রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, এ রাজ্যে ৩৪ বছরের বাম শাসনের সময় কোনও ব্যক্তিকে আলাদা করে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এর আগে জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য,বিমান বসু, প্রমোদ দাশগুপ্তদের কাটআউট বানিয়ে সিপিএম এমন প্রচার করেছে বলে চোখে পড়েনি।
মীনাক্ষীই 'মুখ', 'ক্যাপ্টেনের' ডাকে ব্রিগেডের মাঠ ভরাতে পারবে বামেরা?
মীনাক্ষীতেই ভরসা বামেদের
কলকাতা: পঞ্চাশ দিন ধরে চলেছে বামেদের ‘ইনসাফ যাত্রা’। ৩ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে তা শেষ হয় ২২ ডিসেম্বর। এই যাত্রায় প্রধান মুখ ছিলেন ডিওয়াইএফআই নেত্রী তথা বামেদের তরুণ তুর্কি মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। তবে ইনসাফ যাত্রার পর ৭ জানুয়ারি রয়েছে বামেদের ব্রিগেড সমাবেশ। এই সমাবেশেও নেত্রী মীনাক্ষীকে ঘিরে উচ্ছ্বাস থাকবে বলে আশাবাদী বামেরা।
২ হাজার ৯৫০ কিলোমিটার ‘ইনসাফ যাত্রা’ শেষে আগামী রবিবার ব্রিগেড সমাবেশ। ৫০ দিনের এই ইনসাফ যাত্রায় মীনাক্ষীকে ঘিরে বামপন্থী ভিড় তো ছিল। এমনকী,ছাপোষা আমজনতার সেই উচ্ছ্বাসকে ব্রিগেডও কাজে লাগাতে চাইছেন বাম নেতৃত্ব। মীনাক্ষীকে নিয়ে আশা দেখছেন তাঁরা। সেই কারণে ‘ক্যাপ্টেন’ মীনাক্ষীর ছবি দিয়ে বড় বড় হোডিং, পোস্টারে ছেয়ে ফেলতে চাইছেন বামেদের তরুণ তুর্কিরা। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বামেদের পোস্টার দেখলেই দেখা যাবে আঙুল উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন মীনাক্ষী। তবে কি সংগঠন থেকে ব্যক্তি পুজোয় বেশি ঝুঁকছে এ রাজ্যের লাল শিবির? ব্যক্তি মীনাক্ষীকেই কি সংগঠনের থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে?
রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, এ রাজ্যে ৩৪ বছরের বাম শাসনের সময় কোনও ব্যক্তিকে আলাদা করে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসু, প্রমোদ দাশগুপ্তর কাটআউট বানিয়ে সিপিএম আগে এমন প্রচার করেছে বলে চোখে পড়েনি।
তবে আগে যা করা হয়নি, তা পরবর্তীতে করা হবে না এমন মাথার দিব্যি কেউ দেয়নি। তাহলে কি এখন যুগের সঙ্গের নিজেরাও বদলাচ্ছে বামেরা? কারণ মিটিং-মিছিল সব হওয়ার পরও ভোট বাক্সে আশানুরূপ ফল না হওয়ায় এবার হয়ত ব্যক্তি কেন্দ্রিক রাজনীতির দিকে ঝুঁকছে লাল শিবির। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে হয়ত, মীনাক্ষীর মতো তরুণ মুখ সামনে আনলে ভোটের ফলে আসবে ‘ইনসাফ’।
এদিকে, বাম শিবির অবশ্য বলছে অন্য কথা। তাদের দাবি, এতদিন নতুন মুখ ছিল না বলে অভিযোগ আসছিল। এখন নতুন মুখ সামনে আসতেই আবার প্রশ্ন। এইসব রাজনীতি থাকবেই বলে সাফ জানিয়েছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। বলেছেন, “বামেদের মুখের কোনও অভাব নেই। আর যুবদের সম্পাদিকা মীনাক্ষী। আর সম্পাদিকা মানে ক্যাপ্টেন তো বটেই।” অপরদিকে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বলেছেন, “ক্যাপ্টেন আলাদা করে কিছু হয় না। রুটি-রুজির লড়াই চলে। সেই লড়াই চলছে।”
Post A Comment:
0 comments so far,add yours