অঙ্গরাজ্যের বিধানসভার ক্ষেত্রে আইন প্রণয়ন করতে গেলে ক্ষমতা থাকে সীমিত। কিছু লক্ষ্মণরেখা মানতে হয় বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। কী সেই লক্ষ্মণরেখা?

কোন 'লক্ষ্মণরেখা' পার করলেই ধর্ষণ-বিরোধী বিল আনতে পারেন মমতা? জানালেন হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি
হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি


কলকাতা: ধর্ষণের মামলায় যাতে কঠোর শাস্তি হয়, তেমন আইন আনতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। বিল পাশ করাতে আগামী সপ্তাহেই বিধানসভায় অধিবেশন ডেকেছেন তিনি। সূত্রের খবর, আগামী ৩ সেপ্টেম্বর বিল পেশ করা হতে পারে। আরজি কর-কাণ্ডের আবহে বিভিন্ন মঞ্চ থেকে ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন মমতা। এবার বিল পাশ করে, তেমনই কোনও আইন আনতে চান বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, এভাবে কোনও রাজ্য কি আদৌ বিল পাশ করতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তর দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবাশিস কর গুপ্ত।


ধর্ষণ বা গণধর্ষণ নিয়ে কেন্দ্রীয় আইন আছে। সে ক্ষেত্রে কোনও রাজ্য নতুন বিল আনতে চাইলে বা আইন প্রণয়ন করতে চাইলে, রয়েছে কিছু নিয়ম। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ফৌজদারী আইন হল সংবিধানের সপ্তম তপশিলের যৌথ তালিকাভুক্ত।’ তিনি জানান, ধর্ষণ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের দুটি আইন আগেই ছিল। সম্প্রতি নতুন আইনও প্রণয়ন করেছে কেন্দ্র। তবে অঙ্গরাজ্যের বিধানসভার ক্ষেত্রে আইন প্রণয়ন করতে গেলে ক্ষমতা থাকে সীমিত। কিছু লক্ষ্মণরেখা মানতে হয় বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

কী সেই লক্ষ্মণরেখা? অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, “কেন্দ্রীয় আইনের কোনও ধারার বিরোধী কোনও আইন আইন প্রণয়ন করা যায় না। এছাড়া এই ধরনের বিল রাষ্ট্রপতির পূর্ব অনুমোদন সাপেক্ষ। অর্থাৎ রাষ্ট্রপতির কাছে আগে বিল পাঠাতে হবে রাজ্যকে। রাষ্ট্রপতি সব সীমারেখা বিচার করবেন। যদি তাঁর কোনও সংশয় থাকে, সে ক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী তিনি সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ চাইতে পারেন।”

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবাশিস কর গুপ্ত আরও জানান, রাষ্ট্রপতি পরামর্শ চাইতে গেলে সুপ্রিম কোর্টে পূর্ণাঙ্গ শুনানি হবে। সব শোনার পর সুপ্রিম কোর্ট পরামর্শ দিতে পারে রাষ্ট্রপতিকে। সব সংশয় শেষ হলে তবেই আইন প্রণয়ন হতে পারে। তিনি জানিয়েছেন, ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় ধর্ষণ ও গণধর্ষণের জন্য আইন আছে। সর্বোচ্চ শাস্তির বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্র এরকম একটি আইন আনতে চেয়েছিল। তবে সেটাও রাষ্ট্রপতির কাছেই আটকে গিয়েছে।

গত ২৮ অগস্ট যুব তৃণমূলের সভামঞ্চ থেকেই মমতা বলেছিলেন, আগামী সপ্তাহে স্পিকারকে বলে বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশন ডাকা হবে। ১০ দিনের মধ্যে ধর্ষকের ফাঁসি চেয়ে বিল পাশ করানো হবে। শুধু ঘোষণা নয়, সেই মতো প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর।



Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours