ইডেনে এ দিনও কেশব মহারাজের একটি ডেলিভারিতে আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল। মিডল স্টাম্পে পড়ে বল টার্ন নিয়ে কিপার কুইন্টন ডি'ককের হাতে। একটা সাউন্ড ছিল। অন ফিল্ড আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা আউট না দেওয়ায় রিভিউ নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। কিছুক্ষণের জন্য হৃদস্পন্দন থেমে গিয়েছিল ইডেন গ্য়ালারির। কোহলি কনফিডেন্ট ছিলেন। রিভিউতে দেখা যায় প্যাড-ব্যাটের সাউন্ডই ছিল। অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান হয় ইনিংসের শেষ দিকে।
স্বর্গোদ্যানে পারিজাত ইনিংস, জন্মদিনে মাস্টারকে ছুঁলেন কিং
হ্যাপি বার্থ ডে কিং কোহলি। এমন বেশ কিছু পোস্টার। একটায় এর সঙ্গে ইংরেজি হরফে লেখা, ‘আমি তোমায় ভালোবাসি’। ইডেনের বাইরে সকাল থেকেই অপেক্ষা। যাঁদের কাছে টিকিট রয়েছে, যেন পরশপাথর পেয়েছেন। টিকিট না থাকারা অপেক্ষায় কাটিয়েছেন। বিরাটকে যদি একটু দেখা যায়। টিম বাস থেকে নামার পর হাতে গোনা কয়েকজনই সেই সুযোগ পেলেন। আর যাঁদের টিকিট রয়েছে, পয়সা উশুল। সেই ট্রেড মার্ক কভার ড্রাইভ এবং স্ট্রেট ড্রাইভ দেখার পর আর কী চাই! বিশেষ প্রত্যাশা অবশ্য ছিলই। ইনিংস এগোক…তিন অঙ্কে পৌঁছক। এই প্রত্যাশায় শুধু ইডেনের গ্যালারিই নয়, হয়তো স্বয়ং ক্রিকেট ঈশ্বরও। আর টিভি কিংবা ওটিটিতে চোখ রাখা দেশ-বিদেশের কোটি কোটি ক্রিকেট প্রেমী। তাঁর জন্মদিনে সেঞ্চুরির অপেক্ষা। জন্মদিনে সেঞ্চুরির রেকর্ড রয়েছে সচিনের। নিজের জন্মদিনে সেঞ্চুরি করে সচিনকেও ছুঁলেন বিরাট কোহলি। বিস্তারিত রইল এর এই প্রতিবেদনে।
মনে পড়ে ইডেনে সেই গোলাপী টেস্ট? ভারতের প্রথম, ভারতে প্রথম। সেই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন বিরাট কোহলি। এরপরই হতাশার শুরু। তিন বছর বিরাটের ব্যাটে সেঞ্চুরির খরা ছিল সব ফরম্যাটেই। বিরাটের মতো এক প্রজন্মের ব্যাটারের কাছে যা প্রবল হতাশার। অবশেষে ২০২২ সালের এশিয়া কাপে (টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট) আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে গুরুত্বহীন ম্যাচে সেঞ্চুরির খরা কাটে বিরাটের। সেই শুরু। এরপর একের পর এক সেঞ্চুরি। তেইশের বিশ্বকাপেও একটি সেঞ্চুরি ছিল। আরও দু-বার সেঞ্চুরির কাছ থেকে ফিরেছেন। সচিনের ওডিআই সেঞ্চুরি ছোঁয়ার অপেক্ষা বাড়ছিল।
ইডেনে এ দিনও কেশব মহারাজের একটি ডেলিভারিতে আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল। মিডল স্টাম্পে পড়ে বল টার্ন নিয়ে কিপার কুইন্টন ডি’ককের হাতে। একটা সাউন্ড ছিল। অন ফিল্ড আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা আউট না দেওয়ায় রিভিউ নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। কিছুক্ষণের জন্য হৃদস্পন্দন থেমে গিয়েছিল ইডেন গ্যালারির। কোহলি কনফিডেন্ট ছিলেন। রিভিউতে দেখা যায় প্যাড-ব্যাটের সাউন্ডই ছিল। হাঁফ ছাড়ে ইডেন। ৬৭ বলে বিরাট হাফসেঞ্চুরিতে পৌঁছতেই অপেক্ষা বাড়তে থাকে। একেকটা রানে বিন্দু বিন্দুতে সিন্ধুর প্রত্যাশা। কাগিসো রাবাডার একটা ভয়ঙ্কর ইয়র্কার সামলে দিতেই বিরাট স্বস্তি গ্যালারি জুড়ে। প্রথম একশো বলে ছক্কা মারেননি বিরাট। তাতেই বোঝা যায় কতটা ফোকাস ছিলেন।
মার্কো জানসেনের বলে কবজির মোচড়ে একটা বাউন্ডারি মেরে ৮৬ রানে পৌঁছতেই গ্যালারিতে কোহলি…কোহলি রব। রাবাডাকে দুর্দান্ত কভার ড্রাইভে ৯৭-এ। অপেক্ষা যেন শেষই হয় না। অবশেষে ১১৯ বলে সেঞ্চুরি। স্বর্গোদ্যানে পারিজাত ইনিংসে সুবাস ছড়ালেন বিরাট কোহলি। জন্মদিনে ‘দিনটা’ তাঁরই।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours