নিয়োগে দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলাটির মূল মামলাকারী লক্ষ্মী তুঙ্গা, সাবিনা ইয়াসমিন, সন্দীপ প্রসাদ। দুর্নীতি মামলায় আগে হাইকোর্টে শুনানি চলাকালীন স্কুল সার্ভিস কমিশন জানিয়েছিল, তারা নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে বেআইনি চাকরিপ্রাপকদের সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করেছে।
হাইকোর্টে এক কথা, সুপ্রিম কোর্টে অন্য কথা কেন? হলফনামা তলব ডিভিশন বেঞ্চের
কলকাতা হাইকোর্ট।
কলকাতা: “একজন দুর্নীতির চেষ্টা করেছে বলে কি আপনারাও দুর্নীতির ছাড়পত্র পেয়ে যাবেন?” স্কুল সার্ভিস কমিশনকে প্রশ্ন করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সব্বার রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ। সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত সমস্ত মামলা সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টে পাঠিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি ৬ মাসের মধ্যে শুনানি শেষ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ গঠিত হয়। মঙ্গলবার সেই মামলারই শুনানি ছিল। তাতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি প্রশ্ন করেন, কেন স্কুল সার্ভিস কমিশন একই ইস্যুতে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে ভিন্ন অবস্থান নিচ্ছে? কীসের ভিত্তিতে এই ভিন্ন অবস্থান, তা এক সপ্তাহের মধ্যে কমিশনকে হলফনামা আকারে পেশ করতে হবে। নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি দেবাংশু বসাক নির্দেশ দিয়েছেন, বোর্ড মিটিং করে এক সপ্তাহের মধ্যে গোটা বিষয়টি জানাতে হবে কমিশনকে।
নিয়োগে দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলাটির মূল মামলাকারী লক্ষ্মী তুঙ্গা, সাবিনা ইয়াসমিন, সন্দীপ প্রসাদ। দুর্নীতি মামলায় আগে হাইকোর্টে শুনানি চলাকালীন স্কুল সার্ভিস কমিশন জানিয়েছিল, তারা নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে বেআইনি চাকরিপ্রাপকদের সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করেছে। আবার সেই একই মামলায় সুপ্রিম কোর্টে কমিশন জানিয়েছিল, কলকাতা হাইকোর্টের চাপে তারা একাজ করতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু সেই নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত সমস্ত মামলা শীর্ষ আদালত কলকাতা হাইকোর্টে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। মঙ্গলবারের শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্ট জানতে চায়, কেন এই ভিন্ন অবস্থান? স্কুল সার্ভিস কমিশন, কোন মিটিংয়ের মাধ্যমে চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তারও বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে তাদের।
এদিনের শুনানিতে কমিশনের তরফ থেকে সওয়াল করা হয়, মূলত যাঁরা মামলাকারী, তাঁরাই প্রথমে টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু চাকরি না পেয়ে মামলা করেছেন। সেক্ষেত্রে তাঁদের পরীক্ষাতেও বেনিয়ম রয়েছে। তার ভিত্তিতে বিচারপতি পাল্টা বলেন, “একজন দুর্নীতির চেষ্টা করেছে বলে কি আপনারাও দুর্নীতির ছাড়পত্র পেয়ে যাবেন?”
বিচারপতির আরও পর্যবেক্ষণ, যদি সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল হয়, তাহলে অনেক যোগ্য প্রার্থীও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। জনগণের টাকা কেন এভাবে নষ্ট হবে ? সে প্রশ্নও করেন বিচারপতি। কেন দুই আদালতে কমিশনের ভিন্ন অবস্থান, তা নিয়েই প্রশ্ন করে ডিভিশন। আগে কমিশনকে সেই বিষয়টিই পরিষ্কার করে জানাতে বলা হয়েছে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours