আসন্ন লোকসভা ভোটে বাংলার বেশ কিছু আসনে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা। আর যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে সায়নী ঘোষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামছেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি স্বয়ং। যাদবপুর থেকে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার প্রার্থী হচ্ছেন চন্দ্রচূড় গোস্বামী। আর এই সিদ্ধান্তের পরই নাম না করেই তৃণমূলের সায়নীকে একহাত নিয়েছেন চন্দ্রচূড়।
সায়নীর বিরুদ্ধে প্রার্থী মমতার 'কাছের লোক', যাদবপুরে এবার শুরু নতুন খেলা
সায়নী ঘোষ
কলকাতা: লোকসভা ভোটে মাঠে নামছে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভাও। দেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল বলে নিজেদের দাবি করে তারা। এবার আসন্ন লোকসভা ভোটে বাংলার বেশ কিছু আসনে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা। আর যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে সায়নী ঘোষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামছেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি স্বয়ং। যাদবপুর থেকে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার প্রার্থী হচ্ছেন চন্দ্রচূড় গোস্বামী। আর এই সিদ্ধান্তের পরই নাম না করেই তৃণমূলের সায়নীকে একহাত নিয়েছেন চন্দ্রচূড়। গতকাল এক ভিডিয়ো বার্তায় অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি আবারও উস্কে দিয়েছেন শিবলিঙ্গ নিয়ে সায়নীর অতীতের বিতর্কিত মন্তব্য। বলেছেন, ‘একজন বিশিষ্ট নেত্রী হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে, শিব ঠাকুর সম্পর্কে এমন কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন… মুখের কথা ও হাতের তির একবার বেরিয়ে গেলে আর ফিরিয়ে আনা যায় না। আমার বিশ্বাস, ওঁর এই কুরুচিকর মন্তব্য সাধারণ মানুষ সমর্থন করে না।’
প্রসঙ্গত, এই চন্দ্রচূড় গোস্বামী ও তাঁর অখিল ভারত হিন্দু মহাসভাকে বিগত দিনগুলিতে বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্য সরকারের পাশে থাকতে দেখা গিয়েছে। গত বছর নবান্নে এক সর্বদল বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সর্বদল বৈঠকের ইস্যু ছিল বাংলার রাজ্য সঙ্গীত ও পশ্চিমবঙ্গ দিবস। সেখানে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলগুলির কাউকে দেখা যায়নি। তবে সর্বদল বৈঠকে নজর কেড়েছিলেন অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামী। বৈঠকে তাঁর কথাবার্তা শুনে বেশ খুশি হয়েছিলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী সেদিন চন্দ্রচূড়কে বলেছিলেন, হিন্দু মহাসভা সম্পর্কে অনেকের মনে অন্যরকম ধারণা ছিল। কিন্তু চন্দ্রচূড়ের কথাবার্তা শুনে সেই ভুল ধারণা অনেকটা কেটেছিল বলেও মন্তব্য করেছিলেন মমতা। আগামী দিনে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে চন্দ্রচূড়দের পাশে পাওয়ার বিষয়েও আশাপ্রকাশ করেছিলেন মমতা।
সেদিনই বাংলার বকেয়া টাকার দাবিতে রাজ্য সরকারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন চন্দ্রচূড়। এরপর একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকার দাবিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়রা যখন দিল্লি থেকে ফিরে রাজভবনের বাইরে অবস্থান-প্রতিবাদে বসেছিলেন, সেই সময়েও অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার সমর্থন ছিল সেখানে। সংগঠনের এক প্রতিনিধি দলকেও সেখানে পাঠিয়েছিলেন চন্দ্রচূড়। সাম্প্রতিক অতীতে এনআরসি-র বিরুদ্ধেও সরব হতে দেখা গিয়েছিল অখিল ভারত হিন্দু মহাসভাকে।
তবে লোকসভা ভোটে লড়াইয়ের প্রস্তুতি অনেকদিন ধরেই শুরু করে দিয়েছিলেন চন্দ্রচূড়রা। গত বছরের ডিসেম্বরেই চন্দ্রচূড় গোস্বামী এক বিবৃতিতে দাবি করেছিলেন, বাংলার বিয়াল্লিশটি আসনেই লড়তে চলেছেন তাঁরা। এখন বাস্তব চিত্রে, বিয়াল্লিশ আসনে না হলেও রাজ্যের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা। এদিন সংগঠনের রাজ্য কমিটির সদস্যরা যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের জন্য দলের রাজ্য সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামীর নাম মনোনীত করেন।
যদিও চন্দ্রচূড়বাবু গতকালই এক ভিডিয়ো বার্তায় দাবি করেছেন, যাদবপুরে তাঁদের লড়াই প্রতিটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধেই। কারও নাম না করেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূলের সায়নীর মতো বিজেপির অনির্বাণ ও সিপিএমের সৃজন প্রত্যেক বিরুদ্ধেই তাঁদের লড়াই।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours