জাকার্তা এশিয়ান গেমসে যে টিমের কাছে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল, সেই জাপানকে হারিয়েই হানঝাউ গেমসে হকিতে সোনা জিতলেন হরমনপ্রীত সিং, ললিত উপাধ্যায়, অমিত রোহিদাসরা। জাকার্তা থেকেই টোকিও অলিম্পিকের উড়ান শুরু হয়েছিল। ৪০ বছরের খরা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত হকিতে এসেছিল পদক। এ বারের সোনা প্যারিস অলিম্পিকের স্বপ্ন কয়েক পারা চড়িয়ে দেবে, সন্দেহ নেই।


মধুর বদলা? নিশ্চিত ভাবেই! জাকার্তা এশিয়ান গেমসে যে টিমের কাছে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল, সেই জাপানকে (Japan) হারিয়েই হানঝাউ গেমসে হকিতে সোনা জিতলেন হরমনপ্রীত সিং, ললিত উপাধ্যায়, অমিত রোহিদাসরা। জাকার্তা থেকেই টোকিও অলিম্পিকের উড়ান শুরু হয়েছিল। ৪০ বছরের খরা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত হকিতে এসেছিল পদক। এ বারের সোনা প্যারিস অলিম্পিকের স্বপ্ন কয়েক পারা চড়িয়ে দেবে, সন্দেহ নেই। জাপানকে ৫-১ গোলে হারিয়ে সোনার মঞ্চে উঠে পড়ল ভারত। গত কয়েক বছর ভারতের হকির পুনর্জন্ম হয়েছে আবার। ফিরে এসেছে হকির (Hockey) হারিয়ে যাওয়া মহিমা। এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর এশিয়ান গেমসে (Asian Games 2023) সোনা। একই সঙ্গে হানঝাউ থেকেই প্যারিস অলিম্পিকের টিকিটও জোগাড় করে ফেললেন হরমনপ্রীতরা। 


১৯৬৬ সালে প্রথমবার এশিয়ান গেমসের হকি থেকে সোনা জিতেছিল ভারত। আবার সোনার দেখা মিলেছিল ১৯৯৮ সালে। তার পর অপেক্ষা করতে হয়েছে ২০১৪ সাল পর্যন্ত। চতুর্থ সোনা এল হানঝাউয়ে। একটা সময় ভারতীয় হকি টিম একের পর এক ইতিহাস তৈরি করেছে অলিম্পিকে। অপ্রতিরোধ্য ছিল হকি দুনিয়ায়। সেই প্রাধান্য যেন আবার ফিরছে হরমনপ্রীতদের হাত ধরে। এ বারের এশিয়ান গেমস দাপটের সঙ্গে শুরু করেছিল ভারত। উজবেকিস্তান ও সিঙ্গাপুরকে ১৬ গোল করে দিয়েছিলেন মনদীপ-মনপ্রীতরা। সেই ছন্দের একবার পতন দেখা যায়নি। জাপানের বিরুদ্ধে শুধু ফাইনাল নয়, গ্রুপ লিগের ম্যাচেও জিতেছিল ভারত। ফাইনালে তারই অ্যাকশন রিপ্লে দেখা গেল।

জাপানিদের গতি, স্কিল, কাউন্টার অ্যাটাক আর উইং প্লে-র বিরুদ্ধে শুরু থেকেই ভারত সহজসরল ছক নিয়ে নেমেছিল। বল নিজেদের দখলে রাখা। আর বিপক্ষের স্টিকে বল থাকলে, ডি-বক্সে প্রচীর তৈরি করা। সফল স্ট্র্যাটেজি। জাপান ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার সুযোগই পেল না ভারতীয়দের আগ্রাসনের সামনে। জাপানের গোলে বল রাখা শুরু করেছিলেন প্রাক্তন ক্যাপ্টেন মনপ্রীত সিং। শেষ করলেন বর্তমান ক্যাপ্টেন হরমনপ্রীত সিং। প্রথম কোয়ার্টার ছিল গোলশূন্য। কিন্তু দ্বিতীয় কোয়ার্টারে ১-০ করে ফেলে ভারত। জাপানের বক্সে মুভ তৈরি করেন ললিত। সেখান থেকে বল ঘুরে পৌঁছে যায় বক্সের বাঁ দিকে দাঁড়িয়ে থাকা মনপ্রীতের কাছে। ভারতের প্রাক্তন ক্যাপ্টেন ব্যাকহ্যান্ডে গোল করার জন্য বিখ্যাত। তিনি কোনও ভুল করেননি। ১-০ করেন। সেই ধাক্কাটাই আর সামলাতে পারেননি জাপানিরা।


জাপান মাথা তোলার আগেই ৪-০ করে ফেলে ভারত। এই এশিয়ান গেমসে আগ্রাসী ভারত যেমন প্রাপ্তি, তেমনই নয়া অবতারে দেখা দিয়েছেন অমিত রুইদাস। ভারতীয় ডিফেন্ডার গোল এতদিন করতেন। কিন্তু ড্র্যাগ ফ্লিকে যে ধারালো হয়ে উঠেছেন, তা জানা ছিল না। শুরু থেকেই এই অমিত চাপে ফেলে দিচ্ছেন। ফাইনালেও সেই ঝলক দেখিয়ে দিলেন। পেনাল্টি কর্নার থেকে অমিত ২-০ করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ম্যাচের দুরন্ত গোল করেন অভিষেক। ডান ডিক থেকে কোনাকুনি শটে করা তাঁর গোলটা নিয়ে আলোচনা থাকবে। পরের দুটো গোল পেনাল্টি কর্নার থেকে হরমনপ্রীতের। হানঝাউ গেমসে চারটে হ্যাটট্রিক করেছেন হরমনপ্রীত। বিশ্বের সেরা ড্র্যাগ ফ্লিকার ফর্মে থাকলে কী হয়, আরও একবার দেখতে হল জাপানকে। মাঝে একটা গোল করে পাল্টা ফেরার চেষ্টা করেছিল ঠিকই, কিন্তু জাপানকে আর মাথা তুলতে দেননি ভারতীয়রা।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours