তদন্তেরকারীদের দাবি, প্রায় ২৪৫ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। মিউল অ‍্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হত। ৭০৪টি মিউল অ‍্যাকাউন্ট ব‍্যবহার করা হত বলে জানা যাচ্ছে। ১ থেকে ২ শতাংশ কমিশনের ভিত্তিতে একাউন্ট ভাড়া নেওয়া হতো। উঠে আসছে অভিষেক বনশল নামে এক চার্টার্ড অ‍্যাকাউন্ট‍্যান্টের নাম। তিনিই চক্রের মূল মাথা বলে খবর।


দুবাইয়ে বসে ফাঁকা করছিল দেশের কোটি কোটি টাকা, শেষে বিধাননগর পুুলিশের পাতা ফাঁদেই পড়ল ৩ ‘আন্তর্জাতিক ডাকাত’
বিধাননগর পুলিশের হাতে গ্রেফতার ৩

 ফের শহরে আন্তর্জাতিক সাইবার প্রতারণা চক্রের হদিশ। গ্রেফতার চক্রের তিন মাথা। পুলিশ সূত্রে খবর, দুবাইতে বসেই চলতো যাবতীয় কারবার। গত জুন মাসে বিধাননগর সাইবার থানায় এক চিকিৎসক ১.১৩ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ করেন। গত দু’মাস ধরে তদন্ত চলছিল। বিধাননগর পুলিশ বিহার থেকে প্রথমে দু’জনকে গ্রেফতার করে। গ্যাংয়ের ১৭ জনকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এর মধ্যে তিনজনই মূল মাথা বলে তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে পুলিশ। 

এরা ভারতীয় হলেও থাকতেন দুবাইতে। দুবাইতে বসেই অপারেট করা হত গোটা চক্র। পাশাপশি শ্রীলঙ্কাতেও এই চক্রের সদস্যরা ছড়িয়ে ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। এই চক্রের সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কর্মীরাও জড়িত আছেন বলে জানা যাচ্ছে। গ্রেফতার করা হয়েছে কলকাতার এক ব্যাঙ্ক কর্মীকেও।

তদন্তেরকারীদের দাবি, প্রায় ২৪৫ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। মিউল অ‍্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হত। ৭০৪টি মিউল অ‍্যাকাউন্ট ব‍্যবহার করা হত বলে জানা যাচ্ছে। ১ থেকে ২ শতাংশ কমিশনের ভিত্তিতে একাউন্ট ভাড়া নেওয়া হতো। উঠে আসছে অভিষেক বনশল নামে এক চার্টার্ড অ‍্যাকাউন্ট‍্যান্টের নাম। তিনিই চক্রের মূল মাথা বলে খবর। বাড়ি শিলিগুড়িতে। থাকতেন দুবাইতে। তাঁর ডান হাত বা বাম হাত হিসাবে কাজ করতেন গুজরাটের বাসিন্দা মায়াঙ্ক চৌধুরী, ফরিদাবাদের বাসিন্দা অমিত জিন্দল। অভিষেকের সঙ্গে মায়াঙ্কের নেপালের এক ক্যাসিনোতে পরিচয় হয় বলে জানা যাচ্ছে। তারপরই একইসঙ্গে ‘অপারেশন’। ফিশিং কোম্পানি তৈরি করে বিনিয়োগের ফাঁদ পাতে। অ‍্যাপ তৈরি করে ফাঁদ পাতা হয়। অ‍্যাপ গুলো ফেক অ‍্যাপ। অ্যাপ এর মাধ্যমে ইনভেস্টমেন্টের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারনা চালানো হয়। 

কীভাবে চলত যাবতীয় প্রতারণা? 

বিহার-সহ অন্যান্য রাজ্য থেকে লোক এনে কলকাতায় রাখা হত। আধার, প্যান নিয়ে তৈরি করা হয় অ‍্যাকাউন্ট। ওই নথি ব্যবহার করে মোবাইলের সিম কার্ড তোলা হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাল্কে সিম কিনে দুবাই পাঠিয়ে দেওয়া হত। এরপর ব‍্যাঙ্কে বাল্কে মিউল অ‍্যাকাউন্ট তৈরি করে চলতো যাবতীয় কাজ। পুরো কাজটাই চলতো দুবাই, শ্রীলঙ্কা থেকে। গেমিংয়ের মাধ‍্যমে টাকা তুলে গুজরাত দিল্লিতে পৌঁছে যেত। সেই টাকা বিট কয়েনে (ক্রিপটো কারেন্সি) বদলে যেত। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, ক্রিপটো কারেন্সিতে বদলে ফেলা হত কারণ তা আন্তর্জাতিক বাজারে খুব সহজে ব‍্যবহার করা সম্ভব। সব মিলিয়ে দেশজুড়ে প্রায় ২০০০ মিউল অ‍্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়েছে বলেই এখনও পর্যন্ত জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours