গত চার দিনের মতো এদিনও অসখ্য মানুষ জড়ো হয়েছেন। সমানে বেজে চলেছে ঢাকও। এমনকি রয়েছে খোলের বোলও।
কিন্তু, মেজর ধ্যানচাঁদ স্টেডিয়ামের পরিবেশটা আজ একটু অন্যরকম। গত কয়েকদিনের উৎসবের আবহ আজও রয়েছে। কিন্তু, তার মধ্যেই মিশে গিয়েছে বিষাদের সুরও। আজ যে বিজয়া দশমী। উমার কৈলাসে ফেরার পালা। মায়ের বিদায়ের মধ্য দিয়ে এইবারের মতো শেষ হচ্ছে নেটওয়ার্কের সবথেকে বড় দুর্গোৎসব, ফেস্টিভ্যাল অব ইন্ডিয়া। গত ২০ অক্টোবর ম্যানেজিং ডিরেক্টর বরুণ দাসের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এই উৎসবের। দেশ-বিদেশের ২০০-রও বেশি স্টল আর বিপুল মানুষের অংশগ্রহণে জমে উঠেছিল এই উৎসব। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর), বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে সমাপ্তি টানা হল এই উৎসবের।
দশমীর সকাল থেকেই ফেস্টিভ্যাল অব ইন্ডিয়া প্রাঙ্গনে বিদায়ের বোল তুলেছিলেন ঢাকি এবং খোল বাদকরা। গত চারদিন ধরে দিল্লির বুকে যেন উঠে এসেছিল এক টুকরো বাংলা। বলা ভাল, হেরিটেজ তকমা পাওয়া বাংলার এই উৎসবকে আক্ষরিক অর্থেই সর্বজনীন করে তুলেছিল, সর্বভারতীয় আঙ্গিকে তুলে ধরেছি চর্চা হয়েছে বাংলার সম্বৃদ্ধ কৃষ্টি-সংস্কৃতির। দশমীর দিনটাও ব্যতিক্রম ছিল না। প্রথমে ঢাক-কাঁসরের বাজনার সঙ্গে দেবী আরতী। তারপর, দিল্লির মহিলারা আসেন মাকে শেষবারের মতো বরণ করে নিতে।
দুপুর থেকেই মেজর ধ্যানচাঁদ স্টেডিয়ামে শুরু হয়ে যায় সিঁদুর খেলা। কলকাতা বা বাংলা ছেড়ে যাঁরা দীর্ঘদিন দিল্লিতে আছেন, কলকাতার পুজোর অভাব বোধ করেন, তাঁদের মনের চাহিদা পূরণেই এই উদ্যোগ নিয়েছিল । বিজয়া দশমীর দিন মেজর ধ্যানচাঁদ স্টেডিয়ামে দুর্গাপুজোর মণ্ডপ দেখে বোঝার উপায় ছিল না, এটা কলকাতা না দিল্লি? লালপাড় সাদা শাড়িতে সেজে দলে দলে দিল্লির বাঙালী-অবাঙালী মহিলারা সিঁদুরের স্পর্শে দেবী দুর্গাকে অন্তিম শুভেচ্ছা জানান। এরপর প্রতিমা নিরঞ্জন। দশমীর শেষ বেলা কিছুটা হলেও ফেস্টিভ্যাল অব ইন্ডিয়ার প্রাঙ্গনে ধরা পড়ল ভাঙা হাটের ছবি। তবে, কলকাতা তথা বাংলায় যেমন দশমীকে ঘিরে পুরোটাই বিষাদে ভরে থাকে মন, দিল্লির পরিবেশটা একটু আলাদা। বাঙালীদের বিজয়া দশমী যে অবাঙালীদের দশেরা। তাই শেষ দিনেও উৎসবের মেজাজে কোনও ভাটা পড়েনি।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours