ভারতরত্ন সম্মান প্রাপকরা বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। ভিভিআইপি ক্যাটেগরির সুবিধা পান তাঁরা। যেমন, ট্রেনে বিনামূল্যে সফর করতে পারেন তাঁরা। কেন্দ্রের তরফে তাঁদের ওয়ারেন্ট অফ প্রেসিডেন্সির সুবিধা দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত রাষ্ট্রপতি, উপ-রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপাল, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, লোকসভার স্পিকার, ক্যাবিনেট মন্ত্রী, কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদের বিরোধী দলের নেতারা এই প্রোটোকলের তালিকায় থাকেন।

বিনা খরচে ট্রেন-বিমান যাত্রা, আর কী কী সুবিধা পান ভারতরত্ন সম্মান প্রাপকরা
ভারতরত্ন সম্মান প্রাপকরা কী সুবিধা পান

নয়া দিল্লি: মরণোত্তর ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত করা হবে বিহারের প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কর্পূরি ঠাকুরকে। দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ভারতরত্ন। শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান, সমাজসেবা ও খেলার দুনিয়ায় যাঁরা অনবদ্য অবদান রেখেছেন, তাঁদের থেকে বেছে নেওয়া হয় ভারতরত্ন সম্মান প্রাপকদের। ১৯৫৪ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদের সময় থেকে এই সম্মান দেওয়া হয়ে আসছে। প্রথমবার যখন ১৯৫৪ সালে ভারতরত্ন ঘোষণা করা হয়েছিল, তখন তিনজনকে এই নাগরিক সম্মান দেওয়া হয়েছিল। স্বাধীন ভারতের প্রথম গভর্নর জেনারেল চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী, বিজ্ঞানী চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরামন এবং ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনকে ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত করা হয়েছিল।


ভারতরত্ন সম্মান কারা পাবেন, সেটি কীভাবে স্থির হয়
দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ভারতরত্ন। এক্ষেত্রে নামের সুপারিশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর রাষ্ট্রপতি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিত্বদের ভারতরত্ন সম্মানে সম্মানিত করেন। মূলত যাঁদের কৃতিত্ব তুলনাহীন, যাঁদের অবদান দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এমন ব্যক্তিত্বদের নাম সুপারিশ করা হয়। অতীতে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী থেকে শুরু করে ক্রিকেট কিংবদন্তী শচীন টেন্ডুলকার, সঙ্গীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকর থেকে শুরু করে অনেকে এই সম্মান পেয়েছেন।

একজন ভারতরত্ন সম্মান প্রাপক কী পান?
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিত্বকে একটি সনদ ও পদক দিয়ে সম্মানিত করেন রাষ্ট্রপতি। সেখানে স্বাক্ষর থাকে রাষ্ট্রপতির। পিপল পাতার আকৃতির একটি পদক। তার একপাশে থাকে চকচকে প্ল্যাটিনামের সূর্য এবং অন্য পাশে থাকে অশোক স্তম্ভ। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ভারতরত্ন পদক এবং যে বাক্সের মধ্যে করে এটি দেওয়া হয়, সব মিলিয়ে এর মূল্য ২ লাখ ৫৭ হাজার ৭৩২ টাকা।


প্রসঙ্গত, এই সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মানের সঙ্গে কোনও অর্থ দেওয়া হয় না। তাছাড়া, প্রতি বছর ভারতরত্ন ঘোষণাও জরুরি নয়। ১৯৫৪ সাল থেকে ভারতরত্ন সম্মান দেওয়া শুরু হয়। মরণোত্তর ভারতরত্ন প্রথম দেওয়া হয়েছিল ১৯৫৫ সালে। এক বছরে তিনটির বেশি ভারতরত্ন সম্মান এখনও দেওয়া হয়নি। সাধারণত, ২৬ জানুয়ারি, প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন, এই ভারতরত্ন সম্মান প্রাপকদের নাম ঘোষণা করা হয়। এর আগে ২০১৯ সালে সঙ্গীতশিল্পী ও সুরকার ভূপেন হাজারিকাকে এই সম্মান দেওয়া হয়েছিল।

কীভাবে একজন ভারতরত্ন প্রাপক ভিভিআইপি হন?
ভারতরত্ন সম্মান প্রাপকরা বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। ভিভিআইপি ক্যাটেগরির সুবিধা পান তাঁরা। যেমন, ট্রেনে বিনামূল্যে সফর করতে পারেন তাঁরা। কেন্দ্রের তরফে তাঁদের ওয়ারেন্ট অফ প্রেসিডেন্সির সুবিধা দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত রাষ্ট্রপতি, উপ-রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপাল, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, লোকসভার স্পিকার, ক্যাবিনেট মন্ত্রী, কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদের বিরোধী দলের নেতারা এই প্রোটোকলের তালিকায় থাকেন। ওয়ারেন্ট অফ প্রেসিডেন্সি প্রোটোকলের মাধ্যমে স্থির হয় কোনও সরকারী কর্মসূচিতে কে কোথায় বসবেন।

এ ছাড়া ভারতরত্ন সম্মান প্রাপকরা ডিপ্লোম্যাট পাসপোর্টও পান। এই ডিপ্লোম্যাট পাসপোর্ট, সাধারণ পাসপোর্টের থেকে আলাদা। দেখতেও আলাদা। মেরুন রঙের কভার থাকে ডিপ্লোম্যাট পাসপোর্টে। এই পাসপোর্ট থাকলে আজীবন বিনা খরচে বিমানে যাতায়াতের সুবিধা পাওয়া যায়। যে কোনও রাজ্যের সরকারি গেস্ট হাউসে থাকার সুবিধা পান তাঁরা। যাতায়াত, খাওয়া-দাওয়া ও থাকার ক্ষেত্রেও বিভিন্ন সুবিধা পান তাঁরা।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours