এসএসসি-র ১৫ টার মতো স্ক্যানার রয়েছে। প্রতিদিন এক একটা স্ক্যানার ১০ হাজার OMR পুর্নমূল্যায়ন করতে পারে। সেক্ষেত্রে ২৩ লক্ষ OMR পূণর্মূল্যায়ণ করতে এসএসসির ৬ মাসের বেশি সময় লাগবে। ১ কোটি টাকার বেশি খরচ হবে।
অ্যাকাডেমিক স্কোর আর নতুন করে ইন্টারভিউ! 'যোগ্য' বাছাইয়ে কোন পথে যেতে পারে SSC?
কীভাবে বাছাই হবে যোগ্য?
কলকাতা: আপাতত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে স্বস্তিতে চাকরিহারারা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত স্থায়ী কোনও সুরাহা মেলেনি। আগামী ১৬ জুলাই পরবর্তী শুনানি। মঙ্গলবারের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, যোগ্যদের বাছাই করা সম্ভব হলে পুরো প্যানেল বাতিল নয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যেখানে OMR শিটই নেই, সেখানে যোগ্যদের বাছাই হবে কীভাবে? এই জটিল প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েছিল প্রাক্তন SSC চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডলের কাছে। তিনি বেশ কয়েকটি সম্ভবনার কথা বলেন।
প্রাক্তন এসএসসি চেয়ারম্যান জানান, তাঁর সময়কালে এসএসসি-র ১৫ টার মতো স্ক্যানার রয়েছে। প্রতিদিন এক একটা স্ক্যানার ১০ হাজার OMR পুর্নমূল্যায়ন করতে পারে। সেক্ষেত্রে ২৩ লক্ষ OMR পূণর্মূল্যায়ণ করতে এসএসসির ৬ মাসের বেশি সময় লাগবে। ১ কোটি টাকার বেশি খরচ হবে। এই পদ্ধতিতে প্রত্যেকের নম্বর পাওয়া সম্ভব। তবে এভিডেন্স অ্যাক্টে নাইসা থেকে পাওয়া OMR গ্রহণযোগ্য কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
তবে প্রাক্তন চেয়ারম্যান এটাও বলছেন, “এসএসসি যে দাবি করেছে, তাদের কাছে কোনও OMR সংক্রান্ত তথ্য নেই। সেটা সঠিক নয়। আরটিআই করলে ডেটা দিচ্ছে কীভাবে, সেটা তো ৬৫ এভিডেন্স অ্যাক্টে আটকাচ্ছে।” অবশ্য এই একই প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছে বিক্ষোভরত ‘যোগ্য’ চাকরিহারারাও। তাঁদেরও বক্তব্য, SSC যে বলছে, তাদের কাছে তথ্য নেই, তা সঠিক নয়। নবম-দশমের OMR শিট রয়েছে। যাঁদের কাছে OMR শিট নেই, তাঁরা তথ্যের অধিকার আইনে জানতে চেয়ে আবেদন করছেন, তাঁদের OMR শিট দেওয়া হচ্ছে। সেটা কীভাবে সম্ভব?
প্রাক্তন এসএসসি চেয়ারম্যান আরও একটি বিষয় উল্লেখ করেছেন। তাঁর বক্তব্যের সারমর্ম, তথ্য হার্ড ডিস্কে কোথাও না কোথাও থেকেই গিয়েছে। তিনি বলেন, “আসল কপি নষ্ট করা হয়েছে। আমি শুনেছি, স্ক্যানড কপি তৃতীয় সংস্থাকে করতে দেওয়া হয়েছিল। সেটাও এসএসসি অফিসেই হয়েছে। তাই আমার মনে হয় কোথাও না কোথাও কপি একটা থাকবেই। যে সার্ভারে স্ক্যান করা হয়েছিল, তার ক্লাউডে থাকতে পারে। সেটা ট্রেস আউট করা যাবে কিনা, সেটা দেখতে হবে। যতগুলো হার্ড ডিস্ক থেকে ব্যাক আপে একটা কপি থাকে, সেটা খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করা যেতে পারে।” যদিও উল্লেখ্য, এক্ষেত্রে সিবিআই সেটা পায়নি।
অতঃপর কীভাবে মূল্যায়ন সম্ভব? প্রাক্তন কমিশন কর্তার মতে, “যদি কোনওমূল্যেই পুর্নমূল্যায়ন করা সম্ভব না হয়, তাহলে বিকল্প মেথডের ব্যবস্থা করতে হবে।” তাঁর মতে, এরকমও হতে পারে, অ্যাকাডেমিক মার্কসগুলো দেখে নেওয়া। যাঁরা ভাল ছেলেমেয়ে, তাঁরা তো ভাল নম্বর পাবেনই। শিক্ষকতার ক্ষেত্রে মেরিটোরিয়াসকে তুলতে গেলে, নতুন করে মূল্যায়নের ব্যবস্থা, সেটা দীর্ঘমেয়াদি ব্যাপার।
তাছাড়া শর্ট কাট হতে পারে, তাঁদের অ্যাকাডেমিক স্কোর দেখা, যাঁদের বরাবরের রেজাল্ট ভাল, তাঁদের মধ্যে ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা। উল্লেখ্য, সিবিআই-কে উদ্ধৃত করে কমিশন মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে, অযোগ্যদের সংখ্যা ৮৮২৪ জন। তার মধ্যে গ্রুপ সি গ্রুপ ডি রয়েছে।
প্রাক্তন কর্তার মতে , “ফলে আমার মনে হয়, নবম দশম, একাদশ দ্বাদশের শিক্ষকের সংখ্যা খুব বেশি হবে না।” সেক্ষেত্রে একাধিক বোর্ড বসিয়ে এক্সটেনসিভ ইন্ডারভিউ করে ভিডিয়ো রেকর্ডিং করা যেতে পারে, তাহলে মার্কস আর ইন্টারভিউয়ের ভিত্তিতে মেধাবীদের ছেঁকে বের করে নেওয়া যেতে পারে।
গ্রুপ সি গ্রুপ ডি-র সংখ্যা বেশি করে, তাহলে বোর্ডের সংখ্যাও বেশি হবে। সেক্ষেত্রে ছোটখাটো প্রশ্ন সকলকেই দিয়ে, মূল্যায়ন করা যেতে পারে। প্রাক্তন কর্তার স্পষ্ট বক্তব্য, “প্রশাসনিক দৃষ্টিভঙ্গি যদি স্বচ্ছ থাকে, তাহলে এমন কোনও সমস্যা নেই, যাঁর সমাধান পাওয়া যাবে না।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours