খুলির পাশে রাখা খাবার, শিবের ছবি! ৩ মাস ধরে মায়ের দেহ আগলে, নেপথ্যের কারণ জানলে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাবে
প্রতীকী চিত্র
রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া এবার গুয়াহাটিতে। তিন মাস ধরে মায়ের মৃতদেহ আগলে রইল ছেলে। ডাবের খোলায় খাবার দিত মায়ের কঙ্কালকে। রোজ পুজোও করত। দীর্ঘ সময় ধরে ওই মহিলাকে দেখতে না পেয়ে, প্রতিবেশীরা জিজ্ঞাসা করাতেই ছেলের নির্লীপ্ত উত্তর, ‘মা তো কবেই মরে গিয়েছে’!
অসমের গুয়াহাটিতে একটি বাড়ি থেকে এক মহিলার কঙ্কাল উদ্ধারকে ঘিরেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ওই মহিলার মৃত্য়ু তিন মাস আগেই হয়েছে। এতদিন তাঁর মৃতদেহের সঙ্গেই থাকছিল ছেলে। প্রতিবেশীরা জিজ্ঞাসা করাতেই আসল ঘটনা সামনে আসে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত মহিলার নাম পূর্ণিমা দেব। গুয়াহাটিতে বাড়ি। স্বামী রেলে চাকরি করতেন। স্বামীর মৃত্য়ুর পর তিনি একমাত্র ছেলে জয়দীপ দেব (৪০)-কে নিয়ে থাকতেন। পেনশনেই তাদের সংসার চলত। খুব একটা মেলামেশা করতেন না প্রতিবেশীদের সঙ্গে। তবে দীর্ঘ সময় ধরেই ওই বৃদ্ধাকে দেখা যাচ্ছিল না বলে সন্দেহ জাগে প্রতিবেশীদের মনে। এদিকে, বাড়ি থেকেও বিকট দুর্গন্ধ বের হতে থাকে।
রোজই ঘরের সামনে আবর্জনার স্তূপ জমতে দেখে এক প্রতিবেশী ওই বৃদ্ধার খোঁজখবর করেন তাঁর ছেলের কাছে। তখনই ওই ব্যক্তি জানান যে কয়েক মাস আগে তাঁর মা মারা গিয়েছেন। শেষকৃত্য় সম্পর্কে জানতে চাইলে আকাশ থেকে পড়েন ওই ব্যক্তি। বলেন যে ঘর পরিষ্কার করার লোক পাননি বলে কাউকে বলেননি। এরপরই প্রতিবেশীদের মনে সন্দেহ জাগে। তারা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে ঘর থেকে বৃদ্ধার কঙ্কাল উদ্ধার করেন।
প্রথামিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন। তাই মায়ের মৃত্যুর পরও তিন মাস ধরে দেহ আগলে রেখেছিল। প্রতিদিন বাইরে থেকে খাবার এনে মাকে দিত। মাথার খুলির পাশে খাবার, শিব ঠাকুরের ছবি ও প্রদীপ রাখা ছিল। পুলিশের অনুমান, ওই ব্যক্তি ভগবানে বিশ্বাসী। রোজ শিবের নাম জপতেন এই বিশ্বাসে যে কোনওভাবে তাঁর মা আবার জীবিত হয়ে উঠবে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours