অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, এই প্রকল্পে আংশিক রেল করিডর হবে এবং বাকি অংশটা জলপথে বন্দর করিডর হবে। সদস্য় দেশগুলি তাদের প্রয়োজন মতো রেলপথ ও বন্দর তৈরি করা হবে। এই প্রকল্প এতটাই আর্থিকভাবে লাভবান যে একাধিক মাল্টিল্যাটেরাল প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
Rail-Port Corridor: চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড থেকে কতটা আলাদা ভারত-মধ্য প্রাচ্য-ইউরোপের করিডর, বোঝালেন রেলমন্ত্রী
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।
নয়া দিল্লি: জি-২০ সম্মেলনের (G-20 Summit) অন্যতম সাফল্য হল ভারত-মধ্য প্রাচ্য-ইউরোপ করিডরের (India-Middle East-Europe Corridor) চুক্তি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, সৌদির ক্রাউন প্রিন্স, প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ বিন সলমন আল সাউদ, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন ও প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই মউ (MoU) স্বাক্ষর হয়। রেল ও জলপথের এই করিডর চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রজেক্ট(Belt & Road Peoject)-কে বড়সড় ধাক্কা দিতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্য়েই ইতালি চিনের এই প্রকল্প থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছে। কিন্তু চিনের এই প্রকল্পেরই কি হুবহু নকল হতে চলেছে ভারত-মধ্য় প্রাচ্য-ইউরোপের করিডর? কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব (Ashwini Vaishnaw) জানালেন, দুই প্রকল্প মোটেও এক নয়। যথেষ্ট তফাত রয়েছে দুটি প্রকল্পের মধ্যে। যেখানে চিন ঋণের ফাঁদে ফেলে বেশ কিছু দেশকে প্রকল্পে সামিল হতে বাধ্য করেছে, সেখানেই জি-২০র এই প্রকল্প আর্থিক লাভ ঘরে তুলতে সাহায্য করবে বলেই জানান রেলমন্ত্রী।
একটি সংবাদমাধ্য়মকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, “এই করিডরের অন্য়তম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল প্রধানমন্ত্রীর সকলকে নিয়ে একসঙ্গে চলার দৃষ্টিভঙ্গি। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সবকা সাথ, সবকা বিকাশ এই করিডরের চিন্তাভাবনার ভিতরে মিশে রয়েছে।”
প্রাচীনকালে সিল্ক রুট দিয়েই যুক্ত ছিল বিশ্বের একটি বড় অংশ। সেই রাস্তার অনুপ্রেরণাতেই চিন বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্প শুরু করেছিল। একাধিক দেশ তাতে সামিলও হয়। মাঝে কেটে গিয়েছে ১০ বছর। এখনও সেই প্রকল্পে খুব একটা গতি নেই। ইতালিই একমাত্র জি-৭ দেশ ছিল, যা চিনের এই প্রকল্পে সামিল হয়েছিল, তাও প্রকল্প থেকে বেরিয়ে যেতে চাইছে। আর এখানেই চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের বিকল্প হিসাবে উঠে আসছে ভারত-মধ্য় প্রাচ্য-ইউরোপের করিডর।
এই বিষয়ে অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, এই প্রকল্পে আংশিক রেল করিডর হবে এবং বাকি অংশটা জলপথে বন্দর করিডর হবে। সদস্য় দেশগুলি তাদের প্রয়োজন মতো রেলপথ ও বন্দর তৈরি করা হবে। এই প্রকল্প এতটাই আর্থিকভাবে লাভবান যে একাধিক মাল্টিল্যাটেরাল প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। রেলমন্ত্রী জানান, এই প্রকল্পে পরিবহনের মাধ্যমে এতটাই আর্থিক লাভ হবে যে অংশীদার দেশগুলি নিজেরাই খরচের টাকা মিটিয়ে দিতে পারবে, কোনও দেশের কাছ থেকে ঋণ নিতে হবে না।
ভারত-মধ্য প্রাচ্য়-ইউরোপের করিডরে ভারত থেকে জলপথে মধ্য প্রাচ্য জুড়বে। এরপরে রেলপথে মধ্য় প্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, সৌদি আরব, জর্ডান ও ইজরায়েল হয়ে তা ইউরোপে পৌঁছবে।
এই করিডরের সবথেকে বড় সুবিধা হল, সুয়েজ খাল শুকিয়ে যাওয়ায়, বর্তমানে যে জাহাজের ভিড় লেগে থাকে সর্বদা, তা এড়ানো সম্ভব হবে। এরফলে ভারত থেকে ইউরোপে আমদানি-রফতানির খরচ ৪০ শতাংশ অবধি কমে যাবে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours