কিন্তু কেন হঠাই এ কথা বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? প্রসঙ্গত, দীপাবলির দিন থেকে যে ৪১ জন কর্মী সুড়ঙ্গে আটকে পড়েছিলেন, তাঁদের উদ্ধার করতে একাধিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছিল। এসেছিলেন বিশেষজ্ঞরা।
বিদেশিরা পারল না, যাঁদের কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলে, তাঁরাই উদ্ধার করলেন'
উত্তর কাশী ইস্যুতে কেন্দ্রকে বিঁধলেন মমতা
কলকাতা: ‘পারলেন না তো, আপনার বিদেশিরা পারল না!’ উত্তর কাশীর সিলকিয়ারা সুড়ঙ্গ থেকে র্যাট হোল মাইনিং পদ্ধতিতে ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধারের পরও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নানা রকম বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি, যন্ত্র অবশেষে হার মেনেছে মানুষের হাতের কাছে! সারা দেশ জুড়ে এখন জয়জয়কার। কিন্তু এরইমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তোপ দাগলেন, “আমাদের লোক সংখ্যা যা, তাতে গোটা ইউরোপ জড়লে হবে না।” উদ্ধারকারীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে তিনি বলেন, “যাঁরা উদ্ধার করেছেন, তাঁরা সবাই মাইনরিটি ছেলে মেয়ে, এটা মনে রাখবেন।” কেন্দ্রকে ঠুকে তিনি বলেন, “বিদেশিরা বের করে আনতে পারল না তো। বেসরকারি মাইনিং বলে, যাঁদের কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল, তাঁরাই উদ্ধার করল , আপনার বিদেশি টিম পারেনি ।”
কিন্তু কেন হঠাই এ কথা বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? প্রসঙ্গত, দীপাবলির দিন থেকে যে ৪১ জন কর্মী সুড়ঙ্গে আটকে পড়েছিলেন, তাঁদের উদ্ধার করতে একাধিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছিল। এসেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। শত শত মাথা শুধু কাজ করেছে, কীভাবে সেই সুড়ঙ্গে প্রবেশ করা যায়, কয়েক কোটি টাকা মূল্যের কত অত্যাধুনিক মেশিন আনা হয়- কিন্তু সাফ দেয়নি কিছুই। প্রত্যেকটি পদক্ষেপ পিছলে গিয়েছে। পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ার সঙ্গে ব্যস্তানুপাতিক হারে বেড়েছে উদ্বেগ। শেষ ভরসা ছিল অগার মেশিন। কিন্তু সেটিও ভেঙে যায়। কথায় বলে যায়, যেখানে সব পথ বন্ধ, ভরসা কেবল দৈহিক শক্তিতেই। সেটাই কাজে লাগান বিশেষজ্ঞরা। ঠিক হয় ম্যানুয়াল পদ্ধতিতেই বার করে আনা হবে দুর্গতদের। আর সেই পদ্ধতির নামই র্যাট হোল মাইনিং পদ্ধতি।
র্যাট হোল মাইনিং পদ্ধতিতে প্রথমে চার ফুট চওড়া একটি গর্ত খোড়া হয়। সেখান দিয়ে প্রবেশ করেন শ্রমিকরা। তারপর কয়লা স্তরের কাছাকাছি পৌঁছলে মাটি কাটা হয়। মাটি কেটে কয়লা বের করে আনা হয়। আর এটা করতে কোনও অত্যাধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করতে হয় না। প্রয়োজন কেবল বেলচা, কোদালের। আগে এই পদ্ধতিতে অনেক ক্ষেত্রে কয়লা চুরির প্রবণতা বাড়ছিল। তাই কেন্দ্রের তরফে এই পদ্ধতিতে বেআইনি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু যখন প্রত্যেকটা পদক্ষেপ ব্যর্থ হয়েছে ভরসা জুগিয়েছে সেই কোদাল-বেলচাই। তাতেই গর্ত খুঁড়ে দুর্গতদের কাছে পৌঁছেছেন উদ্ধারকারীরা।
আর ঠিক এই ইস্যুটিকেই হাতিয়ার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘মাইনরিটি ছেলে মেয়েরাই’ শেষমেশ দেশি পদ্ধতিতে উদ্ধার করেছেন শ্রমিকদর। কোনও বিদেশি অভিজ্ঞরা পারেননি।
যদিও কেন্দ্রের তরফে আগেই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, র্যাট হোল পদ্ধতিতে উদ্ধারকার্য হলেও, তাতে কোনও শ্রমিককে কাজে লাগানো হয়নি। র্যাট হোল মাইনিংয়ে বিশেষজ্ঞদেরই পাঠানো হয়েছিল।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours