উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হল এক ভারতীয় ছাত্রীর। মঙ্গলবার সকালে লন্ডনের ওয়েম্বলিতে তাঁর বাসভবনেই এক ব্রাজিলীয় যুবক তাঁকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ।

London: থাকতেন একই ফ্ল্যাটে, লন্ডনে হায়দরাবাদের ছাত্রীকে কুপিয়ে খুন ব্রাজিলীয় যুবকেরঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় কনথাম তেজস্বিনীর
লন্ডন / হায়দরাবাদ: উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হল এক ভারতীয় ছাত্রীর। মঙ্গলবার সকালে লন্ডনের ওয়েম্বলিতে তাঁর বাসভবনেই এক ব্রাজিলীয় যুবক তাঁকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ২৭ বছরের কনথাম তেজস্বিনীর। আদতে, হায়দরাবাদের চম্পাপেটের বাসিন্দা তিনি। ২০২২ সালেই মাস্টার্স ডিগ্রি করার জন্য লন্ডনে যান তিনি। ওয়েম্বলির নিল্ড ক্রিসেন্ট এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে ভাগাভাগি করে থাকতেন তেজস্বিনী। অভিযুক্ত ব্রাজিলীয় যুবকও তাঁদের ফ্ল্যাটমেট ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। বুধবার (১৪ জুন) লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলেই তেজস্বিনীর মৃত্যু হয়। অখিলা নামে তাঁর এক বান্ধবীও ছুরিকাঘাতে আহত হন। ২৮ বছর বয়সী ওই যুবতীকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবশ্য তাঁর আঘাত প্রাণঘাতী নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।


মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে। বুধবার, লন্ডন পুলিশের পক্ষ থেকে এই মর্মান্তিক খবর জানানো হয় ভারতে থাকা তেজস্বিনীর আত্মীয়দের। তাঁরা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ব্রাজিলীয় ব্যক্তি মাত্র এক সপ্তাহ আগেই তেজস্বিনী-অখিলাদের ফ্ল্যাটে থাকতে এসেছিলেন। ঠিক কেন ওই ব্রাজিলীয় যুবক তেজস্বিনী ও অখিলাকে ছুরি নিয়ে আক্রমণ করলেন, তা এখনও জানা যায়নি। তেজস্বিনীর এক তুতোভাই জানিয়েছেন, ২০২২ সালের মার্চে লন্ডনে পাড়ি দিয়েছিলেন তেজস্বিনী। সম্প্রতি, তাঁর উচ্চশিক্ষা শেষ হয়েছিল। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই তাঁর দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু, তার আগেই এই পরিণতি হল তাঁর। এই অস্থায় তেজস্বিনীর আত্মীয়রা কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁর দেহ দ্রুত ভারতে ফেরানোর ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেছেন।

এদিকে, এই ঘটনার বিষয়ে লন্ডন পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা বলেছে, “এক ২৪ বছর বয়সী পুরুষ এবং এক ২৩ বছর বয়সী মহিলাকে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পুরুষটি এখনও আমাদের হেফাজতেই আছে। আর ওই মহিলাকে, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নিয়েই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পরে, ২৩ বছর বয়সী আরও এক সন্দেহভাজনকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।” সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, তার নাম কেভেন আন্তোনিও লরেঙ্কো ডি মোরাইস। সেও ব্রাজিলের নাগরিক। লন্ডন পুলিশের পক্ষ থেকে তার একটি ছবি প্রকাশ করে, তাকে খোঁজার জন্য জনসাধারণের সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। আপাতত তাকে উত্তর লন্ডনের এক থানায় রাখা হয়েছে।


মেট্রোপলিটন পুলিশের স্পেশালিস্ট ক্রাইম কমান্ড শাখার গোয়েন্দা প্রধান লিন্ডা ব্র্যাডলি বলেছেন, “দ্রুত এই ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার ক্ষেত্রে আমাদের সাহায্য করার জন্য আমি জনসাধারণকে ধন্যবাদ দিতে চাই। এই ঘটনা লন্ডনের ভারতীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বড় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। আমি জনসাধারণকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, গোয়েন্দাদের একটি দল এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করছে।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours