মামলাকারীর আইনজীবী এদিন আদালতে উল্লেখ করেন, ২০২২ সালের জুন মাস থেকে রাজভবনে পড়ে রয়েছে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত বিল। অনেকদিন ধরে রাজ্যপাল এভাবে বিল আটকে রাখতে পারেন না বলে দাবি করেছেন তিনি।


কলকাতা: দিনের পর দিন কেটে গেলেও রাজভবনে পড়ে রয়েছে উপাচার্য বিল। রাজ্য বিধানসভায় বিল পাশ হয়ে গেলেও রাজ্যপাল সই না করায় আইন হিসেবে কার্যকরা যাচ্ছে না সার্চ কমিটির মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগের বিষয়টি। সেই বিল নিয়ে এবার কলকাতা হাইকোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়ল রাজ্যপালের ভূমিকা। মামলাকারীর প্রশ্নের ভিত্তিতে রাজভবনের কাছে হলফনামা তলব করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিচারপতি ইন্দ্র প্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে ছিল এই মামলার শুনানি।


বিচারপতি মুখোপাধ্যায় এদিন বলেন, রাজ্যপালকে কোনও ভাবে শোকজ করা যায় না। তবে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হলেও কি প্রশ্ন করতে পারে না? কেন্দ্রকে এই প্রশ্ন করেন বিচারপতি। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘সংবিধান সময় বেঁধে না দিলেও যুক্তিসঙ্গত হিসেবে একটা সময় ধরে নেওয়া হয়।’

এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা আছে কি না, সেটা হলফনামা জমা দেওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে আদালত। আগামী ৪ অক্টোবর হলফনামা জমা দিতে হবে রাজভবনের তরফ থেকে।


মামলাকারী সায়ন মুখোপাধ্যায়ের আইনজীবী লক্ষ্মী গুপ্ত এদিন আদালতে উল্লেখ করেন, ২০২২ সালের জুন মাস থেকে রাজভবনে পড়ে রয়েছে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত বিল। অনেকদিন ধরে রাজ্যপাল এভাবে বিল আটকে রাখতে পারেন না। তিনি আরও দাবি করেছেন, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদ ফাঁকা পড়ে আছে। তাই এই বিলে সই করা প্রয়োজন। একবছর পার হয়ে গেলেও সই হয়নি। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, আইন অনুযায়ী রাজ্যপালের কিছু ক্ষমতা থাকলেও কিছু সময়ে তাঁকে তাঁর কর্তব্য করতেই হয়। বিলের ক্ষেত্রে রাজ্যপালকে সংবিধান মানতে হবে, সুপ্রিম কোর্টে এমন রায় আছে বলেও উল্লেখ করেছেন আইনজীবী।

কেন্দ্রের তরফে আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য বলেন, এর আগে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ ছিল, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে হওয়া জনস্বার্থ মামলা গ্রহণযোগ্য কি না সেটা দেখা হবে। তারপরও কেন নতুন করে মামলা শোনা হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তিনি আরও জানিয়েছেন, সংবিধানের ২১২ নম্বর ধারা অনুযায়ী মন্ত্রিসভার কাউকে আদালতের আইনি প্রক্রিয়ার আওতায় আনা যায় না। এ ক্ষেত্রে রাজ্যপালও মন্ত্রিসভার অঙ্গ। বিল্বদল ভট্টাচার্যের সওয়াল, রাজ্যপালকে আদালতের তরফে প্রশ্ন করা হলে, তা তাঁকে অপমান করার সমান। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। আগামী ১৬ অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours