ব্যাচ নম্বরের এই স্যালাইন ব্যবহার করলে ক্ষতি হতে পারে। এটা জেনেও আমি সম্মত হলাম। এটা তো আমি কখনও আমার চিকিৎসার জীবনে দেখিনি। ব্যাপারটা খুবই গর্হিত হয়েছে। এটা ঠিক হয়নি।” সিএমওএইচ প্রশ্ন তোলেন, “কীভাবে জানা গেল, এই ব্যাচ নম্বরের ওই স্যালাইন ব্যবহার করলে ক্ষতি হতে পারে, আর যদি জানাই গেল, তাহলে দেওয়া হল কেন?”

সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ বলেন, “মুচলেকা কেন লেখানো হয়েছিল, কী লেখানো হয়েছিল, সেটাও তদন্তসাপেক্ষ। যদি কেউ করেছে বলে খুঁজে পাওয়া যায়, আর এটা করার জন্য রেসপন্সিবল হয়ে থাকে, তাহলে সঠিক পদক্ষেপ করা হবে।”

১৩ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যদের কানেও গিয়েছে এই কথা। তাঁরাও তদন্ত করে দেখেছেন, মুচলেকায় যে ধরনের শব্দপ্রয়োগ ও যেভাবে বয়ান লেখানো হয়েছে, সেটা ‘স্ট্যান্ডার্ড প্র্যাকটিস’ নয়। বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য সৌমিত্র ঘোষ বলেন, “যে শব্দগুলো ওখানে লেখানো হয়েছে, ‘বিশেষ ধরনের ওষুধ’, ‘স্যালাইন দেওয়ার পর রোগীর অবনতি হতে পারে’- এই ধরনের শব্দ বয়ানে লেখানো হয় না। যারা অন ডিউটি ছিলেন, তাঁদের মধ্যে থেকেই কেউ লিখিয়েছিল।” আর ঠিক এখানেও উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন। যদিও পরিবারগুলির তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।


Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours