সামগ্রিকভাবে পরিবেশের পরিবর্তন বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারণ। প্রাকৃতিক কারণেই জিনের বদল হচ্ছে। বর্তমানে আমরা যে খাবার খাচ্ছি, যে বাতাসে অক্সিন নিচ্ছি, সেগুলিতে মিশে রয়েছে ভেজাল। তার সঙ্গে তাপমাত্রা বাড়ছে, জেনেটিক কসমেটিক ভেরিয়েশন বাড়ছে- এই সবকিছুর প্রভাব পড়ছে শুক্রাণুকে। 



এটা এমন একটা কোষ, যেটা একবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে ডিএনএ কোনভাবে মেরামত করা যায় না। ফলে শুক্রাণু কোন কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার থেকে নিষিক্ত ডিম্বাণুও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আবার অনেক সময় ডিম্বাণু নিষিক্ত হয় না।

কলকাতাতেও 'ভিকি ডোনার'! কে, কারা, কেমনভাবে?
প্রতীকী ছবি।


‘বিয়ের এতদিন পরেও মা হতে পারল না শালি! আঁটকুড়ো নাকি কে জানে! জানি না আর এজম্মে নাতি-নাতনির মুখ দেখব কি না!’ বিয়েবাড়িতে সকলের সামনে শাশুড়ির কাছে এভাবেই ঠোনা শুনতে হল সোমাকে। আর শুনবে না-ই বা কেন! বিয়ের পর ৫ বছর কেটে গিয়েছে। এখনও শাশুড়িকে নাতি-নাতনি উপহার দিতে পারেনি। একে মফস্বলে শ্বশুরবাড়ি, তার উপর পুরানো দিনের মানসিকতা শাশুড়ির। কথা তো শুনতে হবেই!

মা হতে না পারার যন্ত্রণায় সোমাও যেন দিন-দিন কেমন হয়ে যাচ্ছে। সেও কম চেষ্টা তো করছে না! ডাক্তার দেখানো থেকে শাশুড়ির বিশ্বাস মেনে ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত গিয়েছে। কিন্তু, সুরাহা কিছুই হয়নি। তাই ভরা বিয়েবাড়িতে শ্বাশুড়ির এরকম ঠোনা শোনার পর কেবলই মাথা নীচু করে খানিক দূরে চলে গেল সোমা। তবে তার বাঁধ ভাঙল দু-দিন পরে, স্বামীর কাছে বিছানায়।

বিয়েবাড়ি পর্ব শেষ। যে যার নিজের বাড়িতে ফিরেছে। তবে এবারে ভরা বিয়েবাড়িতে শাশুড়ির অমন ঠোনা আর মাসি-শাশুড়ির তির্যক চাউনি যেন কিছুতে ভুলতে পারছে না। কেন মা হতে পারছে না সোমা? সব ডাক্তার তো তাকে মা হওয়ার জন্য একেবারে ফিট তকমা দিয়েছে। সোমার স্বামী প্রবীর থেকে শাশুড়ি বীণাদেবীও নিজের কানে সে কথা শুনেছেন। তাহলে কেন হচ্ছে না? হঠাৎ করেই সোমার মনে পড়ল, কলেজের বন্ধু সৌমেন বলেছিল, একবার তোর বরের ডাক্তারি পরীক্ষা করা। সোমা সেকথা স্বামী-শাশুড়িকে জানিয়েছিল। কিন্তু, কেউ সেকথায় গুরুত্ব দেয়নি। উল্টে একথা বলার জন্য শাশুড়ির কাছে তাকেই কথা শুনতে হয়েছিল। ‘হীরের আংটি কখনও বাঁকা হতে পারে না!’ কিন্তু, এবার সহ্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। এবার প্রবীরকে ডাক্তারের কাছে যেতে হবেই। রাতে প্রবীর ঘরে ঢুকতেই আর আব্দার-অনুরোধ নয়, একেবারে যেন স্ত্রীর অধিকার দেখাতে শুরু করল সোমা। তার এই রূপ আগে কখনও দেখেনি প্রবীর। বেশ হকচকিয়ে যায়। সে তো নিজেকে ফিট বলেই মনে করে। তাহলে ডাক্তারের কাছে যেতে সমস্যা কোথায়? একেবারে বিস্ফোরক হয়ে উঠল সোমা। তারপরই চিৎকার করে কেঁদে উঠল। সোমাকে একেবারে অসহায় লাগছে। মা হওয়ার জন্য যেন সে পাগল হয়ে গিয়েছে। বাবা হওয়ার তাড়না তারও কম নয়। স্ত্রীর এই রূপ দেখে থাকতে না পেরে অবশেষে রাজি হল। মা-কে না জানিয়েই পরদিন সকালে পুরুষ গায়নোকোলজিস্টের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে সোমাকে সঙ্গে নিয়ে গেল প্রবীর। তারপর যা হওয়ার সেটাই হল!


দু-দিন ধরে প্রবীরের নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলল। তারপর পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে প্রবীরের মাথায় কার্যত আকাশ ভেঙে পড়ে। আপাতভাবে ফিট হলেও বাবা হওয়ার জন্য ফিট নয় প্রবীর। ডাক্তারের কথা শুনে বছর ৩৫-এর প্রবীরের মুখ দিয়ে আর কোনও শব্দ বেরোল না। কিন্তু, হাল ছাড়ার পাত্রী নয় সোমা। “তাহলে কি কিছুই করার নেই? এখন তো বিজ্ঞান, মেডিক্যাল সায়েন্স অনেক উন্নত, কোন উপায়ই কি নেই?”- ডাক্তারকে একনাগাড়ে প্রশ্ন করে চলে সোমা। ডাক্তার অবশ্য নিরাশ করেননি। জানালেন, স্পার্ম ডোনারের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours