মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে জুড়ছে গঙ্গাসাগর,বিদ্যুতের টাওয়ারের পাশ দিয়েই মুড়িগঙ্গা সেতু

২০২৪-এর বাজেটে রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন,দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মুড়িগঙ্গা নদীর উপর সেতু রাজ্য সরকারই তৈরি করবে। ভোট মিটতেই সেই ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তুুতি শুরু করে দিল প্রশাসন,কবে থেকে এবং কীভাবে এই সেতু তৈরি হবে, নদীর উপর কোন অংশ দিয়ে সেটি যাবে—এসব নিয়ে কিছু পরিকল্পনাও হয়েছে। সরকারি সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে এই সেতুর প্রাথমিক একটি নকশা তৈরি করেছেন ইঞ্জিনিয়াররা। সেখানে দেখা যাচ্ছে, মুড়িগঙ্গা নদীর উপর বসানো বিদ্যুতের টাওয়ারগুলির সমান্তরালে সেতুটি তৈরি হবে।


 পূর্তদপ্তরের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, সেতু তৈরি করতে অন্তত চার-পাঁচ বছর লাগবেই। এই সময়কালে ভেসেল পরিষেবা  যাতে বিঘ্নিত না হয়, তা মাথায় রেখেই পরিকল্পনা করতে হচ্ছে। তাই জেটিঘাট থেকে দূরে একটি জায়গা চিহ্নিত করে সেখান থেকে সেতুর কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাছাড়া, বহু বছর আগে সমীক্ষা করে কাকদ্বীপের লট নম্বর এইট থেকে সাগরের কচুবেড়িয়া পর্যন্ত বিদ্যুতের টাওয়ারগুলি নির্দিষ্ট রুট ধরে বসানো হয়েছে।  মোটের উপর ওই পথ ধরেই সেতুটি নিয়ে যাওয়া গেলে বাড়তি পরীক্ষানিরীক্ষা খুব একটা করতে হবে না।  সময় এবং সরকারের খরচ, দু’য়েরই সাশ্রয় হবে। 
আরও জানা গিয়েছে, প্রস্তাবিত সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য হবে ৪.৭৬ কিলোমিটার। দু’টি বাঁক থাকবে সেতুতে। কাকদ্বীপের লট নম্বর এইট এবং সাগরের কচুবেড়িয়ার দিকে অ্যাপ্রোচ রোড তৈরি করতে ১২ একর জমি প্রয়োজন। মুরিগঙ্গার উপরের অংশ হবে ৩১৬৮ মিটারের। কাকদ্বীপের লট নম্বর এইটের দিকে অ্যাপ্রোচ রোড হবে ৯৩২ মিটার এবং সাগরের কচুবেড়িয়ার দিকে থাকবে ৬৬০ মিটারের অ্যাপ্রোচ রোড। সেই জমি সরকার কিনে নেবে। এখন তার জন্য সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। মুড়িগঙ্গা নদী দিয়ে অনেক জাহাজ চলাচল করে। সেই কথা মাথায় রেখে নদীর জলস্তর থেকে ১২ থেকে ১৩ ফুট উচ্চতায় সেতুটি তৈরি করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। আধিকারিকরা বলছেন, কল্যাণীর ঈশ্বর গুপ্ত সেতুর যে ধরন, এখানেও ঠিক সেই ধাঁচে মুড়িগঙ্গা সেতু হবে। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পরিভাষায় একে বলে ‘পিএসসি সেগমেন্টাল বক্স গার্ডার এক্সট্রা ডোজড ব্রিজ’। এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, সেতুর কাঠামো  ব্রিজের মূল গার্ডারের শক্তি বৃদ্ধি করবে। নদীর উপর দুটি পিলারের মাঝে ১৫০ মিটারের তফাৎ থাকার কথা রয়েছে। মূল দুই লাইনের সঙ্গে থাকবে একটি রিকভারি লেনও। অর্থাৎ, তিন লাইনের ক্যারিয়েজওয়ে থাকবে এই সেতুতে। সূত্রের খবর, রাইটসকে এই প্রকল্পের ডিপিআর তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্য পূর্ত দপ্তরের তরফে। যার শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে। তবে প্রকল্পের খরচ অনেকটাই বাড়ছে বলেই জানা গিয়েছে। আগে এই সেতুর নির্মাণ খরচ বাবদ ১২০০ কোটি টাকা ধরা হলেও, বর্তমান হিসাব অনুযায়ী এর খরচ গিয়ে দাঁড়াচ্ছে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা। যার সম্পূর্ণটাই দেওয়া হবে রাজ্যের কোষাগার থেকে। ইতিমধ্যে, জেলা প্রশাসনের তরফে দুপারেই জমি কেনার তোড়জোড়ও শুরু করা হয়েছে বলেই সূত্রের খবর। 
সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার চাইছে পুজোর আগেই এই সেতুর শিলান্যাস সেরে ফেলতে। সেই মতো প্রশাসনিক স্তরে তৎপরতা শুরু হয়েছে।  এই সেতু তৈরি হয়ে গেলে সুন্দরবনের আরও একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ (সাগর দ্বীপ) সড়কপথে জুড়ে যাবে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে। শুধু তাই নয়, কলকাতা থেকে গাড়ি করেই সরাসরি পৌঁছনো যাবে কপিলনমুনির আশ্রমে। সুবিধা পাবেন গোটা দেশের লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী,

ইতিমধ্যে সাগর ব্লকের অধীন কচুবেড়িয়া ও কশতলা এলাকায় প্রস্তাবিত গঙ্গাসাগর সেতুর জন্য জমির সীমানা নির্ধারণ শুরু করলেন সাগরের সাগরের বিডিও,BLRO,PWD ইঞ্জিনিয়ার,সাগর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি,সাগর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল সামির শাহ্ এবং সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রীর প্রতিনিধিরা,খুব শীঘ্রই জমির পরিমাপ ও অধিগ্রহণকৃত জমির জন্য পিলার স্থাপনের কাজ শুরু হবে এমনটাই জানালেন প্রশাসনের আধিকারিকরা
সেই ছবি আপনারা সরাসরি দেখতে পাচ্ছেন কাকদ্বীপ ডটকমের ক্যামেরার মাধ্যমে 

স্টাফ রিপোর্টার সৌরভ মন্ডল 
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours