দ্বিতীয় গেমে নতুন শুরু। ৭-০ লিড নেন লক্ষ্য সেন। আবারও ক্রস কোর্টে ভুল শটে ৩ পয়েন্ট ভিক্টরের ঝুলিতে। তবে ভিক্টর ঝুঁকলে তাঁর যে উঠে দাঁড়াতে সময় লাগে, সেটা লক্ষ্য করেছিলেন সেন। কিন্তু একতরফা দাপট বজায় রাখতে পারছিলেন না। সেটি কথাও নয়। অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন, অভিজ্ঞ ভিক্টর ঘুরে দাঁড়ান। প্যারিসে প্রচণ্ড গরমেও সমস্যায় পড়েন লক্ষ্য।
আশা জাগিয়েও সোনার ম্যাচে যাওয়া হল না লক্ষ্য সেনের, কাল লড়াই ব্রোঞ্জের
খুব কাছে, অনেক দূরে। বেশ কয়েকবার আশা জাগালেন, আবার হারিয়েও গেলেন। সোনার ম্যাচে ওঠা হল না ভারতের তরুণ শাটলার লক্ষ্য সেনের। অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন ভিক্টর অ্যাক্সেলসেনের সঙ্গে দুর্দান্ত লড়াইয়েও হার। ম্যাচে তিনটি টার্নিং পয়েন্ট বলা যেতে পারে। প্রথম গেমে তিনটি গেম পয়েন্ট ছিল লক্ষ্যর। সেখান থেকে গেম জেতেন ভিক্টর। বেশ কিছু পয়েন্ট ভুল জাজমেন্টে খোয়ান, দ্বিতীয় গেমে অতিরিক্ত চেষ্টায় প্রাথমিক ভুল করতে থাকেন। ভিক্টরের মতো অভিজ্ঞ শাটলার যে সেই সুযোগ কাজে লাগাবেন, এমনটাই প্রত্যাশিত। সেটাই হল। টানা দ্বিতীয় বার সোনা জয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে গেলেন ভিক্টর। ব্রোঞ্জ পদকের ম্যাচে লক্ষ্য খেলবেন মালয়েশিয়ার জি জিয়ার বিরুদ্ধে।
শুরু থেকে ব্যাকফুটে লক্ষ্য সেন। তবে মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় নিলেন। এরপর ভিক্টর অ্যাক্সেলসনের সঙ্গে সমানে সমানে লড়াই। কখনও ভিক্টর এগিয়ে, আবার কখনও লক্ষ্য সেন। আবার জাজমেন্টে ভুল করে পয়েন্টও খোয়ালেন ভারতের তরুণ শাটলার। প্রথম গেমের বিরতিতে, লক্ষ্য সেন ১১-৯ লিডে থাকেন। এতেই যেন ‘মেজাজ’ হারান ভিক্টর। প্রবল অস্বস্তিতে দেখায় তাঁকে। অলিম্পিকে সোনাজয়ী শাটলার বিরতির পর আরও মরিয়া লড়াইয়ের চেষ্টা করেন। যদিও ভুল জাজমেন্টে শুরুতেই পয়েন্ট হারান। রাগ যে ভয়ঙ্কর হতে পারে, বিনাশের কারণ হতে পারে, ভিক্টর হয়তো বুঝে উঠতে পারছিলেন না। লক্ষ্য ক্রমশ এগিয়ে যান।
লিড বাড়তে থাকে লক্ষ্যর। এনার্জি বাঁচিয়ে খেলার চেষ্টা করছিলেন। দীর্ঘ সময় পর লক্ষ্যর ভুলে পয়েন্ট পান। যদিও লক্ষ্য এগিয়ে থাকেন ১৫-১০ ব্যবধানে। লক্ষ্যর আরও একটা পয়েন্ট নষ্ট হতেই দ্রুত ঘুরে দাঁড়ান। ১৬-১১ করেন ভারতের তরুণ। ক্রস কোর্ট প্লে-তে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন ভিক্টর। ব্যবধান কমতে থাকে। লক্ষ্য-ভ্রষ্ট হন সেন। নেট পয়েন্টে ১৭-১৮ করেন ভিক্টর। চাপ বাড়তে থাকে লক্ষ্যর। তবে ভিক্টরের ভুলে দুর্দান্ত জাজমেন্টে ১৯-১৭ করেন লক্ষ্য়। আরও একটি পয়েন্ট নেন জোরালো স্ম্যাশে। গেম পয়েন্টে দাঁড়িয়ে লক্ষ্য সেন। সেখান থেকে দুটো পয়েন্ট নষ্ট লক্ষ্যর। তিনটি গেম পয়েন্ট থেকে পিছিয়ে পড়েন লক্ষ্য! সেখান থেকে হার! ২২-২০ ব্যবধানে প্রথম গেম নিজের নামে করেন ভিক্টর।
দ্বিতীয় গেমে নতুন শুরু। ৭-০ লিড নেন লক্ষ্য সেন। আবারও ক্রস কোর্টে ভুল শটে ৩ পয়েন্ট ভিক্টরের ঝুলিতে। তবে ভিক্টর ঝুঁকলে তাঁর যে উঠে দাঁড়াতে সময় লাগে, সেটা লক্ষ্য করেছিলেন সেন। কিন্তু একতরফা দাপট বজায় রাখতে পারছিলেন না। সেটি কথাও নয়। অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন, অভিজ্ঞ ভিক্টর ঘুরে দাঁড়ান। প্যারিসে প্রচণ্ড গরমেও সমস্যায় পড়েন লক্ষ্য। হাত থেকে ব়্যাকেট ছিটকে যায়। ৭-০ লিড থেকে ১১-১০ ব্যবধানে বিরতিতে লক্ষ্য। হাইভোল্টেজ ম্যাচ, প্রত্যাশার চাপ, স্নায়ু ধরে রাখা কঠিন লক্ষ্যর মতো তরুণের কাছে। দ্রুতই ১৭-১৩ লিড নেন অ্যাক্সেলসেন। উচ্চতা এবং অ্যাঙ্গেল কাজে লাগান। লক্ষ্য ক্রমশ আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগছিলেন। এর মধ্যেই মরিয়া চেষ্টা। দ্রুতই ম্যাচে পৌঁছে যান ভিক্টর। ৬ পয়েন্টে পিছিয়ে লক্ষ্য। এখানে আর সুযোগ দেননি ভিক্টর। ২১-১৪ ব্যবধানে দ্বিতীয় গেম এবং ম্যাচও জিতে নেন।
ম্যাচ শেষে বলেন, ‘প্রথম গেমে আমার আরও সতর্ক থাকতে হত। দ্বিতীয় গেমেও লিড ধরে রাখতে পারলাম না। প্রথম গেমে অ্যাটাকিং শুরু করলেও দ্বিতীয় গেমে এগিয়ে থাকায় একটু ডিফেন্সিভ হয়ে পড়েছিলাম। চেষ্টা করব কাল ব্রোঞ্জের ম্যাচে একশো শতাংশ দেওয়ার। তবে আজকের ম্যাচে অনেক কিছু শেখার রয়েছে। এই শিক্ষাগুলো পরবর্তী ম্যাচে আমার কাজে লাগবে।’
Post A Comment:
0 comments so far,add yours