ওয়েনাড় বিপর্যয় নিয়ে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করেছেন অমিত শাহ? রাজ্যসভায় ভুল তথ্য দিয়েছেন? এমনই অভিযোগ কংগ্রেসের। এরপরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ দিয়েছেন কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ জয়রাম রমেশ।
রাজ্যসভায় মিথ্যা বলেছেন, অমিত শাহর বিরুদ্ধে নোটিশ কংগ্রেসের!
অমিত শাহর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ দিলেন জয়রাম রমেশ
ওয়েনাড় বিপর্যয় নিয়ে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করেছেন অমিত শাহ? অভিযোগ করলেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। শুধু অভিযোগ করাই নয়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশও দিয়েছেন কংগ্রেসের এই রাজ্যসভার সাংসদ। তাঁর অভিযোগ, ‘আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেমে’ এই বিপর্যয়ের বিষয়ে কেরলকে আগাম তথ্য জানানো হয়েছিল বলে রাজ্যসভায় যে তথ্য পেশ করেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তা ভুল। এই ভুল তথ্য দিয়ে তিনি সংসদকে এবং দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। প্রসঙ্গত, এদিনই এক সর্বভারতীয় সংবাদপত্রে অমিত শাহর ওই দাবির ‘ফ্যাক্ট চেক’ প্রকাশ করেছে। তাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি সম্পূর্ণ খন্ডন করা হয়েছে। এরপরই স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ পাঠালেন জয়রাম রমেশ। তাঁর মতে, অমিত শাহ ভুল তথ্য দেওয়ায় সংসদের গরিমা ক্ষুণ্ন হয়েছে। সেই কারণেই অমিত শাহর বিরুদ্ধে প্রিভিলেজ নোটিশ বা স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশে, জয়রাম রমেশ বলেছেন, ওয়ানাড়ে ধস নামার আগে কেরল সরকারকে আগাম সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল বলে অমিত শাহ যে দাবি করেছিলেন, তা সঠিক নয়। শাহ আরও দাবি করেছিলেন, কেরল সরকার সতর্কবার্তা পেয়েও ব্যবস্থা নেয়নি। সেই দাবিটিও ভুল বলে নোটিশে দাবি করেছেন জয়রাম রমেশের। জয়রাম রমেশ বলেছেন, “কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক জারি করা আগাম সতর্কতার বিষয়ে জোরালো বিবৃতি দিয়ে রাজ্যসভাকে স্পষ্টতই বিভ্রান্ত করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীয তাঁর ওই বিবৃতি মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে। সকলেই জানেন, কোনও মন্ত্রী বা সাংসদ, সংসদকে বিভ্রান্ত করলে তিনি স্বাধিকার লঙ্ঘন করেন এবং কক্ষের অবমাননা করেন।”
গত বুধবার (৩১ জুলাই) রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, ২৩ জুলাই, ধস নামার ৭দিন আগেই, কেরল সরকারকে ধস নামতে পারে বলে আগাম সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল। অমিত শাহ বলেন, “আমি স্পষ্ট করতে চাই, ২৩ জুলাই, ঘটনার সাত দিন আগে কেরল সরকারকে একটি আগাম সতর্কতা দিয়েছিল কেন্দ্র। তারপর ২৪ এবং ২৫ জুলাই আমরা তাদের আবার সতর্ক করেছিলাম। ২৬ জুলাই, ২০ সেন্টিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে এবং ধস নামতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছিল।” তিনি আরও দাবি করেন, আগাম ব্যবস্থা হিসেবে এনডিআরএফ-এর ৯টি দলকে কেরলে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, কেরল সরকার সময়মতো ব্যবস্থা নেয়নি।
অমিত শাহর এই অভিযোগ, ওই দিনই নস্যাৎ করেছিলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। বিজয়ন জানান, বর্ষার মরসুমের শুরুতেই এনডিআরএফ দল পাঠানোর অনুরোধ করেছিল কেরল। সেইঅনুরোধের ভিত্তিতেই কেন্দ্র তাদের পাঠিয়েছিল। সেই নয় এনডিআরএফ দলের একটিকে রাজ্য সরকারই ওয়েনাড় জেলায় মোতায়েন করেছিল। তিনি বলেছিলেন, বন্যা এবং ধস-সহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়ে রাজ্যের সব জায়গাতেই আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, প্রত্যাশার তুলনায় অনেক বেশি বৃষ্টি হওয়াতেই এই বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। তিনি জানান, কেন্দ্র সতর্ক করেছিল, ১১৫ থেকে ২০৪ মিলিমিটারের মতো বৃষ্টি হতে পারে। কার্যক্ষেত্রে প্রথম ২৪ ঘন্টায় ২০০ মিলিমিটার এবং পরের ২৪ ঘন্টায় ৩৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। তিনি আরও দাবি করেন, বন্যার বিষয়ে ২৩ থেকে ২৯ জুলাইয়ের মধ্যে কেন্দ্র কোনও সতর্কতা জারি করেনি। এদিন, ‘দ্য হিন্দু’ পত্রিকার ফ্যাক্ট চেকেও একই দাবি করা হয়েছে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours