আর পাঁচটা মানুষের মতোই সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে কাটছিল রায়গঞ্জ শহর লাগোয়া ওই গ্রামের বাসিন্দা রীতা দাসের জীবন। স্বামী ও একমাত্র ছেলেকে নিয়ে নিম্নবিত্ত পরিবারের চলছিল সংসার। কিন্তু সেই সুখ আর বেশি দিন স্থায়ী হয়নি রীতার।
মেলেনি লক্ষ্মীর ভান্ডার, জোটেনি আবাসের ঘর, ছেলেকে শিকল বেঁধে রাখেন মা!
রায়গঞ্জে অসহায় মা!
উত্তর দিনাজপুর: মেলেনি লক্ষ্মীর ভান্ডার, জোটেনি আবাসের ঘর। স্বামীর মৃত্যুর পর অভাবের সংসারে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের চিকিৎসা করাতে না পেরে পায়ে লোহার শেকল-তালা দিয়ে বেঁধে দিন কাটাচ্ছেন মা! এমনই মর্মান্তিক ঘটনা রায়গঞ্জ ব্লকের বড়ুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিন গোয়ালপাড়া গ্রামে।
আর পাঁচটা মানুষের মতোই সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে কাটছিল রায়গঞ্জ শহর লাগোয়া ওই গ্রামের বাসিন্দা রীতা দাসের জীবন। স্বামী ও একমাত্র ছেলেকে নিয়ে নিম্নবিত্ত পরিবারের চলছিল সংসার। কিন্তু সেই সুখ আর বেশি দিন স্থায়ী হয়নি রীতার। অসুস্থ হয়ে মাস দুয়েক আগে স্বামীর মৃত্যু হয়। একমাত্র রোজগেরে মানুষটি চলে যাওয়ায় দু’বেলা দু’মুঠো খাবারের যোগান দিতে নিজেকেই কাজ করতে হচ্ছে রীতা দাসকে। কিন্তু এক সময়ে দশম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলে পড়া বর্তমানে মানসিক ভারসাম্য হারানো বছর ২৫শের ছেলেকে একা বাড়িতে ফেলে গেলে বিপদ বাড়ে। মায়ের বক্তব্য, যখন তখন এদিক ওদিক চলে যায় সে। তাই বাড়িতে প্রায় সব সময়ই দু’পায়ে শেকল দিয়ে তালা বন্দি করে রাখতে হয় তাকে। ছেলেকে এভাবে বেঁধে রাখতে মন চায় না মায়েরও।
ডাক নাম ভোলা। লেখাপড়া করতে করতেই মানসিক অস্থিরতা দেখা যায়, তখন চিকিৎসা করানোও হয়। কিন্তু তাতে সাড়া দেয়নি ভোলা। নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর সংসারে ছেলের চিকিৎসা করানোর খরচ যে বেশ অনেকটাই। অভিযোগ, মেলেনি কোনও সরকারি সুযোগ সুবিধাও। তাতেই হতাশ অসহায় এই মা।
এই প্রসঙ্গে রীতা দাস জানান, তাঁর স্বামী ৫ বছর ধরে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত ছিলেন। ছেলে ৮ বছর ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন। খুব কষ্ট করে দিন কাটছে তাঁদের। কেউ এগিয়ে আসেনি সাহায্যের জন্য। সরকারি কোনও সাহায্যও এখনও পাননি। মাস দুয়েক হল স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। এদিকে ছেলের এই অবস্থা। যখন যেদিকে খুশি চলে যায়। মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে বাড়িতেও কার্যত অত্যাচার চালায়। এমনকি ঘরের দরজা, ফ্যান, আসবাব পর্যন্ত ভেঙে দিয়েছে। তাই বুকে পাথর চেপে বাধ্য হয়ে ছেলের পায়ে শিকল পরিয়ে দিয়েছেন তিনি।
শিকলের বাঁধনে ইন্দ্রজিতের পা কেটে গিয়েছে। যা দেখে মায়ের দু’চোখ ভরে জল আসে। তবুও ছেলেকে কাছে কাছে রাখতে, এছাড়া আর কোনও উপায় নেই দুঃখী মায়ের কাছে। এই পরিস্থিতিতে কাতর ভাবে সাহায্যের আর্জি জানাচ্ছেন তিনি। ছেলের চিকিৎসা করানোর মতে সামর্থ্য নেই তার। কিন্তু লক্ষ্মীর ভান্ডার কেন পান না? সেই প্রশ্নের উত্তরে ওই মহিলা জানান, তিনি এর আগেও দুয়ারে সরকার গিয়েছেন একাধিকবার, জনপ্রতিনিধিদের কাছেও গিয়েছেন। কিন্তু লক্ষ্মীর ভান্ডার পাননি।
এদিকে তাঁর পায়ের শেকল কে বেধেছে, কেনই বা বেঁধেছে, তা সোজা সরল হাসি মুখে এড়িয়ে যায় ইন্দ্রজিৎ। যদিও বিষয়টি জেনে তাঁকে সরকারি ও ব্যাক্তিগতভাবে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যানী। তিনি বলেছেন, “দ্রুত এই ব্যাপারে খোঁজ খবর করছি। আমাদের জানা ছিল না। আমরা সবরকমভাবে ওই পরিবারের পাশে রয়েছি, ব্যক্তিগতভাবেও ও প্রশাসনিকভাবেও
Post A Comment:
0 comments so far,add yours