মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "যদি প্রধানমন্ত্রী চান, তবে তাঁর জন্য রান্না করতে পারি। যদিও জানি না, উনি আমার হাতের রান্না খাবেন কি না। আমি ছোটবেলা থেকে রান্না করছি। সবাই আমার রান্নার প্রশংসা করে। কিন্তু মোদীজি কি আমার তৈরি খাবার খাবেন?"
মোদীকে রেঁধে খাওয়ানোর শখ মমতার! তরজা শুরু 'পদ' নিয়ে
ফাইল চিত্র
নয়া দিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে রেঁধে খাওয়ানোর সাধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তা নিয়েও শুরু রাজনৈতিক তরজা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ইচ্ছার পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি দেখছে বিজেপি। যদিও তৃণমূলের দাবি, ভারতে বৈচিত্রের মধ্যেও যে একতা দেখা যায়, তাই-ই তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ভুল কিছু বলেননি।
নবরাত্রির সময়ে বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবকে মাছ খেতে দেখা গিয়েছিল। এই নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। তীব্র আক্রমণ করে বিজেপি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও তেজস্বীকে কটাক্ষ করেন। সোমবার একটি নির্বাচনী জনসভায় এই প্রসঙ্গ নিয়েই মুখ খোলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনি বলেন, “যদি প্রধানমন্ত্রী চান, তবে তাঁর জন্য রান্না করতে পারি। যদিও জানি না, উনি আমার হাতের রান্না খাবেন কি না। আমি ছোটবেলা থেকে রান্না করছি। সবাই আমার রান্নার প্রশংসা করে। কিন্তু মোদীজি কি আমার তৈরি খাবার খাবেন? আমায় বিশ্বাস করবেন? উনি যা পছন্দ করবেন, আমি তাই-ই রান্না করব।”
তৃণমূল সুপ্রিমো এরপরই বিজেপিকে আক্রমণ শানান। তিনি বলেন, “আমার ধোকলার মতো নিরামিষ খাবার যেমন পছন্দ, তেমন মাছের ঝোলও ভালবাসি। হিন্দুদের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নিজস্ব নিয়ম রয়েছে, তাদের খাবারের অভ্য়াসও আলাদা। কে কী খাবে, তা ঠিক করে দেওয়ার কে বিজেপি? এতেই বোঝা যায় ভারতের বৈচিত্র ও একতা নিয়ে বিজেপির নেতাদের কত কম ধারণা।”
মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে রেঁধে খাওয়ানোর আমন্ত্রণ জানাতেই আক্রমণে নামে বিজেপি। ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোদীজিকে মাছ-ভাত খাওয়াতে চান। সাধু প্রস্তাব। কিন্তু তার আগে একবার নিজের অনুচর ফিরহাদ হাকিমকে একবার পর্ক চপ খাইয়ে দেখান না ! এক ঢিলে তিন পাখি মারা হবে ! ধর্মনিরপেক্ষতা জাহির করাও হবে, চ্যারিটি বিগিন্স অ্যাট হোম- দেখানোও হবে, আর চপ শিল্পের গুণগানও হবে !”
বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পাণ্ডাও আক্রমণ করে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ইচ্ছাকৃতভাবেই প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তিনি ভালভাবে জানেন যে প্রধানমন্ত্রী নিরামিষাশী, কখনও মাছ বা অন্য আমিষ কিছু খাবেন না। উনি যদি বিশ্বাস করেন যে সকলের যা পছন্দ, তাই খেতে দেওয়া উচিত, তাহলে কেন মোদীজির কথাকে বিকৃত করছেন? উনি সনাতনী হিন্দুদের অপমান করছেন।”
এদিকে, সিপিএম নেতা বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, “দাদা-বোন হিসাবে, মমতা দিদি অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীকে রেঁধে খাওয়াতে পারেন। জানি না এটা অপমান করার জন্য কি না। মোদীর রাজনীতির বিরোধিতা করেও ওনার (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) এই ইচ্ছা প্রমাণ করে যে সামনে এক কথা আর পিছনে আরেক কথা বলেন। দেশকে এই অবস্থায় আনার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নরেন্দ্র মোদী-দুইজনেই দায়ী। দুুজনেই ধর্মের সঙ্গে রাজনীতিতে মেশাচ্ছেন।”
যদিও, বিজেপি-সিপিএমের আক্রমণকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস। সাংসদ দোলা সেন পিটিআই-কে বলেন, “উনি (মমতা) একদম ঠিক কথা বলেছেন। মোদীজির যেমন তাঁর পছন্দ মতো খাবার খাওয়ার অধিকার রয়েছে, তেমনই সকল ভারতীয়রও একই অধিকার রয়েছে।”
Post A Comment:
0 comments so far,add yours