দেবব্রতের স্ত্রী কাউন্সিলর মৌসুমি ভট্টাচার্য বলেন, "যে সমস্ত পুজো কমিটি নেই, সেক্রেটারি বা কারও ব্যক্তিগত অ্য়াকাউন্টে টাকা আসে। টিটাগড় থানা থেকে একটা অর্ডার এসেছে, চেয়ারম্যান আমাকে পাঠিয়েওছেন আজকে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত যে সমস্ত পুজো কমিটি নিজেদের অ্যাকাউন্টে টাকা নিত, ২০২৪ থেকে তা হবে না। পুজো কমিটির অ্যাকাউন্টেই টাকা নিতে হবে।"
দুর্গাপুজোর অনুদানের টাকা টিটাগড়ের তৃণমূল কাউন্সিলরের স্বামীর সংস্থার অ্যাকাউন্টে?
দেবব্রত ভট্টাচার্য ও মৌসুমি ভট্টাচার্য।
পুজোর সরকারি অনুদান নিয়ে এমনিই বিরোধীরা রে রে করে উঠেছে। এরইমধ্যে আবার নয়া বিতর্ক। মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া পুজোর অনুদানের টাকা পুজো কমিটির বদলে কমিটির জেনারেল সেক্রেটারির ব্যক্তিগত কোম্পানির অ্যাকাউন্টে ঢুকছে বলে অভিযোগ। বিরোধীদের হুঁশিয়ারি, এ নিয়ে হাইকোর্টে যাবে তারা।
টিটাগড়ের বিবেকনগর সর্বজনীন দুর্গাপুজো। এই পুজো কমিটির সম্পাদক দেবব্রত ভট্টাচার্য। তিনি টিটাগড় পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৌসুমি ভট্টাচার্যের স্বামী। অভিযোগ, ২০২২ সালের ৬০ হাজার এবং ২০২৩ সালের ৭০ হাজার টাকা কাউন্সিলরের ছেলের নামে খোলা কোম্পানি দেবমাল্য এন্টারপ্রাইজের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে।
যদিও কাউন্সিলর ও তাঁর স্বামীর দাবি, পুজো কমিটির অ্যাকাউন্ট না থাকার কারণে এই ঘটনা। তাঁদের মতে, এখানে বেআইনি কিছুই হয়নি। দেবব্রত ভট্টাচার্য বলেন, “কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট না থাকলে জেনারেল সেক্রেটারির ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ঢোকে। সেখান থেকে খরচ করা হয়। এটা সর্বজনীন। তাও বলেছিলাম, এটা তো চেক। বলেছিল চেক না নিলে ফিরে যাবে। যদি প্রোটোকল না থাকত আমাকে তো চেক দিতই না ট্রেজারি থেকে। জেনারেল সেক্রেটারির অ্যাকাউন্টে এসেছে, সেখান থেকে কারেন্ট অ্যাকাউন্টে ঢোকে। যারা এত বছর পুজো করে এসেছে তারা আমাদের অ্যাকাউন্টটা দেয়নি। ৪৫ হাজার পুজোর কি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকে নাকি? আর কে ৭০ হাজার টাকা মারবে বলুন তো? মারলে তো ৭ লাখ টাকা ১০ লাখ টাকা মারবে। এটা অন রেকর্ড বলছি। ম্যালাইন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ২ বছর পুজোর দায়িত্ব নিয়েছি। মানুষ দেখেছে কীভাবে পুজো হয়। তাই এসব বলছে।”
দেবব্রতের স্ত্রী কাউন্সিলর মৌসুমি ভট্টাচার্য বলেন, “যে সমস্ত পুজো কমিটি নেই, সেক্রেটারি বা কারও ব্যক্তিগত অ্য়াকাউন্টে টাকা আসে। টিটাগড় থানা থেকে একটা অর্ডার এসেছে, চেয়ারম্যান আমাকে পাঠিয়েওছেন আজকে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত যে সমস্ত পুজো কমিটি নিজেদের অ্যাকাউন্টে টাকা নিত, ২০২৪ থেকে তা হবে না। পুজো কমিটির অ্যাকাউন্টেই টাকা নিতে হবে। অনেকে বিষয়টার ভিতরে ঢুকছে না। ভাবছে সেক্রেটারির অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে সেক্রেটারি নিয়েছে। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে পুজোর অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছে।”
এ প্রসঙ্গে বিবেকনগরের পুজো কমিটির সঙ্গে এক সময় যুক্ত এবং টিটাগড় পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রশান্ত চৌধুরী জানান, “আমাদের প্রতিটা পুজো কমিটির সঙ্গে দীর্ঘদিন আমি জড়িত। প্রতিটি পুজো কমিটিরই ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট আছে। ২০২১ অবধি এই পুজোর সঙ্গেও ছিল। ২০২২ থেকে আমি খুব একটা জড়িত নই। যেহেতু অন্য জায়গায় কাউন্সিলর হয়েছি, সেখানে পুজো হয়। এটা কী করে হল আমার মাথায় আসছে না। একটা কোম্পানির অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে দেখলাম। কীভাবে এটা হল সেটাই বড় প্রশ্ন।” এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী জানান, তদন্তের দাবি করে সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি দেবেন। একইসঙ্গে কৌস্তভের বক্তব্য, সরকারি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলাও দায়ের করবেন।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours