ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো বা এনসিআরবি-র তথ্য অনুযায়ী মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ বা হত্যার মতো গুরুতর অপরাধের মোকাবিলা করতে এখনও পর্যন্ত ব্যর্থই তাঁর সরকার। তবে, দাঙ্গা প্রতিরোধে ১০০ শতাংশ নম্বর দেওয়া যেতে পারে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে। কারণ, এনসিআরবির তথ্য বলছে, ২০২২-এ যোগী-রাজ্যে একটিও দাঙ্গা হয়নি।
উত্তর প্রদেশে দাঙ্গায় ফুল স্টপ! 'বুলডোজার বাবা'র দাওয়াইয়ে ঠান্ডা গুন্ডারা
প্রতীকী ছবি
নয়া দিল্লি: অপরাধের বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর বলে মনে করা হয় উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই, অপরাধীদের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার মতো একাধিক কঠোর পদক্ষপ নিয়েছেন তিনি। মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ যারা করে, তাদের যমরাজ ক্ষমা করবেন না বলে সতর্ করেছেন। তবে, তাতে কতটা কাজ হয়েছে, সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো বা এনসিআরবি-র তথ্য অনুযায়ী মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ বা হত্যার মতো গুরুতর অপরাধের মোকাবিলা করতে এখনও পর্যন্ত ব্যর্থই তাঁর সরকার। ২০২২ সালে দেশের মধ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ এবং হত্যার সংখ্যায় সবার আগে রয়েছে উত্তর প্রদেশের নাম। তবে, দাঙ্গা প্রতিরোধে ১০০ শতাংশ নম্বর দেওয়া যেতে পারে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে। কারণ, এনসিআরবির তথ্য বলছে, ২০২২-এ যোগী-রাজ্যে একটিও দাঙ্গা হয়নি। গত ৫ বছরে এই রাজ্যে ৫০ শতাংশ কমেছে দাঙ্গার সংখ্যা।
এনসিআরবি NCRB ২০২২ সালের জন্য যে অপরাধের তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, গত ৫ শুধু উত্তর প্রদেশ নয়, দারুণ ভাবে দাঙ্গা কমেছে আরেক বিজেপি শাসিত রাজ্য অসমেও। এখানে ৫ বছরে দাঙ্গার সংখ্যা কমেছে ৮০ শতাংশ। একই সময়ে দারুণভাবে দাঙ্গা বেড়েছে ছত্তীসগঢ়ে। যে রাজ্যটি দুদিন আগে পর্যন্ত ছিল কংগ্রসের শাসনে। গত ৫ বছরে ছত্তীসগঢ়ে দাঙ্গার সংখ্যা বেড়েছে ৪৪ শতাংশ। ২০১৮ থেকে ২০২২-এর মধ্যে সারা ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনা কমেছে ৩৪ শতাংশ। ২০২১-এ ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছিল ৩৭৮টি। ২০২২-এ এই সংখ্যা নেমে এসেছে ২৭২-এ। এই বছর মধ্যপ্রদেশে ৬৮টি, বিহারে ৬০টি এবং ঝাড়খণ্ডে ৪৬টি সাম্প্রদায়িক বা ধর্মীয় দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে৷ তবে, উত্তর প্রদেশে একটিও সাম্প্রদায়িক বা ধর্মীয় দাঙ্গা ঘটেনি।
গত বছর, দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি রাজনৈতিক দাঙ্গা হয়েছিল কেরলে, ৩০১টি। এছাড়া, ওড়িশায় ২২৪টি এবং মহারাষ্ট্রে ৮৬টি দাঙ্গা হয়েছে। ২০১৮ থেকে ২০২২-এর মধ্যে, দেশে খুনের ঘটনাও অনেকটা কমেছে। উত্তর প্রদেশেও খুনের ঘটনা ১০ শতাংশ কমেছে। তবে, তারপরও দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি খুন হয়েছে উত্তর প্রদেশেই, ৩,৪৯১টি। তবে, রাজস্থান এবং ছত্তীসগঢ়ে খুন বেড়েছে যথাক্রমে ২১.৬ শতাংশ এবং ১০.৫ শতাংশ।
গত ৫ বছরে রাজ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ সবথেকে বেশি হয়েছে উত্তরর প্রদেশে, ৬৫,৭৪৩টি। তবে, শতাংশের বিচারে খুনের ঘটনার সর্বাধিক বৃদ্ধি ঘটেছে রাজস্থানে, ৬১.৭ শতাংশ। এছাড়া, তামিলনাড়ুতে ৫৮.১ শতাংশ বেড়েছে খুন। এর বিপরীতে অসমে খুন কমেছে প্রায় ৫০ শতাংশ। ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে গোটা ভারতে ধর্ষণের ঘটনা ৫.৫ শতাংশ কমেছে। অসম এবং মধ্য প্রদেশে ধর্ষণের ঘটনা কমেছে যথাক্রমে ৩২.৫ শতাংশ এবং মধ্য প্রদেশে ৪৪.২ শতাংশ। অন্যদিকে, বিহারে ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৫.৩ শতাংশ, তেলঙ্গানায় ৩৪.৩ শতাংশ এবং রাজস্থানে ২৪.৫ শতাংশ।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours