পাকিস্তানের করাচির ওই মহিলা কেন চোরা পথে নেপাল হয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন? যদি আত্মীয়র বাড়িতে দেখা করতে আসতেই হয়, তাহলে বৈধ ভিসা নিয়ে কেন তিনি আসেননি? এমন বেশ কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে টিভি নাইন বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল প্রাক্তন এনএসজি কর্তা দীপাঞ্জন চক্রবর্তীর সঙ্গে।

করাচি টু বাংলা, ভায়া নেপাল? কতটা চিন্তার? ব্যাখ্যায় প্রাক্তন NSG কর্তা
নেপাল থেকে চোরা অনুপ্রবেশ?

কলকাতা: নেপাল সীমান্ত দিয়ে পায়ে হেঁটে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা পাক নাগরিকের। কিন্তু টহলদারির সময় এসএসবি জওয়ানদের হাতে ধরা পড়ে যান শায়েস্তা হানিফ নামে ওই পাকিস্তানি মহিলা। সঙ্গে একটি বাচ্চা ছেলেও রয়েছে, মহিলার দাবি সে তাঁর সন্তান। করাচির বাসিন্দা ওই মহিলা, বর্তমানে দুবাইয়ে থাকছিলেন। সেখান থেকেই নেপালে আসেন ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে। এরপর নেপাল থেকে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টায় ধরা পড়েন। ভারতে আসার জন্য তাঁর কাছে কোনও ভিসা ছিল না। এসএসবি জওয়ানরা তাঁদের আটক করে পরে দার্জিলিং জেলা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তাঁদের সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তাঁদের থেকে যে পাসপোর্ট পাওয়া গিয়েছে সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় তাঁর আত্মীয়ের বাড়ি রয়েছে বলে দাবি করেছেন ওই পাকিস্তানি মহিলা। সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উত্তর ২৪ পরগনায় তাঁর কোন আত্মীয়র বাড়ি, তা জানার জন্য জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।


বাংলাদেশ থেকে এপার বাংলায় অনুপ্রবেশের চেষ্টার কথা মাঝেমধ্যে শোনা গেলেও নেপাল হয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ সচরাচর শোনা যায় না। বেশ কিছু প্রশ্নও ইতিমধ্যে উঠতে শুরু করেছে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে। পাকিস্তানের করাচির ওই মহিলা কেন চোরা পথে নেপাল হয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন? যদি আত্মীয়র বাড়িতে দেখা করতে আসতেই হয়, তাহলে বৈধ ভিসা নিয়ে কেন তিনি আসেননি? এমন বেশ কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে টিভি নাইন বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল প্রাক্তন এনএসজি কর্তা দীপাঞ্জন চক্রবর্তীর সঙ্গে।

তাঁর ব্যাখ্যা, “করাচির বাসিন্দা ওই মহিলা নেপাল হয়ে ভারতে আসছেন। নেপাল থেকে ভারতে আসার বেশ কয়েকটি বড় পয়েন্ট আছে। উত্তর প্রদেশে অন্তত ৬-৭টি জায়গায় আছে। বিহারেও অন্তত ৫-৬টি জায়গা আছে। সেগুলি দিয়ে না এসে তিনি নেপাল থেকে বাংলায় আসছেন। কেন বাংলায় আসছেন? সেটা দেখতে হবে।”


উল্লেখ্য, ওই মহিলা দাবি করেছেন, তিনি থাকতেন উত্তর পূর্ব ভারতের এক জায়গায়। পরে মুম্বইয়ে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই এক পাকিস্তানি নাগরিকের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। যদি তাই নয়, তাহলে কেন তিনি ট্যুরিস্ট হয়ে বাংলায় আসছিলেন না, সেটা নিয়েও প্রশ্ন প্রাক্তন এনএসজি কর্তার। বললেন, “কে মানা করেছিল ওনাকে ভিসা নিয়ে আসতে? পাকিস্তানের নাগরিকদের ভারত ভিসা দেয় না, এমন তো নয়। কেনই বা ওনাকে নেপাল হয়ে আসতে হল? নিশ্চয়ই সেটা তদন্তে বেরবে। আর এরা বাংলাকেই কেন বেছে নিচ্ছে বার বার? বাংলা থেকে কেউ আশ্বাস দিচ্ছে না তো, যে একবার ঢুকে পড়লে পাসপোর্ট বা অন্যান্য নথি সব বানিয়ে দেওয়া হবে। এটা খতিয়ে দেখা দরকার। নিশ্চয়ই এটি রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত চিন্তার বিষয়।”

প্রাক্তন এনএসজি কর্তা বললেন, “আমি কোনওভাবেই বিশ্বাস করছি না যে, কেউ করাচি থেকে নেপাল হয়ে কিছু না জেনেই, এমনি এমনি হাঁটতে হাঁটতে ভারতে ঢুকে আসছিলেন। নিশ্চয়ই একটা প্ল্যান করে আসছিলেন। কী সেই প্ল্যান, সেটা জানা দরকার। সঙ্গে একটি বাচ্চাও রয়েছে। মহিলার সঙ্গে একটি বাচ্চা দেখলে চট করে কেউ সন্দেহ করে না। আমি নিশ্চিত যথোপযুক্ত তদন্ত হবে।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours