চলতি লোকসভা নির্বাচনে ৩৭০ আসন জয়ের আখ্যান তৈরির জন্য বিজেপিকে কৃতিত্ব দিয়েছেন প্রশান্ত কিশোর। পিকের মতে, বিজেপি সুকৌশলে লোকসভায় মোট সংখ্যর আসনের অর্ধেক জয়ের থেকে নির্বাচনী আলোচনা ৩৭০ আসন জয়ে স্থানান্তরিত করেছে। তবে এর ফলে, ভবিষ্যতে সমস্যা হতে পারে।
'যদি বিজেপি ৩৭০-এর কম আসন জেতে তাহলে...', বাজার নিয়ে উদ্বিগ্ন পিকে
বিজেপি ৩৭০ আসন না জিতলে কী হবে, কী বললেন পিকে?
সাত দফার নির্বাচন চলছে। একই সময়ে ব্যাপক ওঠানামা চলছে শেয়ার বাজারে। প্রথম কয়েক দফায় ভোট পড়েছে অন্যান্য বারের তুলনায় বেশ কম। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভোটারদের মধ্যে ভোটদানের উৎসাহ বেশ কম। তাই মে মাসের শুরুতে শেয়ার বাজারের সূচক বেশ নীচে ছিল। তবে, গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লগ্নিকারীদের আশ্বস্ত করেছেন। তাঁর দাবি, ভোটের ফল প্রকাশের পর, শেয়ার বাজারের সূচক রকেটের গতিতে উপরে উঠবে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও দাবি করেছেন, ৪ জুন শেয়ার বাজার সব রেকর্ড ভেঙে দেবে। তারপর, বাজারের অবস্থা কিছুটা ফিরেছে। এই অবস্থায় প্রাক্তন ভোটকুশলী তথা রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রশান্ত কিশোর মনে করছেন, লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ৩৭০ আসন না জিতলে শেয়ার বাজারকে হতাশা দেখা দিতে পারে।
এনডিটিভি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, চলতি লোকসভা নির্বাচনে ৩৭০ আসন জয়ের আখ্যান তৈরির জন্য বিজেপিকে কৃতিত্ব দিয়েছেন প্রশান্ত কিশোর। পিকের মতে, বিজেপি সুকৌশলে লোকসভায় মোট সংখ্যর আসনের অর্ধেক জয়ের থেকে নির্বাচনী আলোচনা ৩৭০ আসন জয়ে স্থানান্তরিত করেছে। তবে এর ফলে, ভবিষ্যতে সমস্যা হতে পারে। বিজেপি ৩৭০ আসন জিততে না পারলে হতাশ হতে পারে শেয়ার বাজার। প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, “কোনও সংস্থার কাছ থেকে প্রত্যাশা খুব বেশি থাকলে, তারা ভাল পারফরম্যান্স করলেও অনেক সময় প্রত্যাশা পূরণ হয় না। আর প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলে তাদের শাস্তি দেয় শেয়ার বাজার। এই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, বিজেপি যদি ৩৭০ আসনের কম পায়, তা একটা আলোচনার বিষয় হয়ে উঠতে পারে। তার প্রতিফলন বাজারে দেখা যেতে পারে।”
তবে, ৩৭০ আসন জয়ের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করাটা বিজেপির অত্যন্ত ‘স্মার্ট পদক্ষেপ’ বলে মনে করেন পিকে। তিনি বলেছেন, “গত তিন-চার মাসে, সব আলোচনাই হয়েছে ৩৭০ আসন জয় এবং ৪০০ পারকে কেন্দ্র করে। এটাকে আপনি বিজেপির কৌশল বলতে পারেন বা বিরোধীদের দুর্বলতাও বলতে পারেন। কিন্তু, বিজেপি গোলপোস্টটাই ২৭২ থেকে ৩৭০-এ সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে। এতে অবশ্যই লাভ হয়েছে বিজেপির। এখন আর কেউ বলছে না মোদীজি হেরে যাবে। সবাই বলছে, ওরা হয়তো ৩৭০ আসন পাবে না। বিজেপির হেরে যাওয়ার কথা আলোচনাতেই নেই।”
প্রশান্ত কিশোর অবশ্য ওটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ৩৭০ আসন না পেলে যে বিজেপি সরকার গঠন করতে পারবে না, এমনটা নয়। তিনি বলেছেন, “বিজেপি ৩২০টি আসন পেলেও সরকার গঠন করবে।” বস্তুত, ৫৪৩ আসনের লোকসভায়, ২৭২টি আসনের বেশি পেলেই কোনও দল বা জোট কেন্দ্রে সরকার গঠন করতে পারে। এর আগে, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপির সঙ্গে কাজ করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। তবে, ২০১৪-র পর থেকে তাঁকে বিজেপি বিরোধী শিবিরেই দেখা গিয়েছে। এখন অবশ্য তিনি আর ভোট-কুশলী হিসেবে কাজ করেন না। তবে, তাঁর রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী এখনও অব্যর্থ। ভোট যত এগোচ্ছে অনেকেই বলছেন, বিজেপির পক্ষে হাওয়া সেভাবে নেই। পিকে অবশ্য জানিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদীর তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিয়ে কোনও সংশয় নেই।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours