বর্তমানে যেমন অন্য সরকারি দফতরের কর্মীরা বেতন পান, এবার সেভাবেই বেতন পাবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা। আগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির এই বেতন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অ্যাকাউন্টে যেত। সেটাই এবার বদলে সরাসরি ট্রেজারি থেকে প্রত্যেক কর্মীর অ্যাকাউন্টে ঢুকবে টাকা। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর দাবি, আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে হস্তক্ষেপ করতে চাইছে সরকার।

University Salary Debate: ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বশাসনে হাত’, বেতন বিতর্কে মমতা-পার্থ-ব্রাত্যদের একযোগে তোপ সুজন-শমীকদের
সুজন-শমীকদের তোপের মুখে সরকার

কলকাতা: বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কর্মী, অধ্যাপক, উপাচার্য, অশিক্ষক কর্মীদের বেতন যাবে ট্রেজারি থেকে। নতুন ভাবনা রাজ্য সরকারের। এদিনই নবান্নে ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসারদের সঙ্গে চলা বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর। যা নিয়েই জোর শোরগোল শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। কড়া প্রতিক্রিয়া সিপিআইএম-বিজেপির। রাজ্যের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “ঈশ্বর করুন আর যেন সাধারণ মানুষকে কোনও বড় মাপের অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারি না দেখতে হয়। শিক্ষামন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তাঁকে তাঁর দলের মধ্যে প্রমাণ করতে হবে তিনি আচার্য বিরোধী। ইউজিসি সম্পর্কে রাজ্যের মনোভাব কী, নেত্রীর মনোভাব কী সেটা তিনি জানেন। তাঁর এই পদক্ষেপগুলি তারই প্রমাণ।” 


এরপরই শাসকদলকে একহাত নিয়ে বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস কোনও স্বাধিকার, কোনও স্বশাসনে বিশ্বাস করে না। সে জন্য কলেজ-ইউনিভার্সিটি রেগুলেটারি বিল এনে কার্যত তারা গোটা ক্ষমতাকে কেন্দ্রীভূত করে ফেলেছিল। যেখানে শিক্ষার স্বশাসন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। সেটার থেকে এখানে আর একটা স্টেপ এগিয়ে গেলেন।” মুখ্যমন্ত্রীর বেতন বন্ধের হুঁশিয়ারির প্রসঙ্গ উঠতে তিনি বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস মানুষকে ভয় দেখিয়ে একটা পুলিশ স্টেট তৈরি করে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গকে। সেই পথেই রাজ্য চলছে। মুখ্যমন্ত্রী যখন কোনও হুঁশিয়ারি দেন সেটার ছাপ মন্ত্রিসভার মন্ত্রীদের মধ্যে দেখা যায়। এটা আমরা দেখেছি।” 

সোজা কথায় বর্তমানে যেমন অন্য সরকারি দফতরের কর্মীরা বেতন পান, এবার সেভাবেই বেতন পাবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা। আগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির এই বেতন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অ্যাকাউন্টে যেত। সেটাই এবার বদলে সরাসরি ট্রেজারি থেকে তাদের প্রত্যেক কর্মীর অ্যাকাউন্টে ঢুকবে টাকা। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর দাবি, আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে হস্তক্ষেপ করতে চাইছে সরকার। তিনি বলেন, “এটা মনে রাখতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সরকারের এক্সটেন্ডেড দফতর নয়। সরকারি দফতর নয়। তার আলাদা স্বাধিকার আছে, গুরুত্ব আছে। সমাজে তার প্রভাব আছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে তার মতো করে চলতে দেওয়া উচিত। এই কথা সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সবাই বলেছিলেন।”


সুজনের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। আগের শিক্ষামন্ত্রী থেকে বর্তমান, সকলে সেদিকেই হাত বাড়াচ্ছেন। শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি বলেন, “আগের শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন আমরা টাকা দিই আমাদের কথায় চলতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে সর্বতভাবে যখন কন্ট্রোল করতে পারেননি তখন মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করেছেন। এখন সরকারের এক্টটেন্ডেড ডিপার্টমেন্ট হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে দেখা হচ্ছে। সে কারণেই এভাবে বেতন দেওয়ার চেষ্টা।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours