ক্লাসে পড়ানো থেকে মিড ডে মিলের তদারকি, সবই করেন শিক্ষকরা। সঙ্গে তিনজন পার্শ্ব শিক্ষক আছেন বটে। তবে তাতে শিক্ষক-ঘাটতি মেটেনি বলেই অভিযোগ উঠছে। উচ্চশিক্ষা দফতরে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি বলে দাবি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের।
'মিড ডে মিল না, আমরা স্যর চাই', বেরুগ্রামের স্কুলে ৬১৬ পড়ুয়ার জন্য বরাদ্দ ৪ শিক্ষক
বেরুগ্রামের ছাত্রীরা।
কাটোয়া: শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে কেতুগ্রামের বেরুগ্রাম বান্ধব বিদ্যাপীঠ। স্কুলে ৬১৬ জন পড়ুয়ার জন্য বরাদ্দ মাত্র ৪ জন স্থায়ী শিক্ষক। বছর চারেক আগে অন্যত্র বদলি নিয়েছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষক। তার পর থেকেই ধুঁকছে এই বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন ৪ জন শিক্ষক।
ক্লাসে পড়ানো থেকে মিড ডে মিলের তদারকি, সবই করেন শিক্ষকরা। সঙ্গে তিনজন পার্শ্ব শিক্ষক আছেন বটে। তবে তাতে শিক্ষক-ঘাটতি মেটেনি বলেই অভিযোগ উঠছে। উচ্চশিক্ষা দফতরে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি বলে দাবি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের।
পড়ুয়ারা বলছে, একেবারেই ভালভাবে ক্লাস করতে পারে না তারা। টিফিন পিরিয়ডের পর তো সেভাবে ক্লাসই হয় না। এত কম শিক্ষক, কী বা করবেন স্যরেরা? স্কুলের এক ছাত্রীর কথায়, “আমরা মিড ডে মিল বা অন্য কিছুই চাইছি না। আমরা শুধু স্যর চাই। স্কুলে একটু পড়তে চাই।” আরেক ছাত্রীর কথায়, ভৌত বিজ্ঞান, জীবনবিজ্ঞান, অঙ্ক- অথচ বিজ্ঞানের শিক্ষক মাত্র একজন। ফলে স্কুলে শেখার সুযোগই থাকছে না। না চাইলেও টিউশন নিতে হচ্ছে বাইরে।
বেরুগ্রাম বিদ্যাপীঠে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি মিলিয়ে ৬১৬ জন ছাত্র ছাত্রী। ৪ জন শিক্ষক থাকলেও ২ জন বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক। বাকি ২ জন আবার কর্মশিক্ষার শিক্ষক। এছাড়া প্যারা টিচার আছেন ৩ জন। এমনই সঙ্কট যে, নিয়ম মতো তাঁদের অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস নেওয়ার কথা থাকলেও, উঁচু ক্লাসও নিতে হয়।
স্কুলের শিক্ষক বিবেকানন্দ সিনহা বলেন, “খুব কঠিন অবস্থায় চলছে স্কুল। মাধ্যমিক স্কুলে একজন ইতিহাস, একজন ইংরাজি, একজন কর্মশিক্ষা ও একজন শারীরশিক্ষার শিক্ষক আছেন। এতে কি সম্ভব?” ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহম্মদ আলি নওয়াজ বলেন, “উৎসশ্রী প্রকল্পে আমাদের ৯ জন টিচার চলে গিয়েছেন। এখন আমরা ৪ জন আছি। এই ৪ জন নিয়েই বিভিন্ন ক্লাস চালাতে হয়। এরপর আবার কোনও ক্লাস ফাঁকা যায়। এক একজন মাস্টারমশাই তো দু’টো ক্লাস নিতে হয়। না চলার মতো করে স্কুল চলছে।” যদিও এ নিয়ে ডিআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জেলার স্কুলগুলির শিক্ষক প্রয়োজন। তার তালিকা পাঠানো হয়েছে। দ্রুত তা পূরণ হবে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours