বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক মহিলাকে ধর্ষণের মামলায়, লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতিষ বিভাগকে ওই মহিলার কোষ্ঠী বিচার করার আদেশ দিয়েছিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। শনিবার, উচ্চ আদালতের সেই রায় স্থগিত করে দিল সুপ্রিম কোর্ট।

Allahabad High Court: ধর্ষিতার কোষ্ঠী বিচার! শীর্ষ আদালতে স্থগিত এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশকোষ্ঠী বিচারের নির্দেশ হাইকোর্টের


নয়া দিল্লি: বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক মহিলাকে ধর্ষণের মামলায়, লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতিষ বিভাগকে ওই মহিলার কোষ্ঠী বিচার করার নির্দেশ দিয়েছিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। অভিযুক্ত পুরুষ দাবি করেছিল, ওই মহিলার কোষ্ঠীতে সমস্যা রয়েছে। তিনি ‘মাঙ্গলিক’। এই কারণেই তাঁকে সে বিয়ে করতে পারেনি বলে জানিয়েছিল ওই ব্যক্তি। এরপরই গত ২৬ মে ওই আদেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। হাইকোর্টের সেই আদেশকে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে চ্যালেঞ্জ করেছিল। শনিবার (৩ জুন), এলাহাবাদ হাইকোর্টের সেই নির্দেশের স্থগিত করলেন শীর্ষ আদালতের বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া ও বিচারপতি পঙ্কজ মিথালের বেঞ্চ। বেঞ্চ উচ্চ আদালতকে তৃতীয় কোনও পক্ষের উপর নির্ভর না করে, তার নিজের যোগ্যতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে আদেশ দিয়েছে। রায় দানের সময় বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া বলেন, “আমরা ২০২৩ সালের ২৬ মে তারিখের নির্দেশের কার্যকারিতা এবং প্রভাব স্থগিত রাখলাম। ২৬ জুন আদালতকে তার নিজের যোগ্যতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”


শীর্ষ আদালত অবশ্য জানিয়েছে, জ্যোতিষশাস্ত্র এবং জ্যোতির্বিদ্যার পক্ষের অনুভূতিকে সম্মান করে। কিন্তু, এই মামলার ক্ষেত্রে জ্যোতিষশাস্ত্র এবং জ্যোতির্বিদ্যার কোনও ভূমিকা নেই। এটা ‘সম্পূর্ণরূপে বিষয়বস্তুর বাইরে’। বরং এই মামলার ক্ষেত্রে গোপনীয়তার অধিকারের মতো আরও বেশ কিছু বিষয় জড়িত। এদিন, আদালতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে উপস্থিত হয়েছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি এলাহাবাদ হাইকোর্টের আদেশটি “বিরক্তকর” বলে উল্লেখ করে শীর্ষ আদালতে আদেশটি স্থগিত করার আবেদন করেন। তিনি বলেন, “জ্যোতিষশাস্ত্র একটি বিজ্ঞান। কোনও ব্যক্তি ‘মাঙ্গলিক’ কি মাঙ্গলিক নয়, তার উপর ভিত্তি করে কারোর বিয়ে করা উচিত কি না, সেই প্রশ্ন কেউ করছে না। বিচার বিভাগের কাছে একমাত্র প্রশ্ন হল, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের ক্ষেত্রে এটি বিবেচনা করা যেতে পারে কি না?

অভিযোগকারী মহিলার পক্ষের আইনজীবী শীর্ষ আদালতকে জানান, উভয় পক্ষের সম্মতিতেই ওই আদেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। সাক্ষ্য আইনের ৪৫ নম্বর ধারার অধীনে বিশেষজ্ঞদের প্রমাণের জন্য নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও এখন জ্যোতিষশাস্ত্রে ডিগ্রি দেওয়া হচ্ছে। এটি একটি বিজ্ঞান।


আদালতের সামনে অবশ্য তাঁর যুক্তি ধোপে টেকেনি। আদালত বারবারই মামলার মূল বিষয়বস্তুর সঙ্গে জ্যোতিষশাস্ত্রের কী সম্পর্ক, তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া বলেন, “কিন্তু এটি (জ্যোতিষশাস্ত্র) সম্পূর্ণ বিষয়বস্তুর বাইরে। বিষয়বস্তুর সঙ্গে এর কী সম্পর্ক? এই মামলার সঙ্গে আরও অনেক বিষয় জড়িত। এই ক্ষেত্রে গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। আমরা বলতে চাই না, আরও অনেক দিক আছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা কোনও কিছুর বিরুদ্ধে নই, কোনও কিছুকে চ্যালেঞ্জ করছি না। এই মামলার ক্ষেত্রে আমরা শুধুমাত্র বিষয়বস্তুর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছি।” বর্তমানে বিদেশে রয়েছেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। জানা গিয়েছে, বিদেশ থেকে তিনি এই মামলা সতঃপ্রণোদিতভাবে গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours