আইএসএল আর ডুরান্ড কাপ জিতলেও শেষ কয়েক ম্যাচে টানা ব্যর্থতার মধ্যে দিয়েই যাচ্ছিলেন হুয়ান ফেরান্দো। এএফসি কাপে গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে যাওয়ার পর আইএসএলে হারের হ্যাটট্রিকও করেন ফেরান্দো। নতুন বছরের শুরুতেই তাঁর সঙ্গে গোল্ডেন হ্যান্ডশেক করে ফেলল ম্যানেজমেন্ট। কোচ হাবাসের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট হতে চলেছে সুপার কাপ।
বছরের শুরুতেই কোপ পড়ল ফেরান্দোয়, বাগানের নতুন কোচ হাবাস
বছরের শুরুতেই কোপ পড়ল ফেরান্দোয়, বাগানের নতুন কোচ হাবাস
গুঞ্জন ছিল। তা-ই সত্যি হল। নতুন বছরের শুরুতেই হুয়ান ফেরান্দোর ছুটি হয়ে গেল মোহনবাগান (Mohun Bagan) থেকে। টেকনিক্যাল ডিরেক্টর আন্তোনিও হাবাসকে দেওয়া হল দলের দায়িত্ব। তাঁর কোচিংয়েই সুপার কাপ এবং মরসুমের বাকি ম্যাচ খেলবে মোহনবাগান। এএফসি কাপে ব্যর্থতা, আইএসএলে পরপর তিন ম্যাচে হার, এর জেরেই ফেরান্দোর ওপর অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল। বলা হয়েছিল, সুপার কাপ পর্যন্ত সময় পাবেন। তা আসলে হল না। ৯ জানুয়ারি থেকে শুরু কলিঙ্গ সুপার কাপ। হাবাসের ভারতে আসতে আরও কয়েকদিন লাগবে। এখনও ভিসা পাননি। সুপার কাপের প্রথম ম্যাচে হয়তো হাবাসকে ছাড়াই মাঠে নামতে পারে মোহনবাগানকে। হাবাসেই আপাতত ভরসা রাখছেন কর্তারা। আশা করা হচ্ছে, হাবাসের হাত ধরেই মোহনবাগান আবার জয়ে ফিরবে।
২০২১ সালে ঠিক উল্টো ছবি দেখা গিয়েছিল মোহনবাগানে। সে বার হাবাসের কোচিংয়ে আইএসএলে সাফল্য আসছিল না। ওই মরসুমেই গোয়ার কোচ হিসেবে ডুরান্ড কাপ জিতেছিলেন হুয়ান ফেরান্দো। ওই সাফল্যের কথা মাথায় রেখে মরসুমের মাঝপথে হাবাসকে সরিয়ে বাগানের কোচ হয়েছিলেন ফেরান্দো। দু’বছর পর সেই ফেরান্দোকে সরিয়ে আবার বাগানের হটসিটে এলেন হাবাস।
এই মরসুমে ফেরান্দোকে সরানোর পিছনে তিনটে যুক্তি কাজ করেছে…
এক, আইএসএলে টানা ৭ ম্যাচ জিতে রেকর্ড গড়েছিলেন ফেরান্দো। কিন্তু শেষ ৩ ম্যাচে দলকে জেতাতে পারেননি। তার মধ্যে ঘরের মাঠে ২টো ম্যাচে হার। ভালো দল দেওয়া সত্ত্বেও টিমকে প্রত্যাশিত সাফল্য দিতে পারেননি, এই অভিযোগ ছিল ফেরান্দোর বিরুদ্ধে।
দুুই, মূলত কার্ড এবং চোটের সমস্যাতেই মোহনবাগান বেলাইন হয়ে পড়ে। অভিযোগ, চোট যে কোনও সময় টিমকে চাপে ফেলে দিতে পারে। এটা মাথায় রেখেই কোচেরা রিজার্ভ বেঞ্চ গুছিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। মোহনবাগানের রিজার্ভ বেঞ্চে ভারতের অন্যতম সেরা প্লেয়াররা রয়েছেন। তারপরও ফেরান্দো কেন পরিবর্ত প্লেয়ারদের তৈরি রাখতে পারলেন না?
তিন, যে কোনও লম্বা লিগে ৩ পয়েন্ট যেমন লিগ টেবলের অবস্থান বদলে দেয়, তেমনই ১ পয়েন্ট অক্সিজেন দেয়। ফেরান্দো বরাবর আগ্রাসী ছক নিয়েই মাঠে নামার চেষ্টা করেন। টানা ৭ ম্যাচ অপরাজিত থাকার মধ্যে ৫টাতে এসেছিল জয়। শেষ ৩ ম্যাচে হারতে হল কেন? ময়নাতদন্তে নেমে কর্তারা দেখেছেন, ডিফেন্সই ঠিকঠাক সাজাতে পারেননি ফেরান্দো। যা তাঁর মতো অভিজ্ঞ কোচের কাছে প্রত্যাশিত ছিল না।
২৭ ডিসেম্বর কেরালা ব্লাস্টার্সের কাছে হারের পর ফেরান্দোর কোচিং নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। তখনই প্রায় চাকরি যায় যায় অবস্থা। ফেরান্দোর সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকে বসেছিলেন বাগান কর্তারা। বলা হয়েছিল, ওই কয়েক দফা বৈঠকে ফেরান্দো কর্তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন কোন পরিস্থিতির মধ্যে ৩টে ম্যাচ হেরেছে তাঁর টিম। তিনি বুঝিয়েছিলেন, সময় পেলে পরিস্থিতি পাল্টাতে পারবেন। অন্তত সুপার কাপ পর্যন্ত সময় দেওয়া হোক তাঁকে। ফেরান্দোর কথায় যে চিঁড়ে ভেজেনি, তার প্রমাণ পাওয়া গেল এদিন দুপুরে। এক সপ্তাহের ছুটি কাটিয়ে আজ, বুধবার বিকেলেই প্র্যাক্টিসে ফিরছে মোহনবাগান। তার আগে ফেরান্দো ছাঁটাই হয়ে গেলেন বাগান থেকে।
আর এক বার হাবাস যুগ শুরু হচ্ছে সবুজ-মেরুনে। আইএসএলে তাঁর মতো অভিজ্ঞ কোচ হাতে গোনা। ৮ তারিখ ওড়িশা যাবে মোহনবাগান সুপার কাপ খেলতে। হাবাস দিন’ছয়েক সময় পাচ্ছেন টিমের ফাঁক ফোকর ভরাট করার। অভিজ্ঞ হাবাস কি পারবেন মোহনবাগানকে আলোয় ফেরাতে?
Post A Comment:
0 comments so far,add yours