ভবানীপুর ছেড়ে ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব নিয়েছেন আবদুল মোনায়েম। ময়দানের পোড়খাওয়া কোচ লাল-হলুদে পা দিয়েই খুঁজতে শুরু করেছিলেন তরুণ কিছু মুখ। যাঁরা তারকা নন, কিন্তু টিমকে সাফল্য দেবেন। উইকেটকিপার-ব্যাটারের খোঁজে ছিলেন তিনি। কাস্টমসের সৌরভের কাছে ইস্টবেঙ্গলে খেলার প্রস্তাব দেন মোনায়েমই।


অভিষেকেই সেঞ্চুরির দরজায়, সৌরভের বাংলায় উত্থান আর এক সৌরভের!
Ranji Trophy 2024: অভিষেকেই সেঞ্চুরির দরজায়, সৌরভের বাংলায় উত্থান আর এক সৌরভের!


কলকাতা: এক সময় ওপেনারই ছিলেন। অনূর্ধ্ব ১৯ বাংলার হয়ে ডাবল সেঞ্চুরিও ছিল ওপেন করতে নেমে। সেই তিনিই যখন পা দিলেন ক্লাব ক্রিকেটে, আর দেখা-সাক্ষাৎ হয়নি নতুন বলের সঙ্গে। কাস্টমসের হয়ে মিডল অর্ডারেই খেলতেন হাওড়ার ছেলে। সেই তিনিই কিনা বাংলার হয়ে অভিষেক ম্যাচেই প্রায় করে ফেলছিলেন সেঞ্চুরি। শুক্রবারই শুরু হল রঞ্জি ট্রফি (Ranji Trophy)। অন্ধ্র প্রদেশের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই বাংলাকে চালকের আসনে বসিয়ে দিলেন ২৪ বছরের সৌরভ পাল। তিনি না পেলেও সেঞ্চুরি পেয়েছেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার অনুষ্টুপ মজুমদারও (১২৫)। প্রথম দিনের শেষে বাংলা ২৮৯-৪। তবে রঞ্জি অভিষেকেই ওপেন করতে নেমে সৌরভের ঝকঝকে ব্যাটিং নিয়েই যত আলোচনা। বাংলার বুকে কে এই নতুন সৌরভ?


ভবানীপুর ছেড়ে ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব নিয়েছেন আবদুল মোনায়েম। ময়দানের পোড়খাওয়া কোচ লাল-হলুদে পা দিয়েই খুঁজতে শুরু করেছিলেন তরুণ কিছু মুখ। যাঁরা তারকা নন, কিন্তু টিমকে সাফল্য দেবেন। উইকেটকিপার-ব্যাটারের খোঁজে ছিলেন তিনি। কাস্টমসের সৌরভের কাছে ইস্টবেঙ্গলে খেলার প্রস্তাব দেন মোনায়েমই। সৌরভ শুধু বলেছিলেন, ‘আমি অনূর্ধ্ব ১৯ বাংলা টিমের হয়ে ওপেন করতাম। আবার কি সেই সুযোগ পাব?’ মোনায়েম কথা দিয়েছিলেন, নেটে নিজেকে প্রমাণ করতে পারলে সুযোগ পাবেন। সৌরভ ইস্টবেঙ্গলের হয়ে মরসুমের প্রথম ম্যাচে ওপেনই করেছিলেন। ক্লাব ক্রিকেটে প্রথম ডিভিশন ওয়ান ডে ম্যাচ খেলতে নেমেই ভূকৈলাশের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করে চমকে দিয়েছিলেন সৌরভ। তারপর আর ফিরে দেখতে হয়নি তাঁকে। লিগের ম্যাচে মোহনবাগান, টাউন, কালিঘাটের বিরুদ্ধে পর পর তিনটে হাফসেঞ্চুরিও করেছেন বাঁ হাতি ওপেনার।

সৌরভের উত্থান দুটো স্বস্তি নিশ্চিত ভাবে দিচ্ছে বাংলাকে। মনোজ তিওয়ারির টিমে এতদিন ভিন রাজ্যের ছেলেদেরই ভিড় বেশি ছিল। সৌরভ পাল ও শ্রেয়ন্স ঘোষের একসঙ্গে অভিষেক হল। শ্রেয়ন্স ১১ করে ফিরে গেলেও সৌরভ সেঞ্চুরি করলেন। গত কয়েক বছর বাংলার হয়ে নতুন বলে ওপেন করেছেন অভিমন্যু ঈশ্বরন। তিনি ভারতীয় টিমের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আছেন। তাঁর বদলে একসঙ্গে ওপেন করতে নামলেন সৌরভ ও শ্রেয়ন্স। সৌরভের ইনিংসে ধৈর্য অনেক বেশি। ওপেনারের মধ্যে যেটা খুঁজতে চায় কোনও টিম, সেটাই তুলে ধরেছেন তিনি। তিনটে স্টাম্প সম্পর্কে ধারণা, বল ছাড়ার মতো বিরল গুণের অধিকারী। যে কারণে ২৩২ বল খেলে ৯৬ করলেন। মাত্র ৪ রানের জন্য অভিষেকেই সেঞ্চুরি হল না সৌরভের।


মোনায়েম বলছিলেন, ‘ছেলেটাকে প্রথম দিন থেকেই ভালো লেগে গিয়েছিল। ওপেনারের যে গুণ দরকার, সব আছে ওর। সবচেয়ে বড় কথা হল, ধৈর্য ধরতে জানে। বল ছাড়ার গুণটা আছে ওর মধ্যে। এ ছেলে অনেক দূর যাবে। যখন বাংলা টিমে সুযোগ পেল, তখন সৌরভকে বলেছিলাম, ‘আমি যখন মোহনবাগানের কোচ ছিলাম, ঋদ্ধিমান সাহা ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিল। তোমাকেও সেই চেষ্টা করতে হবে।’ উইকেটকিপার হিসেবে কিন্তু সৌরভ বেশ ভালো। যদি এগোতে পারে, বাংলা থেকে ভারতীয় টিমে নতুন মুখ পেয়ে যাব আমরা।’
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours