২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর ২০২০ সালের বিধানসভা ভোটে পরিবর্তন এসেছে অনেকটাই। ২০২০ সালের ভোটে পাটলিপুত্র লোকসভার ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৬টিতে জিতেছে মহাগঠবন্ধন। যার মধ্যে ফুলওয়াড়ি শরিফ ও পালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে জেতে সিপিআইএমএল।
পাটলিপুত্রের ভোটে লিবারেশনই কি নির্ণায়ক? মহাগঠবন্ধনেই খেলা ঘোরাতে চায় লালুর আরজেডি
মহাগঠবন্ধনে খেলা ঘুরছে বিহারে। ফাইল চিত্র।
বিহার: বিহারের রাজনীতিতে এক নতুন উলট পুরাণ। লালুপ্রসাদ যাদবের দলের সঙ্গে রক্তাক্ত ইতিহাস ভুলে এবার আরজেডির সঙ্গে গাটছড়া সিপিআইএমএল লিবারেশন-সহ সমস্ত বাম দল। পাটলিপুত্র লোকসভা আসনে জয় পেতে বামেদের ভোট ব্যাঙ্কেই ভরসা রাখছেন লালু-কন্যা মিশা ভারতী। অন্যদিকে লালু-পুত্র তেজস্বী যাদবের হাত ধরে বিহারের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে বামেদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।
কথায় বলে, রাজা আসে রাজা যায়। শুধু পোশাকের রং বদলায়। রাজা আর রাজনীতির বহু রং বদলের সাক্ষী থেকেছে পাটলিপুত্র। তবে এবার দিল্লি দখলের লড়াইয়ে প্রাচীন অঙ্গরাজ্যে শুরু হয়েছে এক নতুন রং মিলান্তির খেলা। বিহারে বরাবরই বাম রাজনীতির সঙ্গে লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডির অহিনকুল সম্পর্ক। সিপিএমের অজিত সরকার বা সিপিআইএম লিবারেশনের চন্দ্রশেখরের মতো নেতাদের খুনের ঘটনায় অতীতে বারবারই আরজেডির নাম উঠেছে কাঠগড়ায়।
কিন্তু গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে মাঝে। সেই বামেদের সঙ্গেই আজ গাটছড়া বেঁধেছে আরজেডি। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মহাগঠবন্ধনের শরিক সিপিআইএম লিবারেশন (CPIML)(Liberation) বা মালে-সহ সব বাম দল।
২০১৪ ও ২০১৯ সালেও পাটলিপুত্র কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়েছিলেন মিশা। তবে দু’বারই হেরে যান আরজেডি ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতা রামকৃপাল যাদবের কাছে হেরে যান। দু’বারই ৪০ হাজারের আশেপাশে ছিল হারের মার্জিন। এবার কমিউনিস্ট পার্টিগুলিকে পাশে পাওয়া লালু-কন্যার কাছে নিঃসন্দেহে বড় অ্যাডভান্টেজ। অনেকে বলছেন, শেষ দু’বার হারলেও এবার মিশার পাল্লা বেশ ভারী। ১ জুন এই কেন্দ্রে ভোট হবে।
আরজেডি নেতা সালাউদ্দিন মনসুরির কথায়, “খুব কম ভোটে হারি গতবার। তবে এবার আর আমরা হারব না। আমরা আরজেডির লোকজন আছি। মহাগঠবন্ধনের সকলে আছেন, মালের লোকেরা আছেন। এবার ময়দানে সকলে আছে। মিশা ভারতীকে এবার আমরা জেতাবই।”
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর ২০২০ সালের বিধানসভা ভোটে পরিবর্তন এসেছে অনেকটাই। ২০২০ সালের ভোটে পাটলিপুত্র লোকসভার ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৬টিতে জিতেছে মহাগঠবন্ধন। যার মধ্যে ফুলওয়াড়ি শরিফ ও পালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে জেতে সিপিআইএমএল।
২০২০ সালের তাক লাগানো ফলের পর এখন লিবারেশনের সঙ্গে দারুণ সখ্যতা আরজেডির। এগিয়ে চলার জন্য এক সময়ের ঘোষিত শত্রুকেই মিত্র ভাবছে রাজি সিপিআইএমএল। ফুলওয়াড়ি শরিফের বিধায়ক গোপাল রবিদাস বলেন, “সংসদীয় রাজনীতিতে কয়েকটা আসনে ঘুরপাক খাচ্ছি আমরা। এগিয়ে না গেলে তো আমরাও শেষ হয়ে যাব। দুর্বলতা বা এগোনোর কৌশল যাই বলুন, এটা দরকার ছিল।” মালে আর আরজেডির সম্পর্ক এগোনোর পিছনে তেজস্বীর ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মানছে সকলেই।
তাই বোধহয় বিজেপির নিশানায় লালু-পুত্র। বিজেপি নেতা রাকেশ সিংয়ের কথায়, “বিকাশ যা হওয়ার নীতীশ কুমারের সময়ই হয়েছে। তেজস্বী তো অপরাধীদের বিকাশ ঘটিয়েছে। মাফিয়া, নকশালদের বিকাশ ঘটিয়েছে।” তবে বিরোধীরা যে যাই বলুক, বামেদের সঙ্গে নিয়েই এবার বড় রণকৌশল সাজিয়েছেন তেজস্বী। ভোটবাক্সে কী হয় এবার সেটাই দেখার।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours