তবে, রাহুলের মতে বিলটি অসম্পূর্ণ। তাঁর মতে, এতে ওবিসি সংরক্ষণকে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত ছিল। সেটা করা হয়নি বলে, ভারতের একটা বড় অংশের মহিলা এই বিলের সুবিধা নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, বিলের দুটি বিষয় তাঁর অদ্ভুত মনে হয়েছে।


নয়া দিল্লি: বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর), নারীশক্তি বন্ধন অধিনিয়মকে সমর্থন করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তবে, এই বিল আনার পিছনে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তিনি। তাঁর মতে, এই বিল বাস্তবায়নের জন্য তৈরি করা হয়নি। বরং, আদানি ইস্যু, জাতি ভিত্তিক জনগণনার ইস্যু থেকে সাধারণ মানুষের মনোযোগ সরাতেই এই বিল এনেছে মোদী সরকার। তিনি বলেছেন, “যে মুহুর্তে বিরোধীরা জাতিভিত্তিক জনগণনার বিষয়টি তোলে, বিজেপি একটি নতুন ঘটনা সামনে এনে দজাঁড় করায়। যাতে, অনগ্রসর সম্প্রদায় এবং ভারতের জনগণের মনোযোগ অন্যদিকে চলে যায়।” মহিলা সংরক্ষণ বিলে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য আলাদা সংরক্ষণের উপর জোর দিয়েছিন রাহুল। একই সঙ্গে তিনি দ্রুত জাতিভিত্তিক জনগণনার তথ্য প্রকাশের জন্যও সরকারকে চাপ দিয়েছেন।


ঐতিহাসিক সেঙ্গোলের কথা উল্লেখ করে রাহুল গান্ধী জানান, সেঙ্গোল ছিল ব্রিটিশদের কাছ থেকে ভারতের জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতীক। স্বাধীনতার পর থেকে ভোটাধিকার প্রদানের মাধ্যমে এই জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে, পঞ্চায়েত স্তরে মহিলাদের সংরক্ষণ বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়াকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল বলে দাবি করেন কংগ্রেস সাংসদ। তাই এই বিল পাশ হওয়াও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান তিনি।

তবে, রাহুলের মতে বিলটি অসম্পূর্ণ। তাঁর মতে, এতে ওবিসি সংরক্ষণকে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত ছিল। সেটা করা হয়নি বলে, ভারতের একটা বড় অংশের মহিলা এই বিলের সুবিধা নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, বিলের দুটি বিষয় তাঁর অদ্ভুত মনে হয়েছে। প্রথমত বলা হচ্ছে, এই বিল প্রয়োগের জন্য নয়া জনগণনা প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, এর জন্য আসন পুনর্বিন্যাসও প্রয়োজন বলে দাবি করা হচ্ছে। রাহুল দাবি করেন, এই দুই প্রক্রিয়া ছাড়াই বিলটির বাস্তবায়ন সম্ভব। কারণ, মহিলারা ভারতীয় নাগরিকদের একটি অংশ। আর অনগ্রসর শ্রেণির মানুষ, ভারতীয় নাগরিকদের আরেকটি অংশ।

তিনি জানান, এই বক্তৃতার জন্য তিনি ভারতের দলিত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বের বিষয়ে গবেষণা করেছেন। আর তাতে তিনি জানতে পেরেছেন, ভারত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক ও দফতরে মোট ৯০ জন সচিব আছেন। তার মধ্যে মাত্র ৩ জন অনগ্রসর সম্প্রদায়ের। ভারতের মোট বাজেটের মাত্র ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করেন তাঁরা। এটা ভারতের অনগ্রসর শ্রেণির অপমান বলে দাবি করেন তিনি। তিনি প্রশ্ন তোলেন, দেশে কত সংখ্যক ওবিসি, দলিত এবং আদিবাসী রয়েছে? রাহুল জানান, শুধুমাত্র জাতিভিত্তিক জনগণনার মাধ্যমেই এর উত্তর পাওয়া যাবে। তাই, ভারত সরকারে কাছে তিনি দ্রুত জাতি ভিত্তিক জনগণনা করার দাবি জানিয়েছেন এবং ইউপিএ সরকারের সময় যে জাতিভিত্তিক জনগণনা হয়েছিল, তার তথ্য প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছেন।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours