ভারতীয় সংবিধানে ৩২৪ অনুচ্ছেদের অধীনে দেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করানোর জন্য জাতীয় নির্বাচন কমিশন আদর্শ আচরণবিধি চালু করে। ১৯৬০ সালে কেরল বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম আদর্শ আচরণবিধি বা মডেল কোড অব কনডাক্ট চালু করা হয়েছিল। এরপরে ১৯৬২ সালে লোকসভা নির্বাচনে সমস্ত দলকেই এই বিধি অনুসরণ করার নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন।
আজ থেকেই চালু আদর্শ আচরণবিধি, কী কী নিয়ম মানতে হবে জানেন?
ফাইল চিত্র
নয়া দিল্লি: ঘোষণা হয়ে গেল লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট। শনিবারই জাতীয় নির্বাচনের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে লোকসভা নির্বাচন শুরু হচ্ছে, ভোট গ্রহণ চলবে ১ জুন অবধি। ফল ঘোষণা হবে ৪ জুন। নির্বাচনের দিন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই আজ থেকে চালু হয়ে গেল আদর্শ আচরণবিধি। রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের বিভিন্ন নিয়ম মেনে চলতে হবে নির্বাচন অবধি। কী কী সেই নিয়ম, জানেন?
ভারতীয় সংবিধানে ৩২৪ অনুচ্ছেদের অধীনে দেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করানোর জন্য জাতীয় নির্বাচন কমিশন আদর্শ আচরণবিধি চালু করে। ১৯৬০ সালে কেরল বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম আদর্শ আচরণবিধি বা মডেল কোড অব কনডাক্ট চালু করা হয়েছিল। এরপরে ১৯৬২ সালে লোকসভা নির্বাচনে সমস্ত দলকেই এই বিধি অনুসরণ করার নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া অবধি এই নিয়ম জারি থাকে। এই সময়ে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীরাও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কাজ করে। নির্বাচন শেষ হলে আদর্শ আচরণবিধিও তুলে নেওয়া হয়।
আদর্শ আচরণবিধিতে কী কী নিষিদ্ধ?
আদর্শ আচরণবিধি চালু হলে, সরকারের মন্ত্রীরা সরকারি খরচে কোনও নির্বাচনী সমাবেশ করতে পারবেন না। এই সময়ে মন্ত্রীরা তাদের বাসভবন থেকে অফিসে যাওয়ার জন্য শুধুমাত্র সরকারি যানবাহন ব্যবহার করতে পারেন। এই গাড়ি নির্বাচনী সমাবেশ ও সফরে ব্যবহার করা যাবে না।
আচরণবিধি কার্যকর হওয়ার পর কোনও রাজনৈতিক দলের সুবিধা হয়, এমন কোনও কাজে জনগণের টাকা ব্যবহার করা যাবে না। সরকারি ঘোষণা, উদ্বোধন, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ইত্যাদি সব ধরনের অনুষ্ঠান স্থগিত রাখতে হবে।
মন্দির, মসজিদ, গির্জা, গুরুদ্বার বা কোনও ধর্মীয় স্থান নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহার করা যাবে না।
আচরণবিধির অধীনে, সরকার কোনও সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মীকে বদলি বা পদচ্যুত করতে পারে না। যদি বদলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়, তবে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নিতে হবে।
কোনও মিটিং-মিছিলের আগে এবং একটি সরকারি বা ব্যক্তিগত জায়গায় লাউডস্পিকার ব্যবহার করার আগে স্থানীয় পুলিশের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হবে। রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টার মধ্যে লাউডস্পিকার ব্যবহার করা যাবে না।
আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে কি হবে?
কোনও রাজনৈতিক দল বা তার প্রার্থী যদি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে, তবে তাঁর প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা যেতে পারে। এমনকী, প্রার্থীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেও বাধা দেওয়া হতে পারে।
আদর্শ আচরণবিধি উলঙ্ঘন করলে প্রার্থীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা যায়, এমনকী জেলে পাঠানোরও বিধান রয়েছে।এই নিয়ম সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
আচরণবিধি শুধু রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। অর্থাৎ কোনও ব্যক্তি যদি কোনও রাজনৈতিক দল বা নেতার হয়ে প্রচার করেন, তাকেও এই নিয়মগুলি মেনে চলতে হবে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours