হাইকোর্টের এক বিচারপতির আচরণে অসন্তুষ্ট প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি বলেছেন, "প্রোটোকল সুবিধাগুলি এমনভাবে ব্যবহার করা উচিত নয়, যাতে অন্যদের অসুবিধা হয় বা বিচার বিভাগকে প্রকাশ্যে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়।"

'প্রোটোকল, বিশেষাধিকার নয়', হাইকোর্টের বিচারপতির আচরণে অসন্তুষ্ট প্রধান বিচারপতিপ্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়


নয়া দিল্লি: রেল যাত্রার সময় খাবার পাননি। সেই বিষয়ে টিটিই বা রেল পুলিশের কাছ থেকে কোনও জবাবও পাননি। তাই, আদালতের রেজিস্ট্রারকে দিয়ে চিঠি লিখিয়ে রেলের আঞ্চলিক ম্যানেজারের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন। রেজিস্ট্রারের চিঠিতে অভিযোগ করেছিলেন, এই ঘটনায় ওই বিচারকের বড় রকমের অসুবিধা হয়েছে। এর জন্য তিনি অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হয়েছেন। এই ঘটনার সমালোচনা করে দেশের প্রতিটি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিদের চিঠি লিখলেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। প্রশ্নবিদ্ধ বিচারকের উদাহরণ দিয়ে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় লিখেছেন, “এই ঘটনা বিচার বিভাগের ভিতরে এবং বাইরে যুক্তিসঙ্গত অস্থিরতার জন্ম দিয়েছে।” বিচার বিভাগের আত্মসমালোচনার উপরও জোর দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।


প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় সাফ জানিয়েছেন, ট্রেনে অসুবিধার সম্মুখীন হলেও, হাইকোর্টের বিচারপতি রেলকর্মীদের ব্যাখ্যা চাইতে পারেন না। কারণ, সেই এক্তিয়ার নেই হাইকোর্টের। তিনি আরও বলেছেন, বিচারপতিরা প্রোটোকল হিসেবে যেসব ‘সুবিধা’ পেয়ে থাকেন, সেগুলিকে তাঁরা বিশেষাধিকার বলে জাহির করতে পারেন না। প্রোটোকলগত সুবিধাগুলিকে সমাজে ক্ষমতা বা কর্তৃত্বের প্রকাশ হিসাবে ব্যবহার করা অনুচিত। এই ধরনের ঘটনায় বিচার বিভাগের বিশ্বাসযোগ্যতা, বৈধতা এবং বিচারকদের প্রতি আস্থা নষ্ট হয় বলে লিখেছেন তিনি। প্রধান বিচারপতিদের এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, “প্রোটোকল সুবিধাগুলি এমনভাবে ব্যবহার করা উচিত নয়, যাতে অন্যদের অসুবিধা হয় বা বিচার বিভাগকে প্রকাশ্যে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়।”


দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই আদালতের ভিতরে ও বাইরে বারংবার ব্যতিক্রমী ভূমিকায় দেখা গিয়েছে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়কে। কখনও আচমকা তাঁর পা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টের ক্যাফেটেরিয়ায়। তাঁকে দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছেন ক্যাফেটেরিয়ার কর্মী থেকে উপস্থিত আইনজীবীরা। বারবার তাঁর বক্তৃতায় এসেছে বিচার বিভাগে ব্যাক অফিসের কর্মীদের ভূমিকার গুরুত্ব। সাফাই কর্মী-সহ সুপ্রিম কোর্টের বেশ কিছু পদের নাম বদলে দিয়েছেন তিনি। অবসর কাটাতে লন্ডনে গিয়েও, তিনি সদা সতর্ক নজর রেখেছেন বিচার বিভাগের উপরে। এক বিবাহ বিচ্ছেদের মামলায়, মহিলার কোষ্ঠী বিচারের নির্দেশ দিয়েছিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে শীর্ষ আদালতের অবসরকালীন বেঞ্চকে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। এবার বিচারপতির আচরণ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করলেন তিনি।


Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours