দু'কামরার ফ্ল্য়াটের দেওয়ালে তাঁদের নানা মুহূর্তের কোলাজ। প্রতি কোণায় ঘাপটি মেরে বসে আছে কত স্মৃতি। এদিন যখন বাড়ি থেকে বুদ্ধবাবুর মরদেহ বের হয়েছে, মীরা ভট্টাচার্যের দৃষ্টিতে শুধুই শূন্যতা। শববাহী শকটের সামনের দিকে বসে পিস ওয়ার্ল্ড অবধি গিয়েছেন এদিন। রেখে এসেছেন প্রিয় সঙ্গীকে।
পাম অ্যাভিনিউয়ের সেই ঘরটায় এবার বুদ্ধ-বিনা একাই মীরা...
দীর্ঘদিনের সঙ্গীহারা মীরা ভট্টাচার্য।
এক মুহূর্তের জন্য চোখের আড়াল করেননি কেউ কাউকে। ৫৯এ পাম অ্যাভিনিউয়ের দু’ কামরার ফ্ল্যাটটাই ছিল তাঁদের জগৎ। একে অপরকে ভালবেসে, বিশ্বাস-শ্রদ্ধায় কাটিয়ে দিয়েছেন এতগুলো বছর। আজ বৃহস্পতিবার সেই সঙ্গীকেই পিস ওয়ার্ল্ডের ঠান্ডা ঘরে রেখে মীরা ভট্টাচার্য যখন পাম অ্যাভিনিউয়ের সেই ফ্ল্যাটে ফিরলেন, ক্লান্ত-শ্রান্ত। যে মীরাদেবী দাঁতে দাঁত চেপে এতগুলো বছর অসুস্থ বুদ্ধবাবুর পাশে থেকে লড়ে গিয়েছেন, আজ তাঁকে বড্ড অবসন্ন দেখাচ্ছে।
২০২১ সালে যখন করোনার থাবা বিশ্বজুড়ে। একইসঙ্গে কোভিড পজিটিভ হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও মীরা ভট্টাচার্য। হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। পরে সেখান থেকে এন্টালি এলাকায় একটি সেফ হোমে রাখা হয়েছিল তাঁদের। যতদিন বুদ্ধবাবু ভোট দিতে যাওয়ার মতো অবস্থায় ছিলেন, সবসময় সঙ্গী থেকেছেন মীরা ভট্টাচার্য।
যতবার বুদ্ধবাবুকে নিয়ে পাম অ্যাভিনিউয়ের ঘর থেকে উডল্যান্ডস হাসপাতালে পৌঁছেছে অ্যাম্বুল্যান্স, সঙ্গে সেই মীরা। পরম যত্নে ভালবেসে আগলে রেখেছেন প্রতিটা মুহূর্তে। অনেকে বলেন ভালবেসে একসঙ্গে বুড়ো হব আমরা। আক্ষরিক অর্থেই একসঙ্গে বুড়ো হয়েছেন বুদ্ধবাবু-মীরাদেবী।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours