বিল পাস নিয়ে রাজ্যের তরফে তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়, তারও সাফ উত্তর দেন তিনি। রাজ্যপাল স্পষ্ট বলেন, "কোনও বিল আমার কাছে আটকে নেই। কিছু বিল সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছিল। সেই ফাইলগুলির বিষয়ে আরও বেশি স্পষ্টতা প্রয়োজন।"
Governor C V Anand Bose: লক্ষ্মীবারে রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজের সুযোগ থাকছে আপনারও! জেনে নিন
রাজভবনে রাজ্যপাল
কলকাতা: রাজ্যপাল হিসাবে তাঁর বর্ষপূর্তি। গত বছর ২৩ নভেম্বর রাজ্যপাল হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলার সঙ্গে নিজের আত্মীয়তা গড়ে তোলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যপাল। এরপর সরস্বতী পুজোয় হাতেখড়িই হোক, কিংবা দুর্গাপুজোয় ‘প্যান্ডেল হপিং’, বারবারই সি ভি আনন্দ বোসকে বাঙালির সংস্কৃতিতে গা ভাসাতে দেখা গিয়েছে। এবার তাঁর বাংলায় বর্ষপূর্তি। তাই এই বিশেষ দিনে আম আদমি অর্থাৎ বাংলার মানুষের সঙ্গে ১৬ আনা বাঙালিয়ানাতেই মিশবেন রাজ্যপাল। ২৩ নভেম্বর থেকে রাজভবনে একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য ভবনে খাবার সুযোগ পাবেন সাধারণ মানুষ। আগামী ২৩ নভেম্বর রাজ্যপাল হিসাবে সি ভি আনন্দ বোস এক বছর পূর্ণ হচ্ছে। সেই কারণে ওই দিন থেকেই শুরু হচ্ছে বিশেষ উদযাপন। হবে ‘মিল উইথ গভর্নর’। তফশিলি জাতি উপজাতির ছাত্রদের বৃত্তি দেবে রাজভবন, ঘোষণা করেন রাজ্যপাল। মঙ্গলবার রাজভবনে সাংবাদিক সম্মেলেন বোস বলেন, “আমি বাংলাকে ভালোবাসি। বাংলার মানুষকে অত্যন্ত ভালবাসি। আমি বাংলাকে নিজের ভূমি হিসাবে মনে করতে শুরু করেছি। এখানকার রাজ্যপাল হিসাবে আমার কিছু দায়িত্ব রয়েছে।”
বাংলায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর একাধিকবার সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে একাধিক সিদ্ধান্ত, উপাচার্য নিয়োগ কিংবা বিভিন্ন বিল পাশ সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্য-রাজ্যপালের দ্বৈরথ একাধিকবার প্রকাশ্যে এসেছে। বছর পূর্তিতে রাজ্যপাল সে প্রসঙ্গ উত্থাপিত করেন। তাঁর কথায়, একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্কের তিনটি আলাদা স্তর রয়েছে। প্রথমটি ব্যক্তিগত। দ্বিতীয়টির ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, রাজ্যপালের দায়িত্ব গণতন্ত্রের রক্ষা ও সাম্য বজায় রাখা। শেষ এক বছরে তিনি তাঁর প্রশাসনিক সহকর্মীর বিরুদ্ধে একটিও অগণতান্ত্রিক কথা বলেননি বলেও দাবি করেন রাজ্যপাল।
বিল পাস নিয়ে রাজ্যের তরফে তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়, তারও সাফ উত্তর দেন তিনি। রাজ্যপাল স্পষ্ট বলেন, “কোনও বিল আমার কাছে আটকে নেই। কিছু বিল সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছিল। সেই ফাইলগুলির বিষয়ে আরও বেশি স্পষ্টতা প্রয়োজন।” তবে বাংলাকে ভালবাসলেও এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ” হিংসা এবং দুর্নীতির এই রাজ্যের সবচেয়ে বড় সমস্যা। আমি বলছি না এই দুর্নীতি বা হিংসা এই সরকারের তৈরি। কিন্তু এর সমাধান প্রয়োজন।”
একদিকে রাজ্যপালের বর্ষপূর্তি, আরেকদিকে রাজ্যে শিল্প সম্মেলন। রাজ্যপাল সশরীরে উপস্থিত না থাকলেও, মানসিকভাবে ‘রাজ্যের সব ভালোতেই’ তিনি রয়েছেন বলে এদিন জানান বোস। ২৩ নভেম্বর থেকে রাজভবনে একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। গণবিবাহের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলায় একটি থিম সংও পরিবেশন করা হবে। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যপাল এটাও বলেন, “৩৬৫ দিন বাংলার মানুষের সঙ্গে থাকবেন।” ওয়াকিবহাল মহলের মতে, কেরলের মানুষ হলেও আদ্যন্ত বাঙালি হয়েই থাকতে চাইছেন বোস।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours