জামিন নিয়ে দুই বিচারপতির ভিন্ন মত। জামিন দেওয়ার পক্ষে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সুবীরেশ ভট্টাচার্য, অশোক সাহা, এসপি সিনহা, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়দের জামিন দিতে চাইলেন না বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়।

একজন রাজি, অপরজন নন, ভরা এজলাসে দুই বিচারপতির মতপার্থক্য! মহা ফ্যাসাদে পড়লেন পার্থ-সুবীরেশরা
কলকাতা হাইকোর্টে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মামলা

 এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃতদের জামিন মামলায় দুই বিচারপতির ভিন্ন মত। বুধবার শিক্ষা দুর্নীতিতে ধৃত ৯ জন অর্থাৎ পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, এসপি সিনহা-সহ চার ‘দালাল’-এর জামিন মামলার রায়দান ছিল বিচারপতি অরিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ও বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। কিন্তু এদিন সেই রায় ঝুলেই রইল। কারণ জামিন নিয়ে দুই বিচারপতির ভিন্ন মত। জামিন দেওয়ার পক্ষে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সুবীরেশ ভট্টাচার্য, অশোক সাহা, এসপি সিনহা, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়দের জামিন দিতে চাইলেন না বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়।


শিক্ষা দুর্নীতিতে সিবিআই-এর করা মামলায় ৯ জনের জামিন মামলার শুনানি দীর্ঘদিন ধরেই হয়। এদিন রায়দানের সময় দেখা গেল, বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জামিন পক্ষে মত দিলেন, বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায় প্রথম পাঁচ জন অর্থাৎ পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ এসএসসি-র যাঁরা পদাধিকারী ছিলেন অর্থাৎ সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, এসপি সিনহা, অশোক সাহাদের জামিন দিতে চাইলেন না। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে যে ‘প্রভাবশালী তকমা’ উঠেছিল, সেই প্রভাবশালী তকমাতেই শিলমোহর দিয়েছেন বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়। তিনি স্পষ্টই জানান, এঁরা জামিন পেলে, গোটা মামলা প্রভাবিত হতে পারে। কিন্তু বাকি চার জন অর্থাৎ সুব্রত সামন্ত, কৌশিক ঘোষ, আলি ইমাম, চন্দন মণ্ডলকে জামিন দিয়েছেন তিনি। সিবিআই তাদের চার্জশিটে এই চার জনকে মূলত দালাল হিসাবে চিহ্নিত করেছে। এই চার জনের জামিনের বিরোধিতা করেননি বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়। এই মামলায় জট এখন অব্যাহত।

সিবিআই প্রথম থেকেই বক্তব্য ছিল, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্যের মতো সরকারি আধিকারিকদের ক্ষেত্রে কোনও অবস্থান নিতে হয়, তাহলে রাজ্য সরকারের ‘কনসেন্টের’ দরকার হয়। কিন্তু সেটা কোনও ভাবেই সিবিআই-কে দেওয়া হচ্ছে না। এি নিয়ে এর আগে বারবার মুখ্যসচিবের কাছে রিপোর্ট তলব করেছিলেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। কিন্তু জবাব মেলেনি। পরবর্তীকালে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে মামলাটি যায়, তাহলে তিনি প্রশ্ন করেছিলেন, ‘কনসেন্ট’ বাদ দিয়ে জামিন দেওয়া যায় কিনা, সেটা দেখতে হবে। এদিন রায়দানের সময়ে তিনি তাঁদের জামিন দেন, কিন্তু ভিন্ন মত পোষণা করেন অপর বিচারপতি।

কিন্তু তাহলে এই জামিন মামলার ভবিষ্যৎ কী?

আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “যেহেতু দুই বিচারপতির ভিন্ন মত। সেক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতি এটা পাঠিয়ে দেবেন তৃতীয় বিচারপতির কাছে। তিনি খতিয়ে দেখবেন। তার মতামতটাই গৃহীত হবে।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours