কাজী নজরুল ইসলামের জন্মস্থান চুরুলিয়া। এ গ্রামেই 'দুখু মিঞা'র একটি সংগ্রহশালা আছে। সেখানে কবির ব্যবহার করা পোশাক থেকে গ্রামাফোন, পাণ্ডুলিপির মতো নানা জিনিস রাখা আছে। সেখানেই সাজানো রয়েছে দু'টি পদকও। ভারত সরকারের পদ্মভূষণ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া জগৎতারিণী পদক। সম্প্রতি খবর ছড়ায়, এগুলি আসল পদক নয়, রেপ্লিকা।
কবি নজরুলের দুই পদক নিয়ে এবার নতুন বিতর্ক
কাজী নজরুল ইসলামের এই দুই পদক নিয়েই প্রশ্ন।
আসানসোল: কাজী নজরুল ইসলামের কারার ওই লৌহকপাট গানকে একটি ছবিতে ব্যবহার নিয়ে কিছুদিন আগে তোলপাড় হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এবার নতুন বিতর্ক শুরু। চুরুলিয়ার সংগ্রহশালায় রাখা নজরুল ইসলামের জগৎতারিণী পদক ও পদ্মভূষণ পদক ‘রেপ্লিকা’ বলে দাবি উঠেছে। একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, আসল পদক কোথায়?
কাজী নজরুল ইসলামের জন্মস্থান চুরুলিয়া। এ গ্রামেই ‘দুখু মিঞা’র একটি সংগ্রহশালা আছে। সেখানে কবির ব্যবহার করা পোশাক থেকে গ্রামোফোন, পাণ্ডুলিপির মতো নানা জিনিস রাখা আছে। সেখানেই সাজানো রয়েছে দু’টি পদকও। ভারত সরকারের পদ্মভূষণ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া জগৎতারিণী পদক। সম্প্রতি খবর ছড়ায়, এগুলি আসল পদক নয়, রেপ্লিকা।
এ নিয়ে বেশ হইচই শুরু হয়। চুরুলিয়ায় থাকা কবির ভাইপো কাজী রেজাউল করিম এবং সম্পর্কে নাতনি সোনালি কাজীর দাবি, এ পদক আসল নয়। তাঁদের দাবি, পরিবারেরই কেউ হয়ত পদক দু’টি নিয়ে গিয়েছেন। তার বদলে রেখে গিয়েছেন রেপ্লিকা। সোনালি কাজীর দাবি, বেশ কিছুদিন আগে তিনি নিউ জার্সিতে একটি প্রদর্শনীতে এরকম দু’টি পদক দেখেন। কার দিকে আঙুল?
সম্প্রতি চুরুলিয়ার নজরুল অ্যাকাডেমি ও সংগ্রহশালাটি নিয়েছে আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। পদকগুলি ফিরিয়ে আনতে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় তৎপর হোক, চাইছেন এখানকার বুদ্ধিজীবী মহলও। বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক কর্মী নজরুল চর্চা কেন্দ্রের সম্পাদক সঞ্জীবন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরাও তো জানি না এগুলি যে আসল নয়। এতদিন জানতাম ওই পদকগুলি আসল।” আসলগুলো কোথায় তা খতিয়ে দেখা হোক, চান তিনিও।
কবি নজরুল ইসলামের ভাইয়ের ছেলে কাজী রেজাউল করিম বলেন, “আমরা যখন নজরুল অ্যাকাডেমি তৈরি করি তখন আমি সম্পাদক ছিলাম। কবির পুত্রবধূ কল্যাণী কাজীর কাছ থেকে ওই দু’টি পদক আমরা নিয়ে এসেছিলাম। মাঝে আমি সম্পাদক পদে ছিলাম না। আবার যখন পরে দায়িত্ব পাই ও একইসঙ্গে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় যখন সংগ্রহশালা ও অ্যাকাডেমির দায়িত্ব নেয় তখন খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানাই এই দু’টি পদক আসলে রেপ্লিকা।”
কাজী রেজাউল করিমই বলেন, “আমি শুনেছি ২০০০ সালে ওই পদক দু’টি এখান থেকে নিয়ে গিয়েছেন কল্যাণী কাজী।” সোনালি কাজীরও বক্তব্য, “বহু অর্থ খরচে আমেরিকার নিউ জার্সিতে নজরুল ইসলামের নামে প্রদর্শনী হয়েছিল। সেখানে আসল পদকও রাখা ছিল। ওই পদক ওদের কাছেই আছে। যেহেতু চুরুলিয়া নজরুল অ্যাকাডেমি ও সংগ্রহশালাকে পদক দু’টি দেওয়া হয়েছিল তাই ওই পদকগুলি আমরা ফেরত চাইছি মানুষের স্বার্থে। কারণ নজরুল জাতীয় সম্পত্তি, জাতীয় সম্পদ। কারও ব্যক্তিগত নন।”
তবে এ নিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের পুত্র কাজী অনিরুদ্ধ ও পুত্রবধূ কল্যাণী কাজীর ছেলে কাজী অনির্বাণ বলেন, “আমি এসব বিষয়ে কিছু জানি না। আমার মা জানতেন। কিন্তু মা মারা যাওয়ার পর কেন এইসব প্রশ্ন উঠছে? এর আগে কেন এসব প্রশ্ন তোলা হয়নি?” পরিবারের অন্দরের এই কোন্দলে আসল দুই পদক কোথায় ‘লোপাট’ হল, উঠছে সেই প্রশ্নই।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours