বিজেপি সাংসদ বিনোদ কুমার সোনকার এই রিপোর্ট পেশ করেন। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে ওঠা ঘুষের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্নের অভিযোগের ভিত্তিতেই রিপোর্ট পেশ করেছে এথিক্স কমিটি। রিপোর্টে মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ করার সুপারিশ করা হয়েছে।

 তীব্র হই-হট্টগোলের মাঝেই সংসদে পেশ হল এথিক্স কমিটির রিপোর্ট, সাংসদ পদ খোয়াবেন মহুয়া?
সংসদ চত্বরে হাসিমুখে মহুয়া মৈত্র।

নয়া দিল্লি: আজই কি সংসদে শেষ দিন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের (Mahua Moitra)? সংসদে পেশ হল এথিক্স কমিটির রিপোর্ট (Ethics Committee Report)। তীব্র হই-হট্টগোল, বিক্ষোভের মাঝেই লোকসভায় পেশ হল এথিক্স কমিটির রিপোর্ট। বিজেপি সাংসদ বিজয় সোনকার (Vijay Sonkar) এই রিপোর্ট পেশ করেন। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে ওঠা ঘুষের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্নের অভিযোগের ভিত্তিতেই রিপোর্ট পেশ করেছে এথিক্স কমিটি। রিপোর্টে মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ করার সুপারিশ করা হয়েছে। এদিকে, এথিক্স কমিটির রিপোর্ট পেশের পরই সংসদে ফের হই-হট্টগোল শুরু হয়। দুপুর ২টো অবধি মুলতুবি করে দেওয়া হয়েছে লোকসভার অধিবেশন।

সংসদে শীতকালীন অধিবেশনের শুরুতেই মহুয়া মৈত্রকে নিয়ে এথিক্স কমিটির রিপোর্ট পেশ করার কথা ছিল, কিন্তু তা বিভিন্ন কারণে পিছিয়ে যায়। গতকালই জানা গিয়েছিল, আজ, শুক্রবার সংসদে এথিক্স কমিটির রিপোর্ট পেশ করা হবে। এ দিন অধিবেশনের শুরু থেকেই লোকসভায় অশান্তি শুরু হয়। বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিরোধী দলের সাংসদরা। দুপুর ১২টা নাগাদ বিজেপি সাংসদ বিজয় সোনকার এথিক্স কমিটির রিপোর্ট পেশ করেন। দুপুর ২টোয় অধিবেশন শুরু হলে, এই রিপোর্ট দেখেই স্পিকার প্রস্তাবনা আনবেন। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ থাকবে কি না, তা আজই স্থির হয়ে যাবে।


অন্যদিকে, মহুয়া মৈত্র ইস্যুতে স্পিকারকে নতুন করে চিঠি দেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এথিক্স কমিটির জমা দেওয়া রিপোর্টের হার্ড কপি চাওয়া হয়েছে। রিপোর্টের কপি হাতে পাওয়ার পর ৪৮ ঘণ্টা পড়ার জন্য সময় চাওয়া হয়েছে। তারপর আলোচনার দাবি জানানো হয়েছে।

এ দিন সংসদে ঢোকার আগেই মহুয়া মৈত্র বলেন, “মা দুর্গা এসে গিয়েছে, এবার দেখা যাবে কী হয়…যখন মানুষের উপরে বিনাশের কালো ছায়া তৈরি হয়, তখন প্রথমে বিবেকের মৃত্যু হয়। ওরা বস্ত্রহরণ শুরু করেছে, এবার মহাভারতের যুদ্ধ শুরু হবে।”


এথিক্স কমিটির রিপোর্ট নিয়ে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, “যখন বিষয়টা জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে, তখন সেটা আর পার্টির বিষয় থাকে না। এই নিয়ে কোনও রাজনীতি হওয়া উচিত নয়। যে জাতীয় নিরাপত্তাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে, তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা উচিত। নাহলে দেশের ১৪০ কোটির মানুষের প্রতিনিধিত্ব যারা করেন, তাঁদের নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। এই নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক এবং কড়া পদক্ষেপ করা হোক, এটাই চাই।”

অন্যদিকে, শিবসেনা (ইউবিটি)-র রাজ্যসভার সাংসদ প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী বলেন, “যদি লোকসভা তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজ করে দেয়, তবে তা খারাপ উদাহরণ তৈরি করবে।”


কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর বলেন, “এই রিপোর্ট একদমই অপর্যাপ্ত তথ্যনির্ভর। মনে হচ্ছে, আড়াই মিনিটের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোনও নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। যে অভিযোগ এনেছে, তাকে প্রশ্ন করা হয়নি। বিনা পর্যালোচনাতেই একজন সাংসদের সদস্যপদ খারিজের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা অত্যন্ত লজ্জাজনক। ইন্ডিয়া জোটের সমস্ত সদস্য়রা বিশ্বাস করেন যে এটা ন্যায়বিচারের পরিহাস। এটা ভবিষ্যতের জন্য খুব অবাঞ্ছিত উদাহরণ সৃষ্টি করবে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে রাজনৈতিক পরিহাসে পরিণত হয়েছে সংসদ।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours