উত্তর প্রদেশে যেভাবে যোগী আদিত্যনাথ সরকার পরিচালনা করছেন, তাতে সঙ্ঘ বেশ সন্তুষ্ট বলে জানা গিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি থেকে হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন ইস্যুতে যোগী যে ভাবে সরব তাতে খুশি মোহন ভাগবত, দত্তাত্রেয় হোসাবলেরা। যোগীর এই নীতি এবং কৌশলে সঙ্ঘ আস্থা রাখছে। এই পদ্ধতিতেই কাজ চালিয়ে যাওয়ার সবুজ সঙ্কেত সঙ্ঘের থেকে যোগী পেয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
লখনউ: ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে শাসক থেকে বিরোধীরা। দেশের সবথেকে বড় রাজ্য উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনউয়ে ভোটের উত্তাপের আঁচ এখন থেকেই পাওয়া যাচ্ছে। সেই আঁচ কয়েক গুণ বাড়িয়েছে ১৯ এবং ২০ সেপ্টেম্বর হওয়া একটি বৈঠক। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের শীর্ষ পদস্থ কর্তারা, সে রাজ্যের প্রথম সারির বিজেপি নেতারা এবং উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সরকারের পদাধিকারীরা। সঙ্ঘের তরফে দত্তাত্রেয় হোসাবলে এবং অরুণ কুমার উপস্থিত ছিলেন। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, উপমুখ্যমন্ত্রী ব্রিজেশ পাঠক এবং কেশব মৌর্য উত্তর প্রদেশের সরকারের তরফে উপস্থিত ছিলেন। উত্তর প্রদেশ বিজেপির প্রেসিডেন্ট ভূপেন্দ্র চৌধরী এবং ধর্মপাল সিংও সেই বৈঠকে ছিলেন।
উত্তর প্রদেশে থেকে লোকসভায় রয়েছে ৮০টি আসন। ২০১৯ সালে এর মধ্যে ৬৪টি আসন জেতে বিজেপি। কিন্তু ২০২৪ সালে ৮০টি আসনেই জিততে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে পদ্মশিবির। সেই লক্ষ্যেই এই বৈঠকে একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রে মারফত জানা যাচ্ছে। উত্তর প্রদেশে যেভাবে যোগী আদিত্যনাথ সরকার পরিচালনা করছেন, তাতে সঙ্ঘ বেশ সন্তুষ্ট বলে জানা গিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি থেকে হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন ইস্যুতে যোগী যে ভাবে সরব তাতে খুশি মোহন ভাগবত, দত্তাত্রেয় হোসাবলেরা। যোগীর এই নীতি এবং কৌশলে সঙ্ঘ আস্থা রাখছে। এই পদ্ধতিতেই কাজ চালিয়ে যাওয়ার সবুজ সঙ্কেত সঙ্ঘের থেকে যোগী পেয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, দেশের বৃহত্তম রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি গত কয়েক বছরে যোগী আদিত্যনাথ যে ভাবে সামলেছেন, বিভিন্ন পরিস্থিতির মোকাবিলা কড়া হাতে করেছেন। মাফিয়া এবং দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে আদিত্যনাথের মনোভাবে খুশি সঙ্ঘ। যোগীর এই পদক্ষেপে জনমানসে যে বার্তা পৌঁছেছে তা নিয়ে এই বৈঠকে উচ্ছ্বসিত দেখিয়েছে সঙ্ঘ কর্তাদের। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যোগীর বেশ কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্তের পাশেও রয়েছে সঙ্ঘ।
আইনশৃঙ্খলার পাশাপাশি হিন্দুত্ব বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে যোগী আদিত্যনাথের অবস্থান এবং জনসমক্ষে সেই অবস্থান দ্ব্যর্থহীন ভাষায় যে ভাবে যোগী ব্যক্ত করেন, তাতে বেশ আশ্বস্ত সঙ্ঘ পরিবারের নেতারা। তা নিয়ে এই বৈঠকে যোগীর প্রশংসাও সঙ্ঘনেতারা করেছেন বলে শোনা যাচ্ছে। হিন্দুত্বকে সামনে রেখে যোগী আদিত্যনাথকে এগিয়ে যাওয়ার বার্তাও এই বৈঠক থেকে দিয়েছেন সঙ্ঘ নেতারা। জনসভা হোক বা মিছিল বা জনগণ জড়িয়ে এমন কোনও মঞ্চে হিন্দুত্বের ব্যাটন যোগীর হাতে এক প্রকার তুলেই দিল সঙ্ঘ। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সাল থেকেই যোগীকে হিন্দুত্বের পোস্টার বয় হিসাবে প্রচার করেছে বিজেপি এবং সঙ্ঘ। আগামী লোকসভা ভোটে উত্তর প্রদেশে যোগীর সেই দায়িত্ব আরও বাড়ল বলে মনে করা হচ্ছে।
ধর্মান্তকরণ, লাভ জিহাদের মতো একাধিক ইস্যু নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই সরব আরএসএস। আদিত্যনাথের সরকার গত কয়েক বছরে এই বিষয়গুলির মোকাবিলা করেছে, তা রুখতে আইন এনেছে এবং পদক্ষেপ করেছে। তা নিশ্চিত ভাবেই খুশি করেছে সঙ্ঘকে। এ বছর জুন মাসে গাজিয়াবাদে অনলাইন গেমিংয়ের আড়ালে ধর্মান্তকরণের যে চক্র ফাঁস হয়েছে তাঁর জন্য যোগী প্রশাসনের প্রশংসা করেছে আরএসএস। এই সব ইস্যু নিয়ে লোকসভা ভোটেও বিজেপি সরব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ রকম বিষয়ে যোগীর সঙ্গে বিজেপি ও সঙ্ঘের যে বোঝাপড়ে তা আগামী দিনে এই সংক্রান্ত প্রচারকে ঝাঁঝালো করবে বলে মনে করছে সঙ্ঘকর্তারা। সেই দায়িত্ব যোগীর কাঁধে চাপিয়ে বেশ নিশ্চিত আরএসএস নেতারা।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours