কখনও ‘চড়াম চড়াম’, তো কখনও ‘গুড় বাতাসা’। কখনও আবার ‘ভয়ঙ্কর খেলা’র বার্তা। ভোটের আগে তাঁর দাওয়াইয়ের অপেক্ষায় থাকতেন বীরভূমের দলীয় কর্মী-সমর্থকরা। কিন্তু এ বার আর ভোট পর্বে সে ধরনের কোনও স্লোগানই এল না।
Anubrata Mondal: কেষ্ট তো তিহাড়ে, পঞ্চায়েত ভোটের আগেরদিন কী চলছে নিচুপট্টির বাড়িতে?অনুব্রত মণ্ডল।
বোলপুর: ফি বছর ভোট এলে গমগম করত এলাকা। কড়া নিরাপত্তায় ঘেরা থাকত বীরভূমের বোলপুর নিচুপট্টির মণ্ডল বাড়ি। কত লোকের আনাগোনা দিনভর। বিরোধীরা বলত, এ বাড়ি থেকেই গোটা জেলার ভোট নিয়ন্ত্রণ করতেন অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। এ বাড়ি যেন ‘কন্ট্রোল রুম’। অথচ এবার সে ছবিতে আমুল বদল। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। অথচ পঞ্চায়েত ভোটের আগের দিনও কোনও ব্য়স্ততা নেই সে বাড়িতে। নেই কোনও দলীয় কর্মীর আনাগোনা, রাস্তাঘাটও ফাঁকা। বাড়ির সামনে বিরাট তৃণমূলের পতাকা উড্ডীন, তবে রং ফিকে হয়েছে অনেকটাই।
বোলপুর নিচুপট্টির যে বাড়ি থেকে গোটা জেলার উপর নজর রাখা হত, সেই বাড়িটা আজ নিষ্প্রাণ। কালীমন্দিরেও নেই কারও আনাগোনা। সন্ধ্যার পরে সম্ভবত জোরাল কোনও আলোও জ্বলবে না। জেলায় ভোটের উত্তাপ থাকলেও, নিচুপট্টি এলাকায় অপার নিস্তব্ধতা।।
যে কোন ভোট মানেই রাজ্যের আনাচে-কানাচের পাশাপাশি বিশেষভাবে যেদিকে সকলের নজর থাকে, তা বীরভূম। আর সেই জেলার নামের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত অনুব্রত মণ্ডলের নাম। গোটা জেলার তিনি বেতাজ বাদশা। বিরোধীরা একটা সময় বলত, তাঁর কথাতেই নাকি বীরভূমে পাতা নড়ে। কিন্তু এ বারের চিত্রটা একেবারে আলাদা। গরু পাচার মামলায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে গ্রেফতার হন অনুব্রত মণ্ডল, বর্তমানে তিনি তিহাড় জেলে বন্দি।
কখনও ‘চড়াম চড়াম’, তো কখনও ‘গুড় বাতাসা’। কখনও আবার ‘ভয়ঙ্কর খেলা’র বার্তা। ভোটের আগে তাঁর দাওয়াইয়ের অপেক্ষায় থাকতেন বীরভূমের দলীয় কর্মী-সমর্থকরা। কিন্তু এ বার আর ভোট পর্বে সে ধরনের কোনও স্লোগানই এল না। অনুব্রত ঘনিষ্ঠদের দাবি, জেলার দায়িত্বে থেকে যেভাবে সংগঠনকে গড়ে তুলেছিলেন কেষ্ট মণ্ডল, সেই মডেলেই এবারও ভোট হবে বীরভূমে।
অনুব্রতর অনুপস্থিতিতে এতদিনে বিরোধীরা কি কিছুটা হলেও রাজনৈতিক ভাবে নিজেদের জায়গা তৈরি করতে পেরেছে? নাকি শাসক তৃণমূলই নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখবে? সব কিছুর জবাব মিলবে ভোট বাক্সে। অবাধ শান্তিপূর্ণ ভোট পর্ব সম্পন্ন হয় কি না, সেদিকও নজর সকলের।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours