হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন, তারপরেই শুরু হয়ে যাবে এই বছরের গঙ্গাসাগর মেলা। আর মেলা শুরুর আগে প্রতিবারের মতো এবারেও প্রস্তুতি পরিদর্শন করতে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন গঙ্গাসাগরের উন্নয়নের বিষয়েও বলতে শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। তিনি বলেন, 'আগে যখন গঙ্গাসাগরে আসতাম, কিছুই ছিল না। এখন গঙ্গাসাগরে সব সেট-আপ তৈরি হয়েছে।' এক্ষেত্রে সবই বর্তমান রাজ্য সরকার তৈরি করেছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, গঙ্গাসাগরের আলোর জন্য ৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।
এদিন আরোও জানান “গঙ্গাসাগর সবচেয়ে বড় মেলা। আগে সকলে বলতেন, ‘সব সাগর বারবার, গঙ্গাসাগর একবার।’ কিন্তু এখন তাঁরা বলেন, ‘সব সাগর একবার, গঙ্গাসাগর বারবার।” কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যে পালাবদলের পর থেকেই সাগরের উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু তার পরেও গঙ্গাসাগরে পৌঁছনো বেশ কঠিন। কারণ দেশের অন্যান্য প্রান্তের ধর্মীয় ও ঐতিহ্যপূর্ণ মেলাগুলিতে পৌঁছনোর জন্য সড়কপথ, রেলপথ রয়েছে। কিন্তু গঙ্গাসাগরে যাওয়ার উপায় শুধুমাত্র জলপথ। ভেসেল বা নৌকায় চড়েই গঙ্গাসাগর যেতে হয়। ফলে যাত্রাপথ বেশ কঠিন। তার পরেও প্রতি বছর ৮০ থেকে ৯০ লক্ষ মানুষ মেলায় আসেন বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেও কেন গঙ্গাসাগরের মেলাকে কেন্দ্র স্বীকৃতি দিল না, তা নিয়ে তাঁর আক্ষেপ ব্যক্ত করেন এদিন।
প্রতিবছরই গঙ্গাসাগর উপলক্ষে শুধু রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে নয়, ভিন রাজ্য থেকেও লাখ লাখ মানুষের জমায়েত হয় গঙ্গাসাগরে। তাঁদের সুবিধার্থে বিভিন্ন পদক্ষেপ করে রাজ্য সরকার। এবারেও তার ব্যতিক্রম নেই। এই বছরও মেলায় আগত প্রতিটি পুণ্যার্থীর জন্য ৫ লাখ টাকার অ্যাক্সিডেন্টাল ইনসিওরেন্স কভারেজ দিচ্ছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি মেলায় য়াতায়েতের জন্য থাকছে পর্যাপ্ত যোগযোগ ব্যবস্থা।
এই বছর মেলায় যাতায়াতের জন্য থাকছে ২,৫০০ বাস, ৬টি বার্জ, ১০০টি লঞ্চ ও বাড়তি ট্রেন। যে কোনওরকম সমস্যা সামাল দেওয়ার জন্য থাকছেন ২,৪০০ সিভিল ডিফেন্স কর্মী। এছাড়াও থাকবেন অন্যান্য ভল্যান্টিয়ার্স। মেলায় কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে, পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে। মেলায় থাকবে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট, ৩০০ বেড, পর্যাপ্ত চিকিৎসক। এছাড়াও এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স এবং বিশেষ পরিস্থিতিতে রোগীদের জন্য গ্রিন করিডোর। মানুষের স্বার্থে বিভিন্ন ভাষায় প্রচারের ব্যবস্থাও রাখা হবে গঙ্গাসাগর মেলায়।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours