রবিবার (৪ জুলাই) থেকে বাংলাদেশ জুড়ে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। এই আন্দোলন সফল করতে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে ছাত্র-জনতার প্রতি ১৫টি জরুরি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে -


ট্যাক্স না, বিল না, বেতন না, বন্ধ অফিস-কারখানা! সর্বাত্মক অসহযোগ
ফের বিক্ষোভের আগুনে পুড়ছে পুরো বাংলাদেশ


ঢাকা: কোটা বিরোধী আন্দোলনের সময় হাসিনা সরকারের ‘ঔদ্ধত্ব’ মানতে পারছে না আন্দোলনকারী থেকে সাধারণ মানুষ। তাই দানা বাঁধছে কোটা বিরোধী আন্দোলনের থেকেও এক বড় আন্দোলন। যে আন্দোলনের দাবি, সরাসরি হাসিনা সরকারের পদত্যাগ। যারা এতদিন আন্দোলনে ছিল না, এখন এসেছে, তারা বলছে, “সরকার যে ঔদ্ধত্য আচরণ দেখিয়েছে, তাতে কোনও বিবেকবান জনগণ বসে থাকতে পারে না। আমাদের দাবি এখন একটাই, হাসিনার পতন চাই।” আর তার জন্য রবিবার (৪ জুলাই) থেকে বাংলাদেশ জুড়ে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। এই আন্দোলন সফল করতে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে ছাত্র-জনতার প্রতি ১৫টি জরুরি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে –

১. কেউ কোনও ধরনের ট্যাক্স বা খাজনা দেবেন না।

২. বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, জলের বিল-সহ কোনও ধরনের বিল পরিশোধ করবেন না।

৩. সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত ও কল কারখানা বন্ধ থাকবে। আপনারা কেউ অফিসে যাবেন না, মাস শেষে বেতন তুলবেন।

৪. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

৫. প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে কোনও ধরনের রেমিট্যান্স দেশে পাঠাবেন না।

৬. সব ধরণের সরকারি সভা, সেমিনার, আয়োজন বর্জন করবেন।

৭. বন্দরের কর্মীরা কাজে যোগ দেবেন না। কোনও ধরনের পণ্য খালাস করবেন না।

৮. দেশের কোনও কলকারখানা চলবে না, গার্মেন্টসকর্মী ভাই বোনেরা কাজে যাবেন না।

৯. গণপরিবহন বন্ধ থাকবে, শ্রমিকরা কেউ কাজে যাবেন না।

১০. জরুরি ব্যক্তিগত লেনদেনের জন্য প্রতি সপ্তাহের রবিবার ব্যাংকগুলো খোলা থাকবে।

১১. পুলিশ সদস্যরা রুটিন ডিউটি ব্যতিত কোনো ধরনের প্রোটোকল ডিউটি, রায়ট ডিউটি ও প্রটেস্ট ডিউটিতে যাবেন না। শুধু মাত্র থানা পুলিশ নিয়মিত থানার রুটিন ওয়ার্ক করবে।

১২. দেশ থেকে যেন একটি টাকাও পাচার না হয়, সব অফশোর ট্রানজেকশন বন্ধ থাকবে।

১৩. বিজিবি ও নৌবাহিনী ব্যতিত অন্যান্য বাহিনী ক্যান্টনমেন্টের বাইরে ডিউটি পালন করবে না। বিজিবি ও নৌবাহিনী ব্যারাক ও কোস্টাল এলাকায় থাকবে।

১৪. আমলারা সচিবালয়ে যাবেন না, ডিসি বা উপজেলা কর্মকর্তারা নিজ নিজ কার্যালয়ে যাবেন না।

১৫. বিলাস দ্রব্যের দোকান, শো রুম, বিপণি-বিতান, হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকবে। তবে হাসপাতাল, ফার্মেসি, জরুরি পরিবহন সেবা যেমন-ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পরিবহন, অ্যাম্বুলেন্স সেবা, ফায়ার সার্ভিস, সংবাদমাধ্যম, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য পরিবহন, জরুরি ইন্টারনেট সেবা, জরুরি ত্রাণ সহায়তা এবং এই খাতে কর্তব্যরত কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিবহন সেবা চালু থাকবে। এছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানপাট বেলা ১১-১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

সারা দেশে কোটা আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চলাকালীন শিক্ষার্থীদের উপর সরকার সহিংস দমন-পীড়ন চালিয়েছে বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের। তারই প্রতিবাদে শনিবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। ঢাকায় বিশাল জমায়েত হয়। রবিবার (৪ আগস্ট) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়া দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

এদিকে, চাপের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার্তা দিয়েছেন, সংঘাত চাই না, কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বসতে চাই। এমন । তবে, তাঁর ডাকে এখনও পর্যন্ত সাড়া দেয়নি আন্দোলনকারীরা। সরকারের মন্ত্রীরাও কড়া হাতে আন্দোলন দমন ঠিক হয়নি বলে অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে আন্দোলনকারীদের এখন দাবি একটাই, সরকারের পদত্যাগ।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours