তিনি মনে করেন, কলকাতা পুলিশই সঠিক তদন্ত করছিল। কিছু লোকের রাজনীতির জন্য সিবিআই তদন্ত হয়েছে। এখন তিলোত্তমার মা-বাবার কোনও অধিকার নেই সিবিআই-কে দোষারোপ করার।
হাতজোড় করে বলছি আপনারাই দায়ী', তিলোত্তমার মা-বাবাকে কেন এমন বললেন কুণাল?
কুণাল ঘোষ, তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক
ক্ষুব্ধ চিকিৎসক মহল। ক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজের একাংশও। কারণ, জামিন পেয়ে গিয়েছেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার প্রাক্তন ওসি। সেই ঘটনার প্রতিবাদে সিজিও কমপ্লেক্স অভিযান করেন ডাক্তাররা। প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগদান করেন তিলোত্তমার মা বাবাও। এবার এই প্রতিবাদ নিয়েই মুখ খুললেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি মনে করেন, কলকাতা পুলিশই সঠিক তদন্ত করছিল। কিছু লোকের রাজনীতির জন্য সিবিআই তদন্ত হয়েছে। এখন তিলোত্তমার মা-বাবার কোনও অধিকার নেই সিবিআই-কে দোষারোপ করার।
কুণাল বলেন, “এই আন্দোলনের সঙ্গে বিচারের কোনও সম্পর্ক নেই। কুলতলি বা অন্য ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি চার্জশিট দিয়ে ধর্ষণ খুনে ফাঁসির সাজা হয়ে গিয়েছে। আরজি করের বেলায় হল না কেন? নির্যাতিতার বাবা মার প্রতি আমাদের পূর্ণ শ্রদ্ধা আছে। স্বার্থান্বেষী কিছু দলের পাল্লায় পড়ে যে যে পদক্ষেপ করেছেন হাতজোড় করে বলছি আপনারাই দায়ী।” এখানেই শেষ নয়, তিনি বলেন, “আপনারা যদি লোকের কথায় চলেন, দু’দিন অন্তর নিজেদের বয়ান বদল করেন, আপনারাই হাইকোর্টে গিয়ে সিবিআইকে নিমন্ত্রণ করে ডেকে এনেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন আমরা ফয়সালা না করতে পারলে সিবিআই-কে দিয়ে দেব। আপনারা শুনলেন না। আপানারা দায়ী। কাকে কান নিয়ে গেল, আর আপনি কাকের পিছনে ছুটবেন। আর দায় দেবেন রাজ্য সরকার, তৃণমূলের উপর এটা হতে পারে না।”
তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি বলেন, “আপনাদের উপর শ্রদ্ধা রেখেই বলছি সিবিআইকে দোষারোপ করার অধিকার আপনাদের নেই। আপনারা ডেকে এনেছেন ওদের। কলকাতা পুলিশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছিল অভিযুক্ত সিভিককে। এই সুযোগে ডাক্তারি দলগুলোকে রাজনীতির মঞ্চে কাজে লাগানো হয়েছে। সংগঠন দখলের জন্য হয়েছে। তিলোত্তমার মৃত্যুকে কাজে লাগিয়েছেন ডাক্তারদের সংগঠনের। আর সেই বিচিত্র বীর্য গোস্বামী কই, আমি সোমা বলছি কই? ভুয়ো খবর ছড়ানো হল। আপনারা বলছেন বিচারের দাবিতে মিছিল, বিচার তো চলছে শিয়ালদা কোর্টে। সুপ্রিম কোর্ট তো আর ট্রায়াল কোর্ট নয়। সিবিআই নতুন করে কিছু খুঁজে পায়নি।”
এরপর ক্ষুব্ধ কুণাল প্রশ্ন তোলেন কীসের জন্য জুনিয়র ডাক্তাররা রাস্তায় নামছেন? কেন পথচারীদের অসুবিধা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “এই জুনিয়র ডাক্তারদের ফ্রন্টকে জবাব দিতে হবে, যে পাঁচজন ময়নাতদন্তে সই করে মান্যতা দিয়ে এসেছেন সেই পাঁচজন সামনে আসুন, প্রেস কনফারেন্স করুন। আজ আপনারা লাফাচ্ছেন কেন? সিবিআই তো আপনারা ডেকেছিলেন। কে কী বলবে, কোথায় নাটক, সিনেমা করবে, বিজ্ঞাপনে রড ধরে দাঁড়িয়ে থাকবে তাদের কথায় কোর্ট চলবে? রাস্তায় নেমে রাস্তাটাকে ডিস্টার্ব করবেন কেন? কটা শুকনো নকশাল আর শূন্য সিপিএম মিলে? আপনাদের বৃন্দা গ্রভার সরে গেলেন কেন? বিকাশ বাবুকে সরিয়ে দিলেন কেন? উনিই তো সিবিআই আদায় করে এনেছেন। প্রধান বিচারপতরা বলছেন তদন্ত প্রক্রিয়ায় বিচার প্রক্রিয়ায় ভুল নেই, সেটাও মানবেন না? ভেবেছেন কী?”
এরপর তিনি বলেন, “আপনারা যখন এই কাজগুলো করছেন, তখন সরকারি হাসপাতালের রোগী বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছেন, স্বাস্থ্য সাথীর টাকা তুলেছেন, তখন তাঁরা কোথায় ছিল? এদের ছবি দিয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া উচিত। রাজ্য সরকারের বিরোধী প্রচার করতে নেমেছেন ব্যক্তি স্বার্থে। নাটক চলছে। সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেওয়া যায়। কিন্তু এখন যে দ্রুত হারে সঞ্জয় রাইয়ের বিচার চলছে সেটা বিঘ্নিত হতে পারে। এরপরেও তো সাপ্লিমেন্টারি চার্জ শিট দেওয়া যায়। আপনাদের যাদের মনে হবে তাদের ধরে না আনা পর্যন্ত আপনারা মানবেন না? এটা তো আদালত অবমাননার দিকে যাচ্ছে। কিছু সংবাদ মাধ্যম একতরফা দেখাচ্ছে। বলছেন, মিছিল কমে গেলে বিচার হবে না? এটা ভাষা? মানে হয় বিচারে অনাস্থা, নয় তো বিচারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা।”
Post A Comment:
0 comments so far,add yours