চোপড়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "বড় বড় নেতারাও গতকাল থেকে এই বিষয়ে (চোপড়া কাণ্ডে) দুঃখ প্রকাশ করেননি। এর থেকে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে? যারা নিজেদের অত্যন্ত প্রগতিশীল নেত্রী মনে করেন, তারাও চুপ করে রয়েছেন কারণ এটি তাদের রাজনৈতিক জীবন বা দল বা রাজ্যের সঙ্গে জড়িত।"
'এর থেকে লজ্জার কী হতে পারে?', চোপড়ার নৃশংস ভিডিয়ো দেখে সংসদে সরব প্রধানমন্ত্রী
সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এবার সংসদে উঠল চোপড়া-সন্দেশখালি প্রসঙ্গ। প্রধানমন্ত্রীর নিশানায় বিরোধীরা। চোপড়া ও সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে বিরোধীদের চুপ থাকার সমালোচনা করেন করে বলেন, “মহিলাদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের ঘটনায় বিরোধীদের বাছাই করা মনোভাব অত্যন্ত উদ্বেগের… আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় পশ্চিমবঙ্গের ভিডিয়ো দেখেছি যেখানে একজন মহিলাকে নির্মমভাবে মারা হচ্ছে… এমনকী, বরিষ্ঠ নেতারাও এই বিষয় নিয়ে একটা শব্দ খরচ করেননি।”
এ দিন প্রধানমন্ত্রী মোদী রাজ্যসভায় বলেন, “এটা দেশের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় যে সংবেদনশীল বিষয়গুলিতেও যখন রাজনীতি জড়িয়ে পড়ে, তখন জনগণকে তাঁর কষ্ট ভোগ করতে হয়, বিশেষ করে মহিলাদের। মহিলাদের প্রতি অত্যাচার নিয়ে বিরোধীদের এই বাছাই করা মনোভাব অত্যন্ত উদ্বেগের।”
চোপড়া প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “বড় বড় নেতারাও গতকাল থেকে এই বিষয়ে (চোপড়া কাণ্ডে) দুঃখ প্রকাশ করেননি। এর থেকে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে? যারা নিজেদের অত্যন্ত প্রগতিশীল নেত্রী মনে করেন, তারাও চুপ করে রয়েছেন কারণ এটি তাদের রাজনৈতিক জীবন বা দল বা রাজ্যের সঙ্গে জড়িত। সেই কারণে মহিলাদের কষ্ট উপেক্ষা করা হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি যে যখন বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও এই সমস্ত বিষয়গুলি এড়িয়ে যান, তা দেশকে বেদনা দেয়। আমাদের মা-বোনেদের কষ্ট সহ্য করতে হয়।”
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের জবাবে তৃণমূল সাংসদ ডঃ শান্তনু সেন বলেন, “৩০৩টি আসনের দম্ভে তিনি যেভাবে লোকসভা বা রাজ্যসভা চালাতেন, আজ ২৪০টি আসন নিয়ে, নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে, কিছু লোভী পল্টুরামদের নিয়ে একটা নড়বড়ে জোট সরকার তৈরি করে তিনি ভাবছেন একইভাবে সরকার চালাবেন। এভাবে বাংলা থেকে জবাব পেয়েও লজ্জাবোধ নেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর, তাই আজ তিনি এভাবে বাংলাকে অপমান করেছেন, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর দিকে আঙুল তুলেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলার মানুষ জানাতে চায়, চোপড়া বা জলপাইগুড়ির মতো ঘটনা ঘটলে তৃণমূল কংগ্রেস দলগত বা সরকারগতভাবে তার নিন্দা করে, তৃণমূলের সঙ্গে যোগ থাকা সত্ত্বেও কোনও অভিযুক্ত পার পায় না, তাদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলায় গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু হাথরস, উন্নাওয়ের মতো বিজপি শাসিত রাজ্যে যখন নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে, তখন ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডের রিপোর্টে আজকেও নারী নির্যাতনের শীর্ষে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি থাকে। কোন বিজেপি শাসিত রাজ্যে অভিযুক্ত বিজেপি নেতাকে বিজেপি প্রশাসন গ্রেফতার করেছে, একটাও উদাহরণ দেখাতে পারবেন না প্রধানমন্ত্রী।”
মণিপুর প্রসঙ্গ টেনেও আক্রমণ করে তৃণমূল সাংসদ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আজ নারীদের সম্মানের কথা বলছেন, এখনও তিনি মুখ খুললেন না কেন মণিপুরে এত নারীদের ধর্ষণ করে, নগ্ন করে প্যারেড করানো হয়। কেন বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া হয়। এখন যাকে সাংসদ করেছেন, তাঁর বাবা ব্রজভূষণ মহিলা কুস্তিগীরদের যৌন হেনস্থার মামলায় অভিযুক্ত। তখন কেন প্রধানমন্ত্রী চুপ করে বসেছিলেন। বাংলার একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী , যাকে বিজেপি নেতারা কখনও বারমুডা পরতে বলেন, কখনও পিতৃপরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তিনি নারীদের সুরক্ষার জন্য যা কাজ করেছেন, তা থেকে নরেন্দ্র মোদীর শিক্ষা নেওয়া উচিত। সেই কারেই এনসিআরবি-র রিপোর্ট অনুযায়ী, আজকের দিনেও দেশের মধ্যে মহিলাদের জন্য সবথেকে সুরক্ষিত রাজ্য পশ্চিমবঙ্গই।”
Post A Comment:
0 comments so far,add yours