সুরম্যর মৃত্যু নিয়ে রহস্য থেকেই গিয়েছে। কলেজ থেকে বলা হয়েছে, হস্টেলের ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছিলেন সুরম্য। যাদবপুরের ছাত্রের পরিবারের মতোই সাঁতরা পরিবারও এ কথা মানতে চান না। অভিযোগও দায়ের করেছেন।

JU: 'আমার ছেলেটাও হস্টেল থেকে পড়েই শেষ', যাদবপুরকাণ্ডে বুক ভাঙছে আরও এক মায়েরছেলের ছবি হাতে মা।

হুগলি: বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চ্যানেলে চ্য়ানেলে ব্রেকিং, ‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যু’। সেই ছাত্রের ছবি দেখে বুকের ভিতরটা হু হু করে উঠেছিল হুগলির শেওড়াফুলির জগবন্ধু মুখার্জি লেনের বাসিন্দা সুশান্ত সাঁতরার স্ত্রীর। গত কয়েকদিনে মনীষা সাঁতরা যতবার যাদবপুরের ছাত্রের খবর দেখেছেন বা পড়েছেন চোখের সামনে ভেসে এসেছে কয়েকদিন আগে তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা। ঠিক এভাবেই যেদিন ছেলেকে হারিয়েছিলেন তিনি।


সুরম্য সাঁতরা। বছর কুড়ি বয়স। ২০২০ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। মাঝে এল কোভিড। এরপর ২০২২ সালে বিহারের মুজফফরপুর রাজেন্দ্রপ্রসাদ এগ্রিকালচার ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন। ভিন রাজ্য। দূরত্বের কারণে হস্টেলে থাকা ছাড়া আর কোনও উপায়ও ছিল না। ২০২৩ সালের ২৮ জুলাই সুরম্যর হস্টেল থেকে একটা ফোন আসে। বলা হয়, রাত ৩টে নাগাদ তিনতলার ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছেন সুরম্য। প্রশান্ত মেমোরিয়াল চ্যারিটেবল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও লাভ হয়নি। মৃত্যু হয় তাঁর।

সেদিনই পূর্বা এক্সপ্রেসে বিকালের মধ্যে সুরম্য়র বাবা ও কাকা বিহারে পৌঁছন। তবে মুজাফ্ফরপুর অবধি যেতে হয়নি তাঁদের। মাঝরাস্তায় ছেলের ‘হাত বদল’ হয়। পটনা কলকাতা রাজ্য সড়কের বক্তিয়ারপুর এলাকা থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে ছাত্রের নিথর দেহ বাড়ির লোকের হাতে তুলে দেওয়া হয়।


সুরম্যর মৃত্যু নিয়ে রহস্য থেকেই গিয়েছে। কলেজ থেকে বলা হয়েছে, হস্টেলের ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছিলেন সুরম্য। যাদবপুরের ছাত্রের পরিবারের মতোই সাঁতরা পরিবারও এ কথা মানতে চান না। অভিযোগও দায়ের করেছেন। তবে খাতার পাতাতেই সেই অভিযোগ থেকে গিয়েছে। তদন্ত এক পাও এগোয়নি বলেই পরিবারের দাবি।

সেই ঘটনার এক মাসও ঘোরেনি, এমন খবর কানে আসতেই শরীর থর থর করে কাঁপছে মনীষাদেবীর। সুরম্যর বাবাও এ ঘর ও ঘর করেন। মনীষাদেবী বলেন, “আর কোনও মায়ের কোল যাতে খালি না হয় সেটাই চাইব। যারা এগুলো করল তাদের সরকার শাস্তি দিক। মুখ্যমন্ত্রী দেখুন এটা। আমাদের তো যা যাওয়ার গিয়েছেই। বিহারে জানিয়েছিলাম পুলিশকে। কোনও পদক্ষেপই করেনি।”

সুরম্যর বাবা কলকাতা পুলিশের ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। বলেন, কত তাড়াতাড়ি অভিযুক্তদের ধরে ফেলল। সুরম্যর বাবা প্রশান্ত সাঁতরা চান, “আমার ছেলের বিষয়টাও মুখ্যমন্ত্রী দেখুন। বিহার সরকারের সঙ্গে কথা বলে যদি প্রকৃত সত্যিটা সামনে আনা যায়।” যদিও বিহার পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিক বিবেকানন্দ ঝাঁয়ের বক্তব্য, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এই মুহূর্তে কলেজে পরীক্ষা চলছে। তাই কলেজের শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা যাচ্ছে না।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours